পুঁজিবাজারে বড় দরপতন, লেনদেন তলানিতে
ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী এবং বাজার বিশ্লেষকদের একই প্রশ্ন কী হচ্ছে পুঁজিবাজারে। সূচক আর কতো কমবে? লেনদেন আর কতো নিচে নামবে?
বড় দরপতনে সপ্তাহ শুরু করল বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহও ভালো যায়নি বাজার। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন সপ্তাহও শুরু হলো হতাশা, ক্ষোভ ও উদ্বেগের মধ্যে।
ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী এবং বাজার বিশ্লেষকদের একই প্রশ্ন কী হচ্ছে পুঁজিবাজারে। সূচক আর কতো কমবে? লেনদেন আর কতো নিচে নামবে?
প্রথম দিন রোববার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৪ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৩৭ দশমিক ২৩ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৫১ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩০ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে ৩৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এই লেনদেন গত ১৬ অগাস্টের পর সর্বনিম্ন। সেদিন লেনদেন হয়েছিল ৩৫১ কোটি ৫৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।
গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার এই বাজারে ৩৮৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল।
রোববার ডিএসইতে ২৯৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ১৪টির, কমেছে ১৩৪টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪৯টির দর।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৪ দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৪৭৭ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে।
১৬ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১০ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
লেনদেন হয়েছে ১২৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর। এর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৮টির; কমেছে ৭৯টির। আর দর বদলায়নি অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের দরেই লেনদেন হয়েছে ৩৭টির দর।
বাজারের এই অবস্থা কেনো-জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবু আহমেদ এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “বাজারে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার ভালো হওয়ার কোনো কারণ নেই।”
“অর্থনীতিতে নানা-উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে বাজারে এখন নতুন কোনো সাধারণ বিনিয়োগকারী আসছে না। সবাই হতাশ-ক্ষুব্দ। এ অবস্থায় লেনদেন বাড়ার কোনো কারণ আমি দেখছি না।”
এর সমাধান কোথায় এমন প্রশ্নে অধ্যাপক আবু আহমেদ দুষছেন, ফ্লোর প্রাইসকে। বলেন, “সিলেক্টিভ ৩০টি কোম্পানির দিকে তাকালে দেখা যায় ২৩টিই আছে ফ্লোরে, তাহলে বাজারে লেনদেন হবে কেমনে?”
বাজারে স্বাভাবিক ধারা ফিরিয়ে আনতে আবু আহমেদের পরামর্শ, ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে হবে। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও বাজারমুখী হবেন বলে আশা এই পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞের।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে পুঁজিবাজারে গতি ফেরার আশাও দেখছেন না এই বিশ্লেষক। তিনি বলেন, “ভোট শেষে যখন একটি স্থিতিশীল সরকার আসবে, তখন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর হবে, আবার তখন ফ্লোর প্রাইস নিয়েও হয়ত বিএসইসি সিদ্ধান্তে আসবে, তখন বাজারে অংশগ্রহণ বাড়বে।”
কমেন্ট