যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমছে, বাড়ছে ভিয়েতনাম ভারত পাকিস্তানের
প্রবাসে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি
বর্তমানের বিশ্বে ১৭৬ টি দেশে ১ কোটি ৪৯ লাখের অধিক কর্মী কর্মরত রয়েছেন। ফাইল ছবি
সতের কোটির জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশের প্রায় দেড় কোটি মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছেন বল জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর অর্ধেকের বেশি বর্তমান সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পরে গত এক যুগে গেছেন বলে জানিয়েছেন সরকার প্রধান।
বুুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে এ তথ্য জানান তিনি। বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, বর্তমানের বিশ্বে ১৭৬ টি দেশে ১ কোটি ৪৯ লাখের অধিক কর্মী কর্মরত রয়েছেন।
সুশৃঙ্খল, নিরাপদ ও দায়িত্বশীল শ্রম অভিবাসন নিশ্চিতকরণে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পরে গত এক যুগে পেশাজীবী, দক্ষ, আধা দক্ষ ও স্বল্প দক্ষ ক্যাটাগরিতে ৮১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪২ জনের বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে।
নারী কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন ও ওরিয়েন্টেশন কার্যক্রম জেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রীকরণের ফলে এই সময়ে প্রায় ১০ লাখ নারী কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সিলেট-৩ আসনের সরকার দলীয় সংসদ হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বায়নের যুগে মেধা পাচার রোধ দুরূহ ব্যাপার।
স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশ থেকেই মেধা পাচার হয়ে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, “তারপরও সরকারের নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও নানাবিধ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশের মেধা পাচার নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রয়েছে।”
দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের ব্যাপক উন্নয়নের ফলে এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের কারণে মেধাবীরা দেশেই এখন কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে বলেও সংসদে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “সব সেক্টরে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ফলে বাংলাদেশের মেধা পাচার অনেকটাই রোধ হচ্ছে। স্ব স্ব ক্ষেত্রে মেধাবীদের মূল্যায়নে সরকারের পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে।”
সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, মেধাবীদের বৃত্তি/উপবৃত্তি প্রদান, সকল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার প্রাধান্য, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষালাভের সুযোগ সৃষ্টি, রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশিষ্ট ও মেধাবীদের বিভিন্ন পদক-পুরস্কার ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বর্তমান সরকার কর্তৃক মেধাবীদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের ‘দ্রুত বিকশিত ও আধুনিকায়নভিত্তিক উন্নয়নের গতি’ অব্যাহত রাখতে মেধা পাচার রোধ গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “মেধাবী, দক্ষ ও উদ্ভাবনী প্রতিভা সাধারণত কাঙ্ক্ষিত সুযোগ-সুবিধা, অবকাঠামোগত পরিবেশের অভাবে ভিনদেশে স্থানান্তরিত হয়। ফলে দেশের অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়।”
উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান, পরিবেশ, বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা, লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ ও নাগিরকত্বসহ স্থায়ী বসবাসের সুযোগ হল মেধা পাচারের অন্যতম কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকার এ বিষয়ে সচেতন এবং অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মেধা পাচার রোধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা সব মিলিয়ে ২ হাজার ১৬১ কোটি (২১.৬১ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের চেয়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি।
২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স। জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) তাদের পাঠানো অর্থের অবদান সব মিলিয়ে ১২ শতাংশের মত।
কমেন্ট