রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলারে নামল, আগামী সপ্তাহে আরও কমবে

রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলারে নামল, আগামী সপ্তাহে আরও কমবে

গত ১২ জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম৬ পদ্ধতি অসুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ কমছেই। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী বাংলাদেশে রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। 

বৃহস্পতিবার এই হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক শূন্য ছয় বিলিয়ন বা ২ হাজার ৩০৬ কোটি ডলার। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবের রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। 

বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলো নিয়ে সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে রিজার্ভের হালনাগাদ এই তথ্য পাওয়া গেছে। 

গত ১২ জুলাই থেকে আইএমএফের কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম৬ পদ্ধতি অসুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ওই দিন ‘গ্রস’ রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। 

এর পর থেকে রিজার্ভ কমছেই। হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, গত দেড় মাসে ‘গ্রস’ রিজার্ভ কমেছে ৭৭ কোটি ডলার। আর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভ কমেছে ৫০ কোটি ডলার। 

সবশেষ গত জুনে মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৪ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে বর্তমানের ২৩ দশমিক শূন্য ছয় বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।  

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।

 

আমদানি খাতে ব্যয় কমার পরও রিজার্ভ বাড়ছে না; উল্টো কমছে। জ্বালানি তেল, সার, খাদ্যপণ্যসহ সরকারের অন্যান্য আমদানি খরচ মেটাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির কারণেই রিজার্ভ কমছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। 

রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে রেমিটেন্স। এই রেমিটেন্স বাড়ায় কোরবানির ঈদের আগে ‘গ্রস’ রিজার্ভ বেড়ে ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। 

কিন্তু জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মে-জুন মেয়াদের ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ আবার ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। এরপর থেকে কমছেই। 

সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে অর্থাৎ আগামী সপ্তাহেই আকুর জুলাই-আগস্ট মেয়াদের ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের মত আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আরও কমে আসবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। 

দুই মাস পর পর আকুর দেনা পরিশোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।   

দীর্ঘদিন ধরে আইএমএফ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিপিএম৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) পদ্ধতি অনুসরণ করে রিজার্ভের হিসাব করতে বাংলাদেশ সরকার তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরামর্শ দিয়ে আসছিল।

কিন্তু বাংলাদেশ সে বিষয়টি আমলে নেয়নি। আমদানি দায় পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ঘাটতি দেখা দেয়। সেই ঘাটতি সামাল দিতে গত জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি (৪.৭ বিলিয়ন) ডলার ঋণ পেতে সমঝোতা করে বাংলাদেশ। 

ঋণ সমঝোতার পর আন্তর্জাতিক এ সংস্থার পরামর্শ আসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।     

বাাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের সেই শর্ত বা পরামর্শ মেনেই এখন রিজার্ভের দুই ধরনের তথ্যই প্রকাশ করছে।

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি চলছেই

এদিকে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেই চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অস্থির ডলারের বাজার সুস্থির করতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছিল।

সেই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রিজার্ভ থেকে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আর এই বিক্রি রিজার্ভ কমার একটি কারণ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা।

আমদানি কমায় এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় বাড়ায় ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ বাড়তে বাড়তে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের (গ্রস রিজার্ভ, তখন বিপিএম৬ পদ্ধতিতে হিসাব করা হত না) মাইলফলক অতিক্রম করেছিল।

এরপর আমদানি বাড়ায় এবং রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স হোঁচট খাওয়ায় রিজার্ভ কমতে থাকে। চাপ বাড়তে থাকে অর্থনীতিতে। বেশ কিছু দিন ধরে আমদানি কমলেও রিজর্ভের পতন ঠেকছে না।

২০২১-২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছিল।

আমদানি কমায় এবং রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের রেমিটেন্স বাড়ায় বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ডলারের দর ধরে রাখতে ২০২০-২১ অর্থবছরে উল্টো বাজার থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

রেমিটেন্সে ধীরগতি

এদিকে রেমিটেন্সে সুখবর নেই। দফায় দফায় টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ানোর পরও রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ছে না। 

অবৈধ হুন্ডি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স কম আসছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ, জনশক্তি রপ্তানিকারক ও ব্যাংকাররা। কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলারের দর বাড়ায় সাম্প্রতিক সময়ে হুন্ডি আরও বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন তারা। 

গত কয়েক দিন ধরে ডলারের বাজার ফের অস্থির হয়ে হয়ে উঠেছে। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা-ডলারের বিনিময় হার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা হলেও খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ১১৭/১১৮ টাকা দরে ডলার বিক্রি হচ্ছে। 

ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠালে আড়াই শতাংশ প্রণোদনাসহ যা পাওয়া যায়, হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালে তার চেয়েও ৫/৬ টাকা বেশি পাওয়া যায়। সে কারণেই সবাই হুন্ডির দিকে ঝুঁকছে বলে জানিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা। 

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের ২৫ দিনে ১৩২ কোটি ৩০ লাখ (১.৩২ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। মাসের বাকি ছয় দিনে (২৬ থেকে ৩১ আগস্ট) এই হারে আসলে, মাস শেষে ১৬৪ কোটি (১.৬৪ বিলিয়ন) ডলার আসবে। যা হবে ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। 

গত ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি (১.৫৬ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

 

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রেমিটেন্সে প্রতি ডলারের জন্য এখন ১০৯ টাকা দিয়েছে ব্যাংকগুলো। এই দর আরও ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করেছে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। 

নতুন এ সিদ্ধান্ত ১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে।

সে হিসাবে চলতি মাসের ২৫ দিনে (১ থেকে ২৫ আগস্ট) ১৪ হাজার ৪২০ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে পাঠিয়েছেন ৫ কোটি ২৯ লাখ ডলার বা ৫৭৭ কোটি টাকা। 

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি (১.৯৭ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছিল ৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলার বা ৬৯৪ কোটি টাকা। 

আর গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ (২.০৩ বিলিয়ন) ডলার। প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ (২.১০ বিলিয়ন) ডলার। 

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেই (জুলাই ও আগস্ট) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি করে রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। 

কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ বিলিয়ন ডলারের কম এসেছে। ২৫ দিনে যে হারে এসেছে, সেই হারে আসলেও আগস্ট মাসে দেড় বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি প্রবাসী আয় দেশে আসবে। 

গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ২ দশমিক ২০ বিলিয়ন (২২০ কোটি) ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। যা ছিল একক মাসের হিসবে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ; তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। 

এই হিসাব বলছে, অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক রেমিটেন্স প্রবাহে নেতিবাচক ধারা নিয়েই ২০২৩-২৪ অর্থবছর শুরু হচ্ছে। 

জনশক্তি রপ্তানি বাড়লেও রেমিটেন্স কেন বাড়ছে না-এ প্রশ্নের উত্তরে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সভাপতি আবুল বাশার এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “গত অর্থবছর আমরা সাড়ে ১১ লাখ লোককে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছি। এটি একটি বিশাল বড় ঘটনা। কিন্তু দুঃখজনক হলো জনশক্তি রপ্তানি বাড়লেও রেমিটেন্স বাড়ছে না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে হুন্ডি।” 

“করোনা মহামারির কারণে সব কিছু বন্ধ থাকায় বিশ্বব্যাপী অবৈধ হুন্ডি কর্মকাণ্ড বন্ধ ছিল। সে কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা সব অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠিয়েছিলেন।” 

“কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই ফের হুন্ডি কর্মকাণ্ড চালু হয়েছে। ডলারের বাজারের অস্থিরতার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে তা আরও বেড়ে গেছে। গত অর্থবছরে যারা বিভিন্ন দেশে গেছেন, তারা বেশিরভাগ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। বেতন পাচ্ছেন; দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে টাকা পাঠাচ্ছেন।

 

“সে হিসাবে রেমিটেন্সের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটি হচ্ছে না; উল্টো কমছে। এটি একটি উদ্বেগের বিষয়। এই রেমিটেন্স কমার কারণেই কিন্তু আমাদের বিদেশি রিজার্ভ কমে আসছে।” 

আবুল বাশার বলেন, ‘এখানে প্রবাসী ভাই-বোনদের কোনো দোষ আমি দেখি না। তারা প্রতি ডলারে পাঁচ-ছয় টাকা বেশি পাচ্ছেন বলেই ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা না পাঠিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক হুন্ডি বন্ধে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। 

“এখানে সরকারের কাছে আমার একটা প্রস্তাব আছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে বা বৈধপথে টাকা পাঠালে সরকার এখন যে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। তা বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করলে হুন্ডি বন্ধ হবে বলে আমি মনে করি।’ 

তবে ভিন্ন কথা বলেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। 

এআরএইচ ডটকমকে তিনি বলেন, “প্রণোদনা দিয়ে রেমিটেন্সের ইতিবাচক ধারা কখনই ধরে রাখা যাবে না। হুন্ডি বন্ধ করতেই তো সরকার প্রথমে ২ শতাংশ, পরে তা আরও বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করেছে। কিন্তু হুন্ডি তো বন্ধ হচ্ছে না; উল্টো আরও বাড়ছে।” 

“এখানে যে কাজটি করতে হবে, তা হলো, ডলারের বাজারকে স্থিতিশীল করতে হবে। কার্ব মার্কেট ও ব্যাংকের ডলারের দামের পার্থক্য কমিয়ে আনতে হবে। যত দিন এই পার্থক্য বেশি থাকবে তত দিন হুন্ডি বন্ধ হবে না।” 

আহসান মনসুর বলেন, ‘খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দর এখন ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা। ব্যাংকের মাধ্যমে ১ ডলার পাঠালে ১০৯ টাকা পাওয়া যায়। তার সঙ্গে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা যোগ হয়ে পাওয়া যায় ১১১ টাকার কিছু বেশি।” 

“আর হুন্ডির মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠালে, যার নামে পাঠান তিনি ১২০ টাকার মত পাচ্ছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কেন কোনো প্রবাসীরা তার পরিবার-পরিজনের কাছে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাবেন।” 

এ কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে গেছে বলে জানান আহসান মনসুর। 

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ১৬১ কোটি (২১.৬১ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।  

২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার এসেছিল।

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি চলছেই, ২ মাস না যেতেই ২ বিলিয়ন বিক্রি পরবর্তী

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি চলছেই, ২ মাস না যেতেই ২ বিলিয়ন বিক্রি

কমেন্ট