‘দক্ষ কর্মীর অভাবে ১০ বিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে’

‘দক্ষ কর্মীর অভাবে ১০ বিলিয়ন ডলার  বিদেশে চলে যাচ্ছে’

শনিবার ডিসিসিআই আয়োজিত 'ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া লিংকেজ: এমপ্লয়েবিলিটি অভ গ্র্যাজুয়েটস ইন দ্য চেঞ্জিং গ্লোবাল কনটেক্সট' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সামীর সাত্তার। ছবি: এআরএইচ ডটকম

দেশে দক্ষ কর্মীর অভাবে প্রতি বছর শিল্প খাতের ১০ বিলিয়ন ডলার বিদেশিরা নিয়ে যাচ্ছে বলে তথ্য দিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অভ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার।

বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১০৯ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ এক লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। 

শনিবার ডিসিসিআই আয়োজিত 'ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া লিংকেজ: এমপ্লয়েবিলিটি অভ গ্র্যাজুয়েটস ইন দ্য চেঞ্জিং গ্লোবাল কনটেক্সট' শীর্ষক সেমিনারে সামীর সাত্তার এ তথ্য দেন। 

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, “দেশের শিল্প খাত পরিচালনায় অনেক বিদেশি কাজ করেন। তারা প্রতিবছর ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার বেতন হিসেবে নিয়ে যাচ্ছেন। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বাইরে চলে যাওয়ার জন্য দায়ী দেশে গুণগত ও দক্ষ শ্রমশক্তির অভাব। দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরির জন্য ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া লিংকেজের কোনো বিকল্প নেই।” 

শনিবার ডিসিসিআই আয়োজিত 'ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া লিংকেজ: এমপ্লয়েবিলিটি অভ গ্র্যাজুয়েটস ইন দ্য চেঞ্জিং গ্লোবাল কনটেক্সট' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। 

সামীর সাত্তার বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া লিংকেজের কোনো বিকল্প নেই।” 

রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান নাসরিন আফরোজ। 

এতে প্যানেল আলোচক ছিলেন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) গভর্নিং বোর্ডের সদস্য শফকাত হায়দার, বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.সত্য প্রসাদ মজুমদার এবং ইউজিসির সদস্য প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেন। 

মূূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) গবেষণা পরিচালক ড. সায়েমা হক বিদিশা। 

সেমিনারে সামীর সাত্তার আরও বলেন, “দেশের মধ্যেই দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। তাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল শিক্ষা দিতে হবে। দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়াগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতেই আজকের এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।” 

শিক্ষামন্ত্রী দীপ মনি বলেন, “একাডেমিশিয়ানদের একটা বিষয় আছে যে, আমি তো জানি, আমার কেন ইন্ডাস্ট্রির কাছ থেকে শিখতে হবে। আর ইন্ডাস্ট্রিরও আছে, আমি তো ব্যবসা জানি, আমার কেন এই শিক্ষক মানুষের কাছে যেতে হবে। এক হাতে তালি বাজবে না, দুজনকেই লাগবে, দুজনকে সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে। সরকার এটাকে ফ্যাসিলিটেট করার জন্য সার্বক্ষণিক সেবায় নিয়োজিত আছে।” 

“প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন কারিকুলামে শিখানো হচ্ছে। আমি আশা করি এই শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনা শেষ করে শ্রমবাজারে যাবে, তখন আর এই স্কিল গ্যাপটি থাকবে না। তবে এখন যে স্কিল গ্যাপ রয়েছে সেটা পূরণ করতে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সফট স্কিল শেখাতে হবে।' 

এ সময় শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ে জোর দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান থাকাটাও খুব জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।  

সরকার জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “এখানে ২৯টি মন্ত্রণায়ল দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কাজ করছে।”  

মূল প্রবন্ধেে সায়েমা হক বিদিশা বলেন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংকেজ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কর্মক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জিং। ভবিষ্যতে অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়বে। 

 

রিজার্ভ ৩০ বিলিয়নের নিচে নামল পরবর্তী

রিজার্ভ ৩০ বিলিয়নের নিচে নামল

কমেন্ট