ফের সেই পতনের ধারায় পুঁজিবাজার

ফের সেই পতনের ধারায় পুঁজিবাজার

এদিন ডিএসইএক্স পড়েছে প্রায় দেড় শতাংশ বা ৮১ পয়েন্ট। আর তাতেই এই সূচকটি ৮ কার্যদিবস পর আবারও ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে।

ফের বড় দরপতন হয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আবারও ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে।

এদিন ডিএসইএক্স পড়েছে প্রায় দেড় শতাংশ বা ৮১ পয়েন্ট। আর তাতেই এই সূচকটি ৮ কার্যদিবস পর আবারও ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে।

সূচকের বড় পতন হয়েছে চট্টগ্রামের বাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই মঙ্গলবার ১৭২ পয়েন্ট বা ১ শতাংশের বেশি কমেছে।

সূচকের পাশাপাশি দুই বাজারে লেনদেনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।

শেয়ারবাজারে বর্তমানে এক দিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারে না। বাজারের পতন ঠেকাতে গত ২৫ এপ্রিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দরপতনের এ সীমা আরোপ করে।

সেই হিসাবে তালিকাভুক্ত সব শেয়ারের দাম কমলে সূচকও এক দিনে ৩ শতাংশের মতো কমতে পারবে।

এদিকে বাজারের এই পতনে হতাশ ও উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা। পতন ঠেকাতে করণীয় খুঁজতে বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন ডিএসই’র কর্মকর্তারা।

‘পুঁজিবাজার উন্নয়ন’ শীর্ষক এই বৈঠকটি বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর মতিঝিলে ডিএসই বিল্ডিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুর রহমান এআরএইচ ডট নিউজকে জানিয়েছেন।

দিনের শুরুতে বাজারে পতন শুরু হলে অনেক শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ কমে যায়। ৩ শতাংশ দাম কমে যাওয়ার পর অনেক শেয়ারের ক্রেতাও ছিল না। ফলে এদিন সূচকটি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ঢাকার বাজারে মঙ্গলবার লেনদেনের শীর্ষ ২০ কোম্পানির মধ্যে ১৩টির ক্ষেত্রেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

মূলত সম্প্রতি যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছিল, সেগুলোর ক্ষেত্রেই এ ঘটনা বেশি ঘটেছে। এসব কোম্পানির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নাভানা ফার্মা, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, ই-জেনারেশন, ওরিয়ন ইনফিউশন, কোহিনূর কেমিক্যাল, বেস্ট হোল্ডিংস, গোল্ডেন সন, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, লাভেলো আইসক্রিম, মালেক স্পিনিংসহ আরও কিছু কোম্পানি।

বাজার পরিস্থিতি

ঢাকার বাজারে সবশেষ ডিএসইএক্স সূচকটি ৩০ এপ্রিল সর্বনিম্ন ৫ হাজার ৫৮৪ পয়েন্টের অবস্থানে ছিল। এরপর তা বেড়ে ৬ মে ৫ হাজার ৭২৭ পয়েন্টে উঠেছিল। গত দুই দিনের পতনে তা কমে আবার ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্টের নিচে নেমে আসে।

সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে। ঢাকার বাজারে মঙ্গলবার দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬৬৪ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৩০৪ কোটি টাকা বা ৩১ শতাংশ কম।

লেনদেন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যখনই বাজারে পতন শুরু হয়, তখন বেশির ভাগ শেয়ারের ক্রেতা থাকে না। ফলে এসব শেয়ারের খুব বেশি লেনদেন হয় না। এ কারণে বাজারের সার্বিক লেনদেনেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

মঙ্গলবার ডিএসইতে ৩৯৬ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩৯টির বা প্রায় ৮৬ শতাংশের দরই কমেছে। বেড়েছে মাত্র ২৯টির।

লেনদেনের শেষাংশে এসে অন্তত দেড়শ কোম্পানির শেয়ার ক্রেতাশূন্য হয়েছে বা সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হয়েছে। লেনদেনের মাঝের তথ্য বিবেচনায় নিলে এ সংখ্যা আড়াইশর বেশি।

এই পতনে দেশের শেয়ারবাজারের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮১ পয়েন্ট হারিয়ে নেমেছে ৫ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টে। সূচক পতনের হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। চলতি বছরে একদিনে সূচকের পতনে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল একদিনে ৮৫ পয়েন্ট পতন ছিল এ বছরের সর্বোচ্চ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৪ পয়েন্ট পতন হয় গত ১৯ মার্চ। এ নিয়ে সর্বশেষ ছয় কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচ দিনের দর পতনে সূচক হারাল ১৪১ পয়েন্ট।

চট্টগ্রামের বাজারেও লেনদেন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। এ বাজারে মঙ্গলবার দিন শেষে লেনদেন নেমে আসে ১৫ কোটি টাকায়, যা আগের দিনের চেয়ে ৯৪ কোটি টাকা বা ৮৬ শতাংশ কম।

পুঁজিবাজারে চাঙাভাব পরবর্তী

পুঁজিবাজারে চাঙাভাব

কমেন্ট