আকুর বিল শোধ, রিজার্ভ কমে ২০.৫ বিলিয়ন ডলার

আকুর বিল শোধ, রিজার্ভ কমে ২০.৫ বিলিয়ন ডলার

সবশেষ গত নভেম্বর মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের কম সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।

বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ কমেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছে ২৭ বিলিয়ন ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক মঙ্গলবার এআরএইচ ডট নিউজকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, “সোমবার আকুর ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার তা রিজার্ভ থেকে সমন্বয় করার পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২৭ বিলিয়ন ডলার।”

বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’রিজার্ভ হিসাবে দাবি করে।

সবশেষ গত নভেম্বর মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের কম সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।

গত রোববার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২৭ বিলিয়ন ডলার।

মঙ্গলবার আকুর দেনা সমন্বয় করার পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আর ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে।

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। ওই বছরের ২৪ আগস্ট রিজার্ভ ৪৮ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে ওঠে।

এর পর থেকে কমছেই। এক বছর আগে গত বছরের ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার।

মাস খানেক আগে কমতে কমতে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছিল। গত ১৩ ডিসেম্বর রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।

এর পর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের বহুল প্রতিক্ষিত দ্বিতীয় কিস্তি ৬৯ কোটি ডলার, ম্যালিাভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৪০ কোটি ডলার এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ৯ কোটি ডলার যোগ হওয়ায় বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

গত ১২ জুলাই থেকে আইএমএফের কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই দিন ‘গ্রস’হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ হিসাবে ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

১২ জুলাইয়ের আগে শুধুমাত্র ‘গ্রস’হিসাবের রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করত বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। মহাসংকটে পড়ায় শ্রীলঙ্কা অবশ্য আকুর থেকে বেরিয়ে এসেছে।

প্রতি দুই মাসের আমদানি বিল পরবর্তী মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধ করে এসব দেশ।

গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আকুর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মেয়াদের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ করা হয়েছিল।

এ বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে ‘দুঃখজনক’ রেকর্ড হবে: বিশ্বব্যাংক পূর্ববর্তী

এ বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে ‘দুঃখজনক’ রেকর্ড হবে: বিশ্বব্যাংক

ভোটের আগে বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা পরবর্তী

ভোটের আগে বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা

কমেন্ট