শ্রীলঙ্কার সেই ঋণের ৫ কোটি ডলার ফেরত পেল বাংলাদেশ
বিদেশি মুদ্রার সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কাকে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতির আওতায় ২০২১ সালের আগস্ট-অক্টোবর সময়ে চার কিস্তিতে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিল বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া সেই ২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের মধ্যে ৫ কোটি ডলার ফেরত পেল বাংলাদেশ।
বিভিন্ন অনিশ্চয়তার মধ্যে সোমবার এ অর্থ দিয়েছে দেশটি। আগামী ৩০ আগস্ট আরও ৫ কোটি ডলার ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে।
আর পুরো ঋণের সুদ যথাসময়ে ফেরত দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক এআরএইচ ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সোমবার বিকেলে তিনি বলেন, “দেশটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে কয়েক দফা সময় বাড়ানো হয়েছিল। এখন তারা বাকি ১৫০ মিলিয়ন ডলার যথাসময়ে ফেরত দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
বিদেশি মুদ্রার সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কাকে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতির আওতায় ২০২১ সালের আগস্ট-অক্টোবর সময়ে চার কিস্তিতে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিল বাংলাদেশ।
ওই বছরের ১৮ আগস্ট প্রথম কিস্তির ৫ কোটি ডলার ছাড় করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই ঋণ ছাড়ের মাধ্যমে ঋণদাতা দেশের তালিকায় নাম লেখায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ থেকে ওই ঋণ দেওয়া হয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল (গ্রস হিসাাবে) ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
একবছর মেয়াদি ঋণের মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে। এরপর তিন মাস করে কয়েক দফায় সময় বাড়ানো হয়। ঋণের বিপরীতে লন্ডন আন্ত:ব্যাংক অফার রেট বা লাইবর যোগ করে দেড় শতাংশ সুদ পাচ্ছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের মে মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় তাদের ঋণ দেওয়ার নীতিগত অনুমোদন হয়। এরপর চুক্তিনামা তৈরিসহ কিছু প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগল।
যেসব দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ কম তারা বিপদে পড়লে কারেন্সি সোয়াপের মাধ্যমে অন্য দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ঋণ নেয়।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়। তবে শ্রীলঙ্কার ওই মুহূর্তে সেটি ছিল না।
চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়ায় শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ কমতে কমতে একেবারে তলানিতে নেমে এসেছিল। দুই সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানোর রিজার্ভও ছিল না।
সংকট মেটাতে বন্ধুপ্রতীম দেশ বাংলাদেশের কাছ থেকে ঋণ চেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিল।
বাংলাদেশে রিজার্ভ এখন বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে। সোমবার দিনের শুরুতে ‘গ্রস’ হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার।
শ্রীলঙ্কার ঋণ পরিশোধ বাংলাদেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিতে কিছুটা হলেও অবদান রাখবে।
কমেন্ট