ডিএসইর প্রধান সূচক ৬০০০ পয়েন্টের নিচে, ৩৪ মাসে সর্বনিম্ন

ডিএসইর প্রধান সূচক ৬০০০ পয়েন্টের নিচে, ৩৪ মাসে সর্বনিম্ন

পুঁজিবাজারে দরপতন চলছেই। মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমছে; কমছে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দর। ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফের হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

রোজার প্রথম দিন ব্যাপক পতনের পর দ্বিতীয় দিন বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৩৩ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে; সূচক দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৭৪ দশমিক ১০ পয়েন্ট। যা ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এর আগে ২০২১ সালের ২৫ মে ডিএসইএক্স ৫ হাজার ৯৮৪ পয়েন্টে নেমেছিল। তারপর আর কখনও ছয় হাজারের নিচে নামেনি।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস ৯ দশমিক ০৮ পয়েন্ট কমেছে। দিন শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ৩০০ পয়েন্ট। অন্যদিকে ডিএস-৩০ সূচক ৭ দশমিক ২৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

রোজার প্রথম দিন মঙ্গলবার ডিএসইএক্স ৫১ পয়েন্ট হারায়, হাতবদল হয় ৫৬৩ কোটি টাকার শেয়ার।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় সূচকের ঘরে ৬ হাজার ৬ পয়েন্ট নিয়ে। ১৩ মিনিটের মাথায় ৯ পয়েন্ট হারিয়ে ডিএসইএক্স নেমে আসে ৬ হাজারের নিচে।

এরপর বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সূচকের পতন চলে। সূচক নেমে যায় ৬ হাজার ৯৫০ পয়েন্টে। এর মধ্যে দুইবার সূচক ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও তা টেকসই হয়নি।

তবে বেলা সাড়ে ১১টার পর খানিকটা ঘুড়ে দাঁড়িয়ে সাড়ে ১২টার দিকে হারানো পয়েন্টের অনেকটাই ফিরে পায় ডিএসইএক্স। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছয় হাজার পয়েন্টও ছাড়িয়ে যায়।

কিন্তু বাকি সময় আবার ধীরে ধীর পড়তে থাকে বাজার। বেলা দেড়টায় সূচকে ৫ হাজার ৯৭৪ পয়েন্ট নিয়ে লেনদেন শেষ হয়।

লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার ঘরে

লেনদেনও বেশ খানিকটা কমেছে। মঙ্গলবার এই বাজারে ৫৬৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। বুধবার তা কমে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে ৪৮৩ কোটি ৩০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে।

মঙ্গলবার ডিএসইতে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৯৪টি কোম্পানি। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১২ টির, কমেছে ২২২ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬০ টির দর।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বুধবার ১৫৭ দশমিক ৮২ পয়েন্ট কমে ১৭ হাজার ১০৫ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। মঙ্গলবার এই বাজারে ১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল।

বুধবার এই বাজারে ২১৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দর বেঢ়ে ৬০টির, কমেছে ১৩১টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির দর।

পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বাজার বিশ্লেষক ডিএসইর বর্তমান পরিচালক ও সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিল রিজভী।

এআরএইচ ডট নিউজকে তিনি বলেন, “ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া এবং ২২ কোম্পানির ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবনমনের ধাক্কা কেটে গেছে। বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার আভাসও পাওয়া যাচ্ছিল। ডিএসইতে লেনদেন ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। সবাই ভেবেছিল বাজার ভালো হবে। কিন্তু কেনো যে পতন হচ্ছে—বুঝতে পারছি না।”

ছোট বিনিয়োগকারী গোবিন্দ শীল এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, “কি যে হচ্ছে পুঁজিবাজারে বুঝতে পারছি না। আমাদের বাজার বোধ হয় কোনো দিনই ভালো হবে না। একটার পর একটা সমস্যা লেগেই আছে। রোববার ডিএসইর আইটি সমস্যা দেখে অনেকেই ভয় পেয়ে গেছে; শেয়ার কিনছে না, বিক্রিও করছে না। কেনোবেচা করলে যদি ঠিকঠাক মতো না হয়।”

৭ কার্যদিবস পর সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে পরবর্তী

৭ কার্যদিবস পর সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে

কমেন্ট