লেনদেন হাজার কোটি ছাড়ালেও সূচক পড়েছে পুঁজিবাজারে

লেনদেন হাজার কোটি ছাড়ালেও সূচক পড়েছে পুঁজিবাজারে

ছয় কর্মদিবস পর সপ্তাহের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন আবার হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়ালেও বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি নেই।

লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়ানোর দিনে মূল্যসূচক কমেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।

ছয় কর্মদিবস পর সপ্তাহের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন আবার হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়ালেও বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি নেই। বিক্রির চাপে বেড়েছে লেনদেন; পড়েছে সূচক। কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। তাই সবাই হতাশ। 

সপ্তাহের শুরুতে উত্থান হলেও টানা দুই দিন সূচকের পতন হল, সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার পতনের পরিমাণ আরও বেশি। 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মঙ্গলবার ৬৩টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১১৬টির দর। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্টের বেশি। আগের দিন ৮৩ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছিল ১১৩টি। 

সবচেয়ে বেশি ১৯২টি কোম্পানির দর ছিল ফ্লোর প্রাইসে আগের দিনের দরে। ঈদুল ফিতরের পর থেকে পুঁজিবাজার একটু একটু করে গতি ফিরে পেতে থাকলেও এখনও প্রায় অর্ধেক কোম্পানিই সর্বনিম্ন শেয়ারদরে পড়ে আছে। 

এদিন সব মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৪ কোটি ৫৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১০৮ কোটি টাকা বেশি। 

গত ১০ জুলাই এক মাস পর লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেলেও ঢালাও দরপতন হয়। এর দুইদিন পরই লেনদেন ছয়শ কোটির ঘরে নেমে আসে। পরে বীমা খাত ঘুরে দাঁড়ালে লেনদেন আবার বাড়তে থাকে। 

আগের দিনের মতই বড় মূলধনী কোম্পানি স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জ হোলসিম, মিডল্যান্ড ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, রূপালী ব্যাংকের ক্রেতা দেখা গেছে। ব্যাংক খাতের আরও কিছু কোম্পানিতে একটু একটু করে বাড়ছে আগ্রহ। 

চলতি সপ্তাহের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার ডিএসইতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০ দশমিক শূন্য পাঁচ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ৩৫১ দশমিক ১০ পয়েন্টে।      

অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৮৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে। 

৩৭১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৩টির, কমেছে ১১৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯২টির দর।      

সিএসইতে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৭৬৮ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সোমবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা।       

২১৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৮টির, কমেছে ৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৪টির দর। 

দর বৃদ্ধির শীর্ষে 

দর বৃদ্ধির শীর্ষের তালিকায় প্রাধান্য ছিল প্রকৌশল খাতের। ১০টি কোম্পাটির চারটিই এক খাতের। দুটি কোম্পানি ছিল খাদ্য খাতের, বাকিগুলো বীমা, ব্যাংক, কাগজ ও বস্ত্র কোম্পানি। 

সবচেয়ে বেশি ৯.৯৫ শতাংশ দর বেড়েছে সাধারণ বীমা কোম্পানি এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের। 

প্রকৌশলের চার কোম্পানির মধ্যে সার্কিট ব্রেটার ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে লোকসানি আজিজ পাইপস ও খান ব্রাদার্স, দুর্বল কোম্পানি দেশবন্ধু পলিমার এবং স্বল্প মূলধনী কে অ্যান্ড কিউ। 

খাদ্য খাতের আরডি ফুড সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে এবং বিট হ্যারারি সার্কিট ব্রেকার ছুঁলেও সেখান থেকে কিছুটা কমে শেষ করে লেনদেন।  

মিডল্যান্ড ব্যাংক টাকা দুই দিন লেনদেন শেষ করল সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে। ৯.৫৫ শতাংশ বেড়েছে বন্ধ কোম্পানি খুলনা পেপারের শেয়ারদর। 

বস্ত্র খাতের সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর বেড়েছে ৭.৯১ শতাংশ।  

পতনের শীর্ষে

পতনের শীর্ষের তালিকার শীর্ষে ছিল ঠিক ১০ শতাংশ দর হারনো রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এমারেল্ড অয়েলের দর কমেছে ৯.৯২ শতাংশ। এর চেয়ে বেশি দর কমতে পারত না কোম্পানিটির। তৃতীয় অবস্থানে ছিল ফু ওয়াং ফুডস। 

গত সপ্তাহে লাফ দেওয়া ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ও ডেল্টা লাইফের অবস্থান ছিল এর পর। দুটি কোম্পানিই দর হারিয়েছে ৫ শতাংশের বেশি।  

পরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে ওরিয়ন ইনফিউশন, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল ফিড মিলস, লুব রেফ ও ফার ক্যামিকেলস। প্রতিটি কোম্পানিই দর হারিয়েছে ৪ শতাংশের বেশি।

চাঙাভাব একদিনও টিকলো না, ফের দরপতনের ধারায় পুঁজিবাজার পরবর্তী

চাঙাভাব একদিনও টিকলো না, ফের দরপতনের ধারায় পুঁজিবাজার

কমেন্ট