এলএনজি আমদানি করবে সামিট ও এক মার্কিন কোম্পানি
দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি আমদানির জন্য এই দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফাইল ছবি
এবার বেসরকারি খাতের মাধ্যমে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরু হতে যাচ্ছে। দুটি কোম্পানি এ কাজ পাচ্ছে। এর একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড, অন্যটি হলো স্থানীয় সামিট গ্রুপের সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড। ২০২৬ সাল থেকে ১৫ বছর এলএনজি সরবরাহ করবে তারা।
দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি আমদানির জন্য এই দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের সিদ্ধান্তটি সম্পর্কে জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আমিন উল আহসান।
তিনি বলেন, বছরে এক থেকে দেড় মিলিয়ন (১০-১৫ লাখ টন) এলএনজি সরবরাহ করবে এক্সিলারেট এনার্জি। একইভাবে বছরে দেড় মিলিয়ন (১৫ লাখ) টন এলএনজি সরবরাহ করবে সামিট। কোম্পানি দুটির সঙ্গে ২০২৬ সাল থেকে ১৫ বছরের জন্য এ চুক্তি করা হচ্ছে। এলএনজি আমদানি-সংক্রান্ত চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।
এলএনজি আমদানির পর তা রূপান্তরের মাধ্যমে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে এলএনজি রূপান্তরের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। এর একটি পরিচালনা করে এক্সিলারেট এনার্জি ও আরেকটি সামিট।
২০১৮ সালে দেশে এলএনজি আমদানি শুরু হয়। এখন পর্যন্ত যে এলএনজি আমদানি হয়েছে, তার পুরোটাই এনেছে সরকারি সংস্থা। বর্তমানে দুটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ওমান ও কাতার থেকে এলএনজি আমদানি করে সরকার।
দেশে এলএনজি আমদানি বাড়াতে এ দুটি দেশের সঙ্গে নতুন করে এ বছর আরও দুটি চুক্তি করা হয়েছে। নতুন চুক্তির আওতায় তারা এলএনজি সরবরাহ শুরু করবে ২০২৬ সালে। এর বাইরে খোলাবাজার থেকে নিয়মিত এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।
এ ছাড়া সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলা কর্তৃক ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন-২০২১’-এর আওতায় সুইজারল্যান্ডের টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ৪৭৮ কোটি ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৬ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ল ৫ বছর
মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় আশুলিয়া, মাধবদী ও চান্দিনা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আশুলিয়া ৩৩.৭৫ মেগাওয়াট, মাধবদী ২৪.৩০ মেগাওয়াট ও চান্দিনা ১৩.৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
এগুলোর বর্তমান মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থেকে আরও ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। এ তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা সামিট পাওয়ার লিমিটেডের। তাদের পাঁচ বছরে প্রতি ইউনিটে ৫ টাকা ৬৫ পয়সা হিসেবে ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা পরিশোধ করবে সরকারি সংস্থা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
ঘোড়াশাল তৃতীয় ইউনিট রি-পাওয়ার্ড কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস টারবাইনের ক্ষতিগ্রস্ত কম্প্রেসর মেরামতের সেবা নেওয়া হবে সুইজারল্যান্ডের একটি কোম্পানি থেকে।
সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে (ডিপিএম) এই সেবা ক্রয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ২০ বছর মেয়াদে কনসোর্টিয়াম অব এএসকে নিউ এনার্জি কোম্পানি, এজে পাওয়ার কোম্পানি ও এটিএন সলিউশনস প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ দশমিক ৬৯৮ টাকা হিসাবে আনুমানিক ১ হাজার ৭৩২ কোটি ৮০ লাখ টাকা পাবে।
কমেন্ট