রেমিটেন্সে আমিরাতের ‘চমক’ দিয়ে অর্থবছর শুরু
পৃথিবীর উচ্চতম বহুতল। যেন বিস্ময়ের প্রতীক হয়ে মাথা তুলে আছে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম আকর্ষণ গগনচুম্বী এই বহুতলকে নিয়ে পর্যটকদের উৎসাহের শেষ নেই। ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিটেন্স প্রবাহে চমক দেখিয়ে চলেছে আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাজ্যের ফেডারেশন-সংযুক্ত আরব আমিরাত।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় আহরণের শীর্ষে উঠে এসেছে আরব-আমিরাত। দেশটি থেকে ৩৩ কোটি ডলার দেশে এসেছে। সৌদি আরব থেকে এসেছে ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ২০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার দেশভিত্তিক রেমিটেন্সের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, আমিরাত ছাড়া অন্য সব দেশ থেকেই রেমিটেন্সে প্রবাহে ধস নেমেছে। জুলাই মাসে আমিরাত থেকে রেমিটেন্স বেড়েছে ৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। গত বছরের জুলাই মাসে দেশটি থেকে ৩০ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার পাঠিয়েছিলেন ওই দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা।
অন্যদিকে বরাবরই যে দেশটি থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স বাংলাদেশে আসে, সেই সৌদি আরব থেকে জুলাইয়ে এই সূচক কমেছে ১২ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ। এই মাসে দেশটি থেকে ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ডলার এসেছে; নেমে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে। গত বছরের জুলাইয়ে এসেছিল ৩৪ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে; এসেছিল ৩৬ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার। কিন্তু এই জুলাইয়ে দেশটি থেকে রেমিটেন্স ৪৫ শতাংশ কমে ২০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান চতুর্থ স্থানে নেমে এসেছে। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে যুক্তাজ্য থেকে, ২২ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
অন্য দেশগুলোর মধ্যে জুলাইয়ে ওমান থেকে এসেছে ১২ কোটি ডলাার। মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ১১ কোটি ৬৬ লাখ। এছাড়া কুয়েত থেকে ১১ কোটি ৪৪ লাখ, ইতালি থেকে ১১ কোটি ৩৬ লাখ, কাতার থেকে ১১ কোটি ৩৬ লাখ এবং বাহরাইন থেকে ৪ কোটি ৮৫ লাখ ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে।
আরব আমিরাত থেকে রেমিটেন্সের উল্লম্ফনের আভাস গত অর্থবছরেই পাওয়া গিয়েছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটি থেকে ৩০৩ কোটি ৩৮ লাখ ৫০ হাজার (৩.০৩ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে ৪৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি।
প্রথমবারের মতো আমিরাত থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে আসে ২০২২-২৩ অর্থবছরে। গত অর্থবছরে তিনটি দেশ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছিল। বাকি দুটি দেশ ছিল- সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র।
গত অর্থবছরে দু-এক মাসে সৌদি আরবের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাত থেকে বেশি রেমিটেন্স আসলেও বরাবরের মতই ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে সৌদি আরব থেকে। তবে আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ কম ছিল। ৩৭৬ কোটি ৫২ লাখ (৩.৭৬ বিলিয়ন) ডলার এসেছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরে এসেছিল ৪৫৪ কোটি ১৯ লাখ (৪.৫৪ বিলিয়ন) ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে; ৩৫২ কোটি ২০ লাখ (৩.৫২ বিলিয়ন) ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ দশমিক ৪১ শতাংশ।
৪৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির উপর ভর করে তৃতীয় স্থানে ছিল আরব আমিরাত।
সব মিলিয়ে জুলাই মাসে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ (১.৯৭ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের মাস জুনে এসেছিল ২২০ কোটি ডলার। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় কমেছে ২২ কোটি ডলার বা ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
আবার গত অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ২১০ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের এই সময়ের তুলনায় কমেছে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গত অর্থবছরের কয়েক মাসেও শীর্ষে ছিল আমিরাত
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে কোনো কোনো মাসে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল আরব আমিরাত থেকে।
যেমন- গত মার্চ মাসে আরব আমিরাত থেকে ৩০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ওই মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল ৩০ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। আর সৌদি আরব থেকে এসেছিল ২৮ কোটি ৩ লাখ ডলার।
শুধু মার্চ মাস নয়, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি এবং গত বছরের মে মাসেও সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল আরব আমিরাত থেকে।
জানুয়ারিতে আমিরাত থেকে ৩৪ কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ওই মাসে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল যথাক্রমে ৩০ কোটি ৮৭ লাখ ও ২৯ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।
এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে আরব আমিরাত থেকে ৩৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল। ওই মাসে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল ৩২ কোটি ৯৯ লাখ ও ২৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, একক মাস হিসাবে আমিরাত থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স দেশে আসে গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে। এই মাসে দেশটি থেকে ৩৮ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার এসেছে।
আরব আমিরাত থেকে রেমিটেন্সের এই ইতিবাচক ধারা আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকর ও অর্থনীতিবিদরা।
স্বাধীনতার পর থেকে শীর্ষে সৌদি আরব
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে বরাবরই সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪.৭৮ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। তার মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছিল ৫৭২ কোটি ১৪ লাখ (৫.৭২ বিলিয়ন) ডলার।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, এসেছিল ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। আর সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে এসেছিল ২ দশমিক শূন্য দুই বিলিয়ন ডলার।
কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কমে যায়; আসে ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার; সব দেশ থেকেই কম আসে অর্থনীতির এই সূচক।
ওই অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে ৪ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার দেশে আসে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে ৩ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ২ দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে আসে ২ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী ১৯৭৬ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য যত শ্রমিক বিদেশে গেছেন, তার প্রায় ২০ শতাংশই গেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
২০১১ থেকে গত জুন পর্যন্ত দেশটিতে কাজের জন্য গেছেন ১০ লাখ শ্রমিক। ১৯৭৬ সাল থেকে জুন পর্যন্ত গেছেন প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিক।
বিএমইটির হিসাবে, বাংলাদেশের শীর্ষ শ্রমবাজার সৌদি আরব। ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া শ্রমশক্তির ৩৬ শতাংশই গেছে দেশটিতে। সংখ্যার দিক থেকে যা ৫৫ লাখের বেশি।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের বড় অংশই রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে; কাজ করছেন বিভিন্ন শ্রমঘন পেশায়।
কেন বাড়ছে আমিরাত থেকে রেমিটেন্স
আরব আমিরাত থেকে রেমিটেন্স বাড়ার কারণ জানতে চাইলে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “২০২২ সালে আমরা প্রায় ১১ লাখ লোককে কাজের জন্য বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছি। এই সংখ্যা অতীতের যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি। এর মধ্যে ২০ শতাংশের বেশি গেছেন আরব আমিরাতে। তারই ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশটি থেকে আসা রেমিটেন্স প্রবাহে।”
“গত বছর যারা গেছেন, তারা এখন পুরোদমে কাজ করছেন এবং বেতন-ভাতা পেয়ে দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে টাকা পাঠাচ্ছেন।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম এখন বেশ চড়া। তাই তেলনির্ভর অর্থনীতির দেশ আমিরাতের অর্থনীতিতেও চাঙাভাব বিরাজ করছে। সেখানকার শ্রমিক ভালো বেতন পাচ্ছেন। বেশি টাকা দেশে পাঠাতে পারছেন। সে কারণেই দেশটি থেকে বেশি রেমিটেন্স আসছে।”
অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “ব্যাংকের চেয়ে কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম অনেক বেশি হওয়ায় একটু বেশি টাকা পাওয়ার আসায় মাঝে প্রবাসীরা অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতেন।”
“সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অবৈধ হুন্ডির বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সেইসঙ্গে রেমিটেন্সে এখন ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। ডলারের সংকট থাকায় কোনো কোনো ব্যাংক এর চেয়েও বেশি দরে রেমিটেন্স সংগ্রহ করছে। এরসঙ্গে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রণোদনা যোগ হলে সব মিলিয়ে যা পাওয়া যায়, তা প্রায় কার্ব মার্কেটের সমান।”
“তাই প্রবাসীরা এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাচ্ছেন। সে কারণে গত অর্থবছরে শেষ পর্যন্ত রেমিটেন্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা গেছে। ঈদের পরের মাস জুলাইয়েও কিন্তু প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার এসেছে। প্রবৃদ্ধি কমলেও ঈদের পরের মাস হিসাবে এই অঙ্ক কিন্তু কম নয়।”
“আর আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স বাড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, গত বছর অন্যান্য দেশের চেয়ে তুলনামূলক আমিরাতে বেশি লোক কাজের জন্য গেছেন। তারা এখন দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন।”
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাতটি রাজ্যের নাম হলো আবুধাবি, আজমান, দুবাই, ফুজাইরা, রাস আল খাইমা, আশ শারজাহ এবং উম্ম আল কোয়াইন। প্রতিটি রাজ্যের শাসনব্যবস্থা বংশগত রাজতন্ত্র এবং প্রতিটি রাজ্যের শাসনকর্তার পদবি হলো ‘আমির’।
ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী আবুধাবির আমির সংযুক্ত আরব আমিরাতের খলিফা বা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একইভাবে দুবাইয়ের আমির হলেন প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধান। আবুধাবি শহর এই ফেডারেশনের রাজধানী। আবুধাবি ফেডারেশনের বৃহত্তম রাজ্য, যা মোট ভূমির তিন-চতুর্থাংশের বেশি অংশ নিয়ে গঠিত। দুবাই এই ফেডারেশনের বৃহত্তম ও জনবহুল শহর এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
আরব আমিরাত মূলত পাথুরে মরুভূমি, উপকূলীয় সমভূমি এবং পাহাড়ের মিশ্র পরিবেশে গঠিত দেশ। তবে দেশটির অধিকাংশ অঞ্চল মরুভূমি। তেলশিল্পের কারণে এখানকার অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী এবং জীবনযাত্রার মানের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি।
ফেডারেশনের অর্থনীতি প্রধানত আবুধাবির উৎপাদিত তেলের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে দুবাইয়ের অর্থনীতি ব্যবসা ও পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি আরব আমিরাত তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেশটি পর্যটনশিল্প এবং পণ্য উৎপাদনের ওপর জোর দিচ্ছে।
আরব আমিরাতে আছে অনেক দৃষ্টিনন্দন ও গগনচুম্বী ভবন। বর্তমান বিশ্বের সর্বোচ্চ অট্টালিকা ‘বুর্জ খলিফা’ দুবাই শহরেই। প্রশস্ত রাস্তা ও সুপার হাইওয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে খ্যাতি আছে আমিরাতের। পারস্য উপসাগরের কূলে ৫ দশমিক ৭২ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ।
পামগাছের মতো দেখতে এই দ্বীপপুঞ্জের নাম ‘পাম জুমেইরা’। এটা পৃথিবীর বৃহত্তম কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় পৃথিবীর চতুর্থ ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
কমেন্ট