ফ্লোর প্রাইস তোলার ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পুঁজিবাজার
সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩ দশমিক ১২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৫৩ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯৭৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর তুলে নেওয়ার ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। দেশের প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স টানা তিন দিন বেড়েছে। বেড়েছে লেনদেনের অঙ্ক। এর মধ্য দিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও আস্থা ফিরে আসছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩ দশমিক ১২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৫৩ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯৭৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের দিন মঙ্গলবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ৯৩৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বেড়ে ১৭ হাজার ৪২৭ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
টানা তিন কার্যদিবস কমার পর চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন সোমবার ডিএসইএক্স ১৮ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বেড়েছিল। ডিএসইএক্স বেড়েছিল ৫৩ পয়েন্ট। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবারও বেড়েছে এই সূচক।
বাজারের এমন হালচালে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাজার বিশ্লেষক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী।
সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে, ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পর বাজারের একটা ধাক্কা লেগেছিল। আমার মনে হচ্ছে, সেই ধাক্কা কেটে গেছে। বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরছে। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও বাড়ছে। আমি মনে করি বাজার সঠিক পথেই আছে। ফ্লোর পাইস উঠে যাওয়ার পর বিক্রির চাপ বেড়েছিল। সে কারণে সূচক কমেছিল; এখন ঠিক হয়ে যাচ্ছে।”
‘বাজার এখন ভালোর দিকে যাবে’ মন্তব্য করে আহমেদ রশিদ লালী বলেন, “বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরতে হবে। দেখেশুনে বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের আমি বলবো—মূল্যসূচকের দিকে না তাকিয়ে শেয়ারের গতিপ্রকৃতি দেখে বিনিয়োগ করুন। আতঙ্কিত হয়ে কোনো শেয়ার বিক্রি করে দেবেন না। হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ভুল সিদ্ধান্ত হবে।”
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, তিন দিনে (সোম, মঙ্গল ও বুধবার) ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৫ পয়েন্টের মতো বেড়েছে।
ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর তুলে নেওয়ার পর দুই দিন ভালোর ইঙ্গিত দিলেও ফের দরপতন শুরু হয় বাজারে। টানা তিন কার্যদিবস দুই বাজারেই মূল্যসূচকের বড় পতন হয়। এই তিন দিনে ডিএসইএক্স কমে ২০০ পয়েন্টের মতো। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র দেখা যায়।
৩৫টি কোম্পানিকে হাতে রেখে বাকিগুলোর শেয়ারের সর্বনিম্ন দর তুলে দেওয়ার পর গত সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার বড় দরপতনের পর দুই দিন (সোম ও মঙ্গলবার) বাজারে সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখি। ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছিল। সবাই ভেবেছিলেন বাজার বোধ হয় এবার ঘুরে দাঁড়াবে।
কিন্তু পরের দিন (গত সপ্তাহের বুধ ও বৃহস্পতিবার এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার) বাজারে বড় পতন হয়। ফের হতাশ হয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। সোম ও মঙ্গলবারের পর বুধবারও বাজারে চাঙাভাব দেখা যাওয়ায় আবার আশায় বুক বাঁধছেন তারা।
বুধবারের বাজার
সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৯৩ টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪৫টির, কমেছে ২০৭ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টির দর।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩ দশমিক ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৫৩ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস ২ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৫১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৭ দশমিক ১৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বুধবার ডিএসইতে ৯৭৯ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিলো ৯৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
অন্যদিকে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়েছে ১৭ হাজার ৪২৭ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া ২৫৮ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯১টির, কমেছে ১২৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির দর। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
কমেন্ট