বড় দরপতনে সপ্তাহ শুরু, ক্ষুব্দ বিনিয়োগকারীরা
সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার দেশের প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ দশমিক শূন্য চার পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩১৫ দশমিক ৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দরপতন চলছেই বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে। নতুন সপ্তাহও শুরু হলো বড় পতনের মধ্য দিয়ে। দুই বাজারেই মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে। কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর।
বাজারের এই টানা দরপতনে হতাশ ও ক্ষুব্দ ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী। বাজার শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? আদৌ কোনো দিন ভালো হবে কী না? এ সব উদ্বিগ্ন সবাই।
সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার দেশের প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ দশমিক শূন্য চার পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩১৫ দশমিক ৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৪৩ পয়েন্টে।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৬৬৫ দশমিক শূন্য নয় পয়েন্টে।
রোববার ডিএসইতে ৪১৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবারের চেয়ে ৬৮ কোটি টাকা কম। বৃহস্পতিবার এই বাজারে ৪৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
কোরবানির ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই লেনদেন বাড়তে বাড়তে ১১ জুলাই ডিএসইতে লেনদেন হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করে এক হাজার ৮৪ কোটি টাকায় উঠেছিল।
কিন্তু একদিন পরই সেই লেনদেন এক ধাক্কায় প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে; ৬৪৫ কোটি ৬৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর পর থেকে লেনদেন কমতে কমতে ৪০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
রোববার ডিএসইতে ৩৬৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৩৯টির, কমেছে ১৩৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬০টির দর।
অন্যদিকে সিএসইতে রোববার মাত্র ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
লেনদেন হয়েছে ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ারের দর। এর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৩১টির; কমেছে ৭৫টির। আর দর বদলায়নি অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের দরেই লেনদেন হয়েছে ৫০টির দর।
বাজারে কী হয়েছে-জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবু আহমেদ এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “বাজারে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার ভালো হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাজারে এখন নতুন কোনো সাধারণ বিনিয়োগকারী আসছে না। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের পরিচালক নিজেরাই চেষ্টা করছেন তাদের কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াতে।”
এর সমাধান কোথায় এমন প্রশ্নে অধ্যাপক আবু আহমেদ দুষছেন, ফ্লোর প্রাইসকে। বলেন, “সিলেক্টিভ ৩০টি কোম্পানির দিকে তাকালে দেখা যায় ২৩টিই আছে ফ্লোরে, তাহলে বাজারে লেনদেন হবে কেমনে?”
বাজারে স্বাভাবিক ধারা ফিরিয়ে আনতে তার পরামর্শ, ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে হবে। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও বাজারমুখী হবেন বলে আশা এই পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞের।
পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সংগঠন পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “শেয়ারবাজারে যেভাবে দরপতন হচ্ছে তাতে প্রতিদিন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারাচ্ছেন। বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি।”
কমেন্ট