পুঁজিবাজারে লেনদেনে খরা কাটছে না
সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৮৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এই অঙ্ক আগের দিন বুধবারের চেয়ে ৬১ কোটি ৩০ লাখ টাকা কম।
শুধু বৃহস্পতিবার নয়, বেশ কিছুদিন ধরেই পুঁজিবাজারে লেনদেনে খরা চলছে। মাঝে দু-একদিন বাড়ার উঁকি দিলেও ফের তা তলানিতে নেমে এসেছে।
বাজারে লেনদেনের এই অবস্থা কেনো-জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবু আহমেদ এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “বাজারে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার ভালো হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাজারে এখন নতুন কোনো সাধারণ বিনিয়োগকারী আসছে না। সবাই হতাশ-ক্ষুব্দ। এ অবস্থায় লেনদেন বাড়ার কোনো কারণ আমি দেখছি না।”
এর সমাধান কোথায় এমন প্রশ্নে অধ্যাপক আবু আহমেদ দুষছেন, ফ্লোর প্রাইসকে। বলেন, “সিলেক্টিভ ৩০টি কোম্পানির দিকে তাকালে দেখা যায় ২৩টিই আছে ফ্লোরে, তাহলে বাজারে লেনদেন হবে কেমনে?”
বাজারে স্বাভাবিক ধারা ফিরিয়ে আনতে তার পরামর্শ, ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে হবে। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও বাজারমুখী হবেন বলে আশা এই পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞের।
গত সপ্তাহের মতো বড় দরপতনে চলতি সপ্তাহ শুরু করেছিল বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। মার্কিন ভিসা নীতি কার্যকরের ঘোষণার খবরে বেশ অস্থিরতার মধ্যে যায় তার আগের সপ্তাহ। মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছিল ওই সপ্তাহে। সেই নেতিবাচক ধারাতেই শুরু হয়েছিল নতুন সপ্তাহ।
তার আগের সপ্তাহ সপ্তাহ ভালোই গিয়েছিল। দুই বাজারেই সূচকের সঙ্গে লেনদেনেও বেড়েছিল। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও আশা জেগেছিল; সবাই ভাবছিলেন বাজার বোধ হয় ঘুরে দাঁড়াবে।
কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফের হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১ দশমিক শূন্য ছয় পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৬১ দশমিক ৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক দশমিক ২৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৩১০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬২টির, কমেছে ৮১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬৭টির দর।
লেনদেন হয়েছে ৩৮৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার। বুধবার লেনদেন হয়েছিল ৪৫০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
সপ্তাহের প্রথম দিন এই বাজারে ৫৩১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে ৪৪১ কোটি ২৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। আগের দিন ২৪ সেপ্টেম্বর লেনদেনের অঙ্ক ছিল ৫০০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
মাঝে অবশ্য দু-তিন দিন লেনদেন ৭০০ কোটি টাকার উপরে উঠেছিল।
তার আগে ৬ আগস্ট ডিএসইতে লেনদেন ৪১৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকায় নেমে এসেছিল।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯ দশমিক ২১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৫৩১ দশমিক ৯০ পয়েন্টে।
১০ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বুধবার লেনদেন হয়েছিল ২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
লেনদেন হয়েছে ১৩০টি কোম্পানির শেয়ারের দর। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৯টির; কমেছে ৪৯টির। আর দর বদলায়নি অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের দরেই লেনদেন হয়েছে ৫২টির দর।
কমেন্ট