রেমিটেন্সে ব্যাংকগুলোর প্রণোদনা বন্ধ
প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্সে সরকারি প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও যে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিত, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিদেশে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বাড়াতে গত বছরের অক্টোবর থেকে প্রবাসী আয়ের ডলার নিজেদের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশে আনতে সরকারি প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকগুলো নিজেদের উদ্যোগে বাড়তি আড়াই শতাংশ অর্থ দিয়ে আসছিল।
এখন ডলারের দাম নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু হওয়ায় নিজেদের দেওয়া প্রণোদনা বন্ধ করে দিয়েছে ব্যাংকগুলো। প্রবাসী আয়ে বর্তমানে প্রতি ডলারে ১২০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো বাড়তি প্রণোদনা অব্যাহত রাখলে ১২৩ টাকা পাওয়া যেত।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দেয়। এতে ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। আগে ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ছিল ১১০ টাকা। এখন বিদেশি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবাসী আয়ের ডলারের দাম ১১৭ থেকে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে স্থির করেছে। এর সঙ্গে সরকারের আড়াই শতাংশের পাশাপাশি ব্যাংকের সমপরিমাণ প্রণোদনা যুক্ত করলে ডলারের দাম হতো ১২৩ টাকা।
গত বছরের অক্টোবরে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের এক (এবিবি) সরকারের পাশাপাশি নিজেদের উদ্যোগে প্রবাসী আয়ের ওপর আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত সভায় হয়। এর পর থেকে সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের কিছু ব্যাংক বাড়তি প্রণোদনা দেওয়া শুরু করে। তবে এতেও প্রবাসী আয়ে খুব বেশি উন্নতি হয়নি।
বাফেদা চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, “নতুন পদ্ধতি চালু হওয়ার পর আমরা প্রণোদনা দেওয়া বন্ধ করেছি। কারণ, সরকারি প্রণোদনা পেলেই ডলারের দাম ১২০ টাকার কাছাকাছি হয়ে যায়। অন্য ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।”
গত এপ্রিল মাসে দেশে ২০৪ কোটি ৩০ লাখ (২.০৪ বিলিয়ন) ডলার প্রবাসী আয় দেশে আসে। এর আগে মার্চে এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ (১.৯৯ বিলিয়ন) ডলার। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে অঅসে ২১০ কোটি (২.১০ বিলিয়ন) ডলার।
ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ২১৬ কোটি ৬০ লাখ (২.১৭ বিলিয়ন) ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, “ডলারের দামের ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি চালু হওয়ায় ব্যাংকগুলোকে নিজেদের দেওয়া প্রণোদনা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সরকারি প্রণোদনা বহাল থাকবে।”
কমেন্ট