আরও ৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি
ডিমের বাজার স্থিতিশীল করতে তৃতীয় দফায় এই পাঁচ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিল বাণিজ্য মন্ত্রণালায়।
দামের লাগাম টানতে আরও পাঁচ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজারে ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাজারদর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪ এর শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে পাঁচটি কোম্পানিকে এক কোটি করে মোট পাঁচ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হল।
এই পাঁচ কোম্পানি হল- ইউনিয়ন ভেনচার লিমিটেড, জে এফ জে প্যারাডাইস কানেকশন, লায়েক এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স লাকি এন্টারপ্রাইজ এবং মেসার্স পিংকি ট্রেডার্স।
ডিমের বাজার স্থিতিশীল করতে তৃতীয় দফায় এই পাঁচ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিল বাণিজ্য মন্ত্রণালায়।
দেশে প্রতিদিন চার কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। ডিমের বাজার যৌক্তিক কারণ ছাড়াই চড়তে থাকায় সরকার প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
কিন্তু তারপরও বাজারে ১৩ টাকার নিচে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর চার কোম্পানিকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে ২১ সেপ্টেম্বর আরও ৬ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিদিনের খুচরা বাজার দর অনুযায়ী, রোববার রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি হালি ফার্মের ডিম ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তবে কারওয়ান বাজার ও শেওড়াপাড়া বাজারে প্রতি হালি ডিম ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; ডজন বিক্রিহচ্ছে ১৬০ টাকায়।
কিছুদিন আগে প্রতি ডজন ডিম ১৭০ টাকায় উঠেছিল। প্রতি হালির দাম উঠেছিল ৬০ টাকায়; একটা ডিমের দাম পড়ত ১৫ টাকা।
দামের লাগাম টানতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ডিমসহ পেঁয়াজ ও আলুর দাম বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
শর্ত একই
ডিম আমদানির ক্ষেত্রে গত দুই বারের মত এবারও পাঁচটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে সরকার।
শর্তগুলো হল- এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু মুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে। আমদানি করার ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকারের মাধ্যমে নির্ধারিত কিংবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে।
সরকার নির্ধারিত শুল্ক বা কর পরিশোধ করতে হবে। নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না। সরকারের অন্যান্য বিধিবিধান মেনে চলতে হবে।
আগের অনুমতি দেওয়া ডিম চলতি সপ্তাহেই আসবে
এদিকে ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) পেয়েছেন। ইতোমধ্যে আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলাও শুরু হয়েছে। এর ফলে চলতি সপ্তাহেই ভারতীয় ডিম দেশের বাজারে প্রবেশ করবে বলে আশা আমদানিকারকদের।
মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। কিন্তু আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়ার দায়িত্ব আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের। তারা আইপি দিতে দেরি করে।
এর একটি বড় কারণ হলো অনেক দিন ধরে দেশে ডিম আমদানি হয়নি। তাই শুল্ক কাঠামো ঠিক করার পাশাপাশি অন্যান্য প্রস্তুতি নিতে দুই সপ্তাহের বেশি দেরি হয়। শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি আইপি দেওয়ায় ভারত থেকে এখন ডিম আমদানি হবে।
আমদানিকারকেরা জানান, আইপি জটিলতার কারণে তারা এলসি খুলতে পারছিলেন না। গত সপ্তাহের শেষ দিকে আইপি পেয়েছেন। ইতোমধ্যে এলসি খুলে তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন। তাতে চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন দেশে প্রবেশ করবে আমদানি করা ডিম।
তবে বাজারে কবে নাগাদ এই ডিম পাওয়া যাবে, তা নিশ্চিত নয়। কারণ, ডিম মোড়কজাত করতে কিছুটা সময় লাগবে। তাই আমদানিকারকেরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি ঠিক কবে দেশের বাজারে এই ডিম পাওয়া যাবে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান টাইগার ট্রেডিংয়ের মালিক সাইফুর রহমান বলেন, “আমাদের দিক থেকে সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ। এখন ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ডিম পাঠানোর ওপর নির্ভর করছে কখন তা দেশে আসবে। যেহেতু ডিম পরিবহনে অতিরিক্ত সতর্কতার প্রয়োজন হয়, তাই কয়েক দিন সময় লাগবে। তবে এই সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ডিম আসবে।”
কমেন্ট