বেশিরভাগ শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস উঠে গেল
বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার আদেশ জারি করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
অবশেষে পুঁজিবাজারে ৩৫টি কোম্পানি ছাড়া বাকি সব শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে এই ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার আদেশ জারি করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আদেশে বলা হয়েছে, সরকারের নির্দেশনা মেনে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হলেও ৩৫টি কোম্পানির ক্ষেত্রে আগের আদেশ বহাল থাকবে। এগুলো বাদে অন্যান্য কোম্পানির ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্ন সীমা প্রযোজ্য হবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, ডিএসইএক্স সূচকে অন্তর্ভুক্ত যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে এবং যাদের শেয়ারের দামের উত্থান–পতনে সূচকের ওপর প্রভাব ফেলে, তেমন ৩৫টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখা হয়েছে। পরে এসব কোম্পানির ওপর থেকেও ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।
যে ৩৫টি কোম্পানির ওপর ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখা হয়েছে সেগুলো হলো আনোয়ার গ্যালভ্যানাইজিং, বারাকা পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বেক্সিমকো লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল, বিএসআরএম লিমিটেড, বিএসআরএম স্টিল, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডিবিএইচ, ডরিন পাওয়ার, এনভয় টেক্সটাইল, গ্রামীণফোন, এইচআর টেক্সটাইল, আইডিএলসি, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, ইসলামী ব্যাংক, কেডিএস এক্সেসরিজ, খুলনা পাওয়ার, কাট্টলি টেক্সটাইল, মালেক স্পিনিং, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল পলিমার, ওরিয়ন ফার্মা, পদ্মা অয়েল, রেনাটা, রবি আজিয়াটা, সায়হাম কটন, শাশা ডেনিমস, সোনালী পেপার, সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্স, শাইনপুকুর সিরামিকস, শাহজিবাজার পাওয়ার, সামিট পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার।
পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতন ঠেকাতে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই সর্বশেষ দফায় ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছিল বিএসইসি। এ ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর একটি বড় অংশের শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে যায়। এতে করে প্রায় দেড় বছর এসব কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হচ্ছে না বললেই চলে।
ফলে পুঁজিবাজারেও একধরনের স্থবিরতা নেমে আসে। এ অবস্থায় বাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল।
তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এত দিন ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়নি। বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নির্বাচনের পর বাজারে কিছুটা গতি ফিরলে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হবে। তারই অংশ হিসেবে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার আদেশ জারি করা হলো।
সূচক-লেনদেন কমে সপ্তাহ শেষ
টানা কয়েক দিন বাড়ার পর মূল্যসূচক ও লেনদেন কমেছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে আগের দিনের চেয়ে লেনদেনও কমেছে।
বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট কমে সূচকটি অবস্থান করছে ৬ হাজার ৩৩৬ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচক ডিএসইএস ২ দশমিক ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৮৮ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৯ দশমিক ১১ পয়েন্ট হারিয়ে ২ হাজার ১২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৬৩৭ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। বুধবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ৭৬০ কোটি ৮ লাখ টাকা।
৩৩৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৬টি কোম্পানির, ১১১ কোম্পানির দর কমেছে। পাশাপাশি ১৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর অপরিবর্তিত ছিল।
তবে অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৩ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৮০৬ দশমিক ৩৬ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। বুধবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
১৬৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৮টির, কমেছে ৬৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৫টির দর।
কমেন্ট