আরব আমিরাত থেকে রেমিটেন্সের উল্লম্ফনের কারণ কি পাচারের অর্থ

আরব আমিরাত থেকে রেমিটেন্সের উল্লম্ফনের কারণ কি পাচারের অর্থ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাই বিমানবন্দর যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম বিমানবন্দর লন্ডন হিথরোকে পেছনে ফেলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

১৯৭৪-৭৫ অর্থবছর থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আসা শুরু হয় বাংলাদেশে। ওই বছরে মাত্র ১ কোটি ১৮ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। গেলো অর্থবছরে সেই রেমিটেন্স দুই হাজার গুণের বেশি বেড়ে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে।

এই পঞ্চাশ বছরে প্রতিবারই সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স দেশে এসেছে। কিন্তু এবার ঘটেছে ব্যতিক্রম; ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্বছরে সৌদিকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।

শুধু তাই নয়, রেমিটেন্স আহরণের তালিকায় সৌদি আরব নেমে গেছে চতুর্থ স্থানে। দ্বিতীয় স্থান বহাল রেখেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র; তৃতীয় যুক্তরাজ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার রেমিটেন্স প্রবাহের দেশভিত্তিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, সদ্য শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সৌদি আরবের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ রেমিটেন্স এসেছে আমিরাত থেকে। এই অর্থবছরে সৌদি থেকে ২৭৪ কোটি ১৫ লাখ (২.৭৪ বিলিয়ন) ডলার এসেছে। আমিরাত থেকে এসেছে ৪৬০ কোটি (৪.৬ বিলিয়ন) ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ২৯৬ কোটি ১৬ লাখ (২.৯৬ বিলিয়ন ডলার।

গত অর্থবছরের প্রতি মাসেই সৌদির চেয়ে আমিরাত থেকে বেশি রেমিটেন্স দেশে এসেছে। সবচেয়ে বেশি এসেছে অর্থবছরের শেষ মাস জুনে। এই মাসে আমিরাতে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ৫৩ কোটি ১৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। সৌদি আরবের প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৩২ কোটি ৩ লাখ ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৩৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ২৭৯ কোটি ৩২ লাখ (২.৭৯ বিলিয়ন) ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে ৩৭৬ কোটি ৫৩ লাখ (৩.৭৬ বিলিয়ন) ডলার এসেছিল। আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ২৪ দশমিক ১০ শতাংশ কম, ৩০৩ কোটি ৩৮ লাখ (৩.০৩ বিলিয়ন)। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে যথাক্রমে ৩৫২ কোটি ২০ লাখ (৩.৫২ বিলিয়ন) ও ২০৮ কোটি ৪ লাখ ডলার।

তার আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) সৌদি থেকে ৪৫৪ কোটি ১৯ লাখ (৪.৫৪ বিলিয়ন) ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল। আমিরাত থেকে এসেছিল অর্ধেকেরও কম, ২০৭ কোটি ১৮ লাখ (২.০৭ বিলিয়ন) ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে এসেছিল যথাক্রমে ৩৪৩ কোটি ৮৪ লাখ (৩.৪৩ বিলিয়ন) ও ২০৩ কোটি ৯২ (২.৩ বিলিয়ন) লাখ ডলার।

ওই দুই অর্থবছরে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের উৎস ছিল আরব আমিরাত। দ্বিতীয় ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

হিসাব বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্সের পাঁচ ভাগের এক ভাগই এসেছে আরব আমিরাত থেকে। সৌদি আরবের চেয়ে ৬৮ শতাংশ বেশি রেমিটেন্স এসেছে আরব আমিরাত থেকে; যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি এসেছে ৫৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। ৬৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি এসেছে যুক্তরাজ্যের চেয়ে।

গেলো অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) চেয়ে রেমিটেন্স কমেছে ২৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। তবে আমিরাত থেকে বেড়েছে ৫১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশ। তবে যুক্তরাজ্য থেকে বেড়েছে ৩৪ দশমিক ২৬ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মোট রেমিটেন্সের প্রায় ২০ শতাংশই এসেছে আরব আমিরাত থেকে। উপসাগরীয় এই দেশটি বাংলাদেশিদের বিনিয়োগের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। যদিও বিনিয়োগের অর্থ কীভাবে পাঠানো হয়েছে তা জানা যায়নি। কারণ কেবলমাত্র হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিদেশে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমতি পেয়েছে।

অনেকে অবৈধভাবে আরব আমিরাতে টাকা পাচার করে সেখানে বিনিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ আছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আরব আমিরাতের সবচেয়ে সমৃদ্ধ শহর দুবাই ও রাজধানী আবুধাবি বর্তমানে অর্থ পাচারের জন্য বিশ্বের ধনীদের অন্যতম পছন্দের জায়গা। আরব আমিরাতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংখ্যা সৌদি আরবের চেয়ে অর্ধেক।

এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে সৌদির চেয়ে আমিরাত থেকে অনেক বেশি রেমিটেন্স আসাটাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন অর্থনীতির গবেষক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

এআরএইচ ডট নিউজকে তিনি বলেন, “বিদায়ী অর্থবছরে রেমিটেন্সে ১০ শতাংশ ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্য অবশ্যই ভালো। রিজার্ভে যে সংকট চলছে, তা কাটাতে সহায়তা করেছে। ব্যাল্যান্স অফ পেমেন্টে (বিওপি) যে বড় ঘাটতি হয়েছে, তা কমাতেও অবদান রেখেছে।”

“তবে রেমিটেন্স যে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সেটা কিন্তু আমিরাত থেকে উল্লম্ফনের কারণেই হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আরব আমিরাত থেকে কেনো রেমিটেন্স এতো বেড়েছে; আর সৌদি আরব থেকে কেনো ধস নেমেছে। গত তিন বছরে ২৮ লাখ লোক কাজের জন্য সৌদি আরব গেছেন। খুব একটা ফেরত আসেনি। আরব আমিরাত ও সৌদি আরব যাওয়া শ্রমিকদের দক্ষতা ও বেতনে খুব একটা তফাৎ নেই। ২০২১-২২ অর্থবছরে সৌদি থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছিল। গত অর্থবছরে তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অন্যদিকে আমিরাত থেকে রেমিটেন্স প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।”

তাই আরব আমিরাত থেকে কারা রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে এবং হঠাৎ করে কেন এর পরিমাণ বেড়ে গেল তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন মোস্তাফিজুর রহমান। একইসঙ্গে সৌদি আরব থেকে রেমিটেন্স ৫০ শতাংশের বেশি কমেছে—সেটাও সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানান তিনি।

আরব আমিরাত থেকে রেমিটেন্সের উল্লম্ফনের আভাস ২০২২-২৩ অর্থবছরেই পাওয়া গিয়েছিল। ওই অর্থবছরে দেশটি থেকে ৩০৩ কোটি ৩৮ লাখ ৫০ হাজার (৩.০৩ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে ৪৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি।

২০১৯ সালের জুলাই থেকে রেমিটেন্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছিল সরকার। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে তা বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়। চলতি বছরে কিছুদিন সরকারি আড়াই শতাংশ প্রণোদনার সঙ্গে ব্যাংকগুলোও তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে বাড়তি আরও শতাংশ প্রণোদনা দিয়েছিল।

গত ৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দেওয়ার পর ব্যাংকগুলো অবশ্য আর এই আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে না।

দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা প্রণোদনা ও বৈধতা পেতে রেমিটেন্সের মাধ্যমে ফেরত আনা হচ্ছে কিনা- এ প্রশ্নের উত্তরে সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আসলে এ বিষয়ে তো আমাদের কাছে সুনিদির্ষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। তাই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে, সন্দেহকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

“কেননা, আমিরাত থেকে হঠাৎ করে রেমিটেন্সে এতো উল্লম্ফন হলো কেনো। বিষয়টি আমার মতো সবার কাছেই অবাক লাগছে। তাই আমি বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করবো, একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য উদঘাটনের জন্য।”

“দেশের বর্তমান পেক্ষাপটে রিজার্ভ ও ব্যালেন্স অব পেমেন্টের জন্য রেমিটেন্স ভালো হলেও এর পেছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। অন্যদিকে বরাবর যে দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসত, সেই সৌদি আরব থেকে কেনো এতো কমল—সেটা কারণও খুঁজে বের করতে হবে।”

“এমনও হতে পারে, সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরব থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে বেশি অর্থ দেশে আসছে। সেটা বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে,” বলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

স্বাধীনতার পর থেকে শীর্ষে সৌদি আরব

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে বরাবরই সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪.৭৮ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। তার মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছিল ৫৭২ কোটি ১৪ লাখ (৫.৭২ বিলিয়ন) ডলার।

দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, এসেছিল ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। আর সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে এসেছিল ২ দশমিক শূন্য দুই বিলিয়ন ডলার।

কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কমে যায়; আসে ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার; ওই অর্থবছরে সব দেশ থেকেই কম আসে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক।

ওই অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে ৪ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার আসে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে ৩ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ২ দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে আসে ২ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী ১৯৭৬ সাল থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য যত শ্রমিক বিদেশে গেছেন, তার প্রায় ২০ শতাংশ গেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। বর্তমানে দেশটিতে ১৫ লাখের মতো প্রবাসী কাজ করছেন।

বিএমইটির হিসাবে, বাংলাদেশের শীর্ষ শ্রমবাজার সৌদি আরব। ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া শ্রমশক্তির ৩৬ শতাংশই গেছে দেশটিতে। সংখ্যার দিক থেকে যা ৫৫ লাখের বেশি।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের বড় অংশই রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে; কাজ করছেন বিভিন্ন শ্রমঘন পেশায়।

মধ্য প্রাচ্যের প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র দুবাই

আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাজ্যের ফেডারেশন-সংযুক্ত আরব আমিরাত। সাতটি রাজ্যের নাম হলো আবুধাবি, আজমান, দুবাই, ফুজাইরা, রাস আল খাইমা, আশ শারজাহ এবং উম্ম আল কোয়াইন। প্রতিটি রাজ্যের শাসনব্যবস্থা বংশগত রাজতন্ত্র এবং প্রতিটি রাজ্যের শাসনকর্তার পদবি হলো ‘আমির’।

ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী আবুধাবির আমির সংযুক্ত আরব আমিরাতের খলিফা বা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একইভাবে দুবাইয়ের আমির হলেন প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধান।

আবুধাবি শহর এই ফেডারেশনের রাজধানী। আবুধাবি ফেডারেশনের বৃহত্তম রাজ্য, যা মোট ভূমির তিন-চতুর্থাংশের বেশি অংশ নিয়ে গঠিত।

দুবাই এই ফেডারেশনের বৃহত্তম ও জনবহুল শহর এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র।

আরব আমিরাত মূলত পাথুরে মরুভূমি, উপকূলীয় সমভূমি এবং পাহাড়ের মিশ্র পরিবেশে গঠিত দেশ। তবে দেশটির অধিকাংশ অঞ্চল মরুভূমি। তেলশিল্পের কারণে এখানকার অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী এবং জীবনযাত্রার মানের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি।

ফেডারেশনের অর্থনীতি প্রধানত আবুধাবির উৎপাদিত তেলের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে দুবাইয়ের অর্থনীতি ব্যবসা ও পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি আরব আমিরাত তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে।

এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেশটি পর্যটনশিল্প এবং পণ্য উৎপাদনের ওপর জোর দিয়েছে।

আরব আমিরাতে আছে অনেক দৃষ্টিনন্দন ও গগনচুম্বী ভবন। বর্তমান বিশ্বের সর্বোচ্চ অট্টালিকা ‘বুর্জ খলিফা’ দুবাই শহরেই। প্রশস্ত রাস্তা ও সুপার হাইওয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে খ্যাতি আছে আমিরাতের। পারস্য উপসাগরের কূলে ৫ দশমিক ৭২ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ।

পামগাছের মতো দেখতে এই দ্বীপপুঞ্জের নাম ‘পাম জুমেইরা’। এটা পৃথিবীর বৃহত্তম কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় পৃথিবীর চতুর্থ ব্যস্ততম বিমানবন্দর।

এ সব কারণে চাঙা থাকা অর্থনীতির এই দেশটি থেকে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়তে পারে। তবে এক অর্থবছরে প্রায় ৫২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং সৌদি আরবের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি আসায় আরব আমিরাত থেকে পাচারের অর্থ রেমিটেন্স হয়ে দেশে আসছে কিনা—সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

রেমিটেন্স: উল্লম্ফনে শেষ হলো ২০২৩-২৪ অর্থবছর পরবর্তী

রেমিটেন্স: উল্লম্ফনে শেষ হলো ২০২৩-২৪ অর্থবছর

কমেন্ট