পুঁজিবাজারে টানা দরপতন, ক্ষুব্দ বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারে টানা দরপতন, ক্ষুব্দ বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারে দরপতন চলছেই। টানা চার দিন ধরে চলছে এই পতন। আর এতে ক্ষুব্দ ও হতাশ বিনিয়োগকারীরা।

সপ্তাহের তৃতীয় দিন বুধবার দুই বাজারেই মূল্যসূচক বেশ খানিকটা কমেছে। কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। তবে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।

এদিন দেশের প্র্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৪ দশমিক ১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৭৪ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৮১ পয়েন্টে।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭২ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৫৪৮ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে।

গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট বেড়েছিল। সিএসই সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছিল ৬২ পয়েন্ট।

এরপর চলতি সপ্তাহের চার দিনই দুই বাজারে মূল্যসূচক কমেছে। প্রথম দিন রোববার ডিএসইএক্স কমেছিল ৩০ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট। সোমবার কমেছিল ১১ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। মঙ্গলবার কমেছিল ১১ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট। আর বুধবার কমেছে ২৪ দশমিক ১৫ পয়েন্ট।

সব মিলিয়ে এই চার দিনে ডিএসইর প্রধান সূচক পড়েছে ৭৮ পয়েন্ট।

বুধবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। মঙ্গলবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ৬৬৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

এদিন ডিএসইতে ৩৩৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৪৫টির, কমেছে ১১৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৫টির দর।

অপর বাজার সিএসইতে বুধবার ২১৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ২৯টির; কমেছে ৮৯টির। আর দর বদলায়নি ৯৫টির দর।

লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার। মঙ্গলবার এই বাজারে ৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

পুঁজিবাজারের টানা এই দরপতনে হতাশ ও ক্ষুব্দ ছোট-বড় সব বিনিয়োগ বিনিয়োগকারী। তাদের প্রশ্ন কতদিন চলবে এই দরপতন?

ক্রমাগত এই দরপতনে ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়ে যাওয়া অনেক কোম্পানি আবার বেঁধে দেওয়ার সর্বনিম্ন দরে ফিরছে। আর দাম বাড়ার পর বিনিয়োগকারীরা বেশি পরিমাণে শেয়ার কেনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আরও।

সূচক কমার সঙ্গে সঙ্গে আবার দেখা দিয়েছে লেনদেনের খরা। হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়িয়ে যাওয়ার পর কমতে কমতে এখন ছয়শ থেকে সাতশ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে।

গত ১৫ মে সূচক ছিল ৬ হাজার ২৬০ পয়েন্ট। লেনদেন ছিল প্রায় ৬৫৪ কোটি। সেখান থেকে একটু একটু করে সূচকের উত্থানে ৪ জুন দাঁড়ায় ৬ হাজার ৩৬৬ পয়েন্ট। তার পরের দিনি লেনদেন দাঁড়ায় ১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকারও বেশি।

পুঁজিবাজারের ওই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায় আসলে গত ঈদুল ফিতরের আগে থেকে। ঈদের পর প্রথমে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক এবং পরে বীমা খাতের ওপর ভর করে আগাতে থাকে পুঁজিবাজার।

মাসের পর মাস ধরে চলে আসা মন্দা কাটিয়ে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে, এমন আশায় ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু লেনদেন ও সূচক সাত মাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছার পর গত সপ্তাহের ৬ জুন হঠাৎ ঘটে ছন্দপতন।

এর পর থেকে দরপতনের ধারাতেই রয়েছে বাজার।

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “বুঝতে পারছি না বাজারে কেনো টানা পতন হচ্ছে। বাজেট ঘোষণার পর মনে হচ্ছিল বাজারে ইতিবাচক ধারা ফিরে আসবে। প্রথম দু-একদিনের লেনদেনে তেমনটাই মনে হচ্ছিল। কিন্তু এখন প্রতিদিনই পড়ছে।”

বাজার নিয়ে সরকারের শীর্ষ মহলের ভাবা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের কর্ণধার শাকিল রিজভী।

 

 

পুঁজিবাজারে টানা দরপতন, ক্ষুব্দ বিনিয়োগকারীরা পরবর্তী

পুঁজিবাজারে টানা দরপতন, ক্ষুব্দ বিনিয়োগকারীরা

কমেন্ট