ফ্লোর প্রাইস উঠল আরও ২৩ কোম্পানির
পুঁজিবাজারে এখন ফ্লোর প্রাইস আরোপ রয়েছে মাত্র ১২টি কোম্পানির শেয়ারের ওপর।
পুঁজিবাজারে আরও ২৩টি কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তর তুলে নেওয়া হয়েছে। লেনদেনে গতি ফিরে আসায় সোমবার লেনদেন শেষে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তাতে পুঁজিবাজারে এখন ফ্লোর প্রাইস আরোপ রয়েছে মাত্র ১২টি কোম্পানির শেয়ারের ওপর।
গত বৃহস্পতিবার ৩৫টি কোম্পানি বাদে বাকি সব কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় বিএসইসি। ওই ৩৫টি কোম্পানির মধ্য থেকে সোমবার নতুন করে ২৩টির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়।
এই ২৩ কোম্পানি হলো—বারাকা পাওয়ার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল, বিএসআরএম স্টিল, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডিবিএইচ, ডরিন পাওয়ার, এনভয় টেক্সটাইল, এইচআর টেক্সটাইল, আইডিএলসি, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, কেডিএস এক্সেসরিজ, কাট্টলি টেক্সটাইল, মালেক স্পিনিং, ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল পলিমার, পদ্মা অয়েল, সায়হাম কটন, শাশা ডেনিমস, সোনালী পেপার, সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্স, শাইনপুকুর সিরামিকস, সামিট পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার।
যে ১২ কোম্পানির ওপর এখনও ফ্লোর প্রাইস আরোপ রয়েছে, সেগুলো হলো—আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি বা বিএটিবিসি, বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসআরএম লিমিটেড, গ্রামীণফোন, ইসলামী ব্যাংক, খুলনা পাওয়ার, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ওরিয়ন ফার্মা, রেনেটা, রবি ও শাহজিবাজার পাওয়ার।
পুঁজিবাজারে পতন ঠেকাতে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই সব শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়েছিল। ফ্লোর প্রাইস ছিল এমন একটা ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সংস্থা তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়েছিল। এর ফলে কোনো শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের বেঁধে দেওয়া দামের নিচে নামার সুযোগ ছিল না।
রবিবার থেকে প্রথম দফায় বেশির ভাগ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস উঠে যায়। তাতে ওই দিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৯৬ পয়েন্ট পড়ে যায়। আর সোমবার সূচকটি বাড়ে ১৪ পয়েন্টের বেশি; লেনদেন ছাড়ায় হাজার কোটি টাকা।
১২টি কোম্পানির ‘ফ্লোর’ রেখে বাকিগুলো উঠিয়ে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, “আমরা ফ্লোর তোলার পূর্বে নানা-হিসেব করে দুটি চ্যালেঞ্জ দেখতে পাই। একটি হচ্ছে মার্জিন ঋণের ফোর্সড সেল; আর আরেকটি হচ্ছে প্যানিক সেল।
“দুটি চ্যালেঞ্জকে সামাল দিতে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পদক্ষেপ নেয়া হয়। প্রত্যক্ষ পদক্ষেপের মধ্যে ছিল পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল-সিএমএসএফ থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ। আর পরোক্ষ পদক্ষেপের মধ্যে বাজার মধ্যস্তকারীদের উৎসাহ দেয়া হয়েছে নতুন বিনিয়োগ করা ও বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করা।”
“প্যানিক সেল (আতঙ্ক হয়ে বিক্রি করা) নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি আমরা। আর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে উদ্যোগ নেয়ায় আশা করছি ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের বাজারে ফেরার প্রবণতা বাড়বে।”
১২টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস রেখে দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে রেজাউল বলেন, ‘‘আগামী কয়েক দিনের লেনদেন ও বাজার পরিস্থিতি দেখে কমিশন ফের সিদ্ধান্ত নেবে। ফ্লোর ধরে রাখা কোম্পানিগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগকারীও রয়েছেন। বাজারের প্রতি তারা যেন নেতিবাচক না হন, তাই পরের ধাপে এসব কোম্পানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”
কমেন্ট