আবার সেই মন্দাভাব পুঁজিবাজারে
সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৮ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা ১ শতাংশের বেশি কমে ৫ হাজার ৫২৭ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
ফের সেই দরপতনের ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে। লেনদেন শুরু হলেই পড়ছে সূচক। লেনদেনও কমছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৮ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা ১ শতাংশের বেশি কমে ৫ হাজার ৫২৭ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
আগের দিন মঙ্গলবার এই বাজারে ডিএসইএক্স দেড় শতাংশ বা ৮১ পয়েন্ট কমে। আর তাতে এই সূচকটি ৮ কার্যদিবস পর আবারও ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্টের নিচে নেমে আসে।
সূচকের বড় পতন হয়েছে চট্টগ্রামের বাজারেও। বুধবার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০৪ দশমিক৫৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে ১৬ হাজার ৬০ দশমিক ২২ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
সূচকের পাশাপাশি দুই বাজারে লেনদেনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। গত ২৮ এপ্রিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের পুনঃনিয়োগের দিনে সূচকের বড় উত্থান হয়েছে বাজারে।
ওই দিন ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ১০০ পয়েন্টের মতো বেড়েছিল। ওমন উত্থান অনেক দিন দেখা যায়নি। অপর বাজার সিএসই’র সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছিল প্রায় ২০০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে দিয়েছিল।
পরের দিন অর্থাৎ ২৯ এপ্রিল দুই বাজারেই সূচক পড়ে যায়। ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৬ দশমিক ১৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৬৯ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে নামে। অপর বাজার সিএসই’র সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬১ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৯৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এর পর কয়েক দিন অবশ্য সূচক অল্প অল্প করে খানিকটা বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে দিয়েছিল।
তবে চলতি সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই দুই বাজারে সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে।
শেয়ারবাজারে বর্তমানে এক দিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারে না। বাজারের পতন ঠেকাতে গত ২৫ এপ্রিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দরপতনের এ সীমা আরোপ করে।
সেই হিসাবে তালিকাভুক্ত সব শেয়ারের দাম কমলে সূচকও এক দিনে ৩ শতাংশের মতো কমতে পারবে।
দিনের শুরুতে বাজারে পতন শুরু হলে অনেক শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ কমে যায়। ৩ শতাংশ দাম কমে যাওয়ার পর অনেক শেয়ারের ক্রেতাও ছিল না। ফলে এদিন সূচকটি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
বুধবারের বাজার পরিস্থিতি
ঢাকার বাজারে সবশেষ ডিএসইএক্স সূচকটি ৩০ এপ্রিল সর্বনিম্ন ৫ হাজার ৫৮৪ পয়েন্টের অবস্থানে ছিল। এরপর তা বেড়ে ৬ মে ৫ হাজার ৭২৭ পয়েন্টে উঠেছিল। গত কয়েক দিনের পতনে তা কমে আবার ৫ হাজার ৫২৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে। ঢাকার বাজারে বুধবার দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫২৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। যা আগের দিনের চেয়ে ১৩৮ কোটি টাকা কম। মঙ্গলবার এই বাজারে ৬৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
বুধবার সিএসইতে ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
লেনদেন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যখনই বাজারে পতন শুরু হয়, তখন বেশির ভাগ শেয়ারের ক্রেতা থাকে না। ফলে এসব শেয়ারের খুব বেশি লেনদেন হয় না। এ কারণে বাজারের সার্বিক লেনদেনেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
বুধবার ডিএসইতে মোট ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৬১টি কোম্পানির, বিপরীতে ৩০১ কোম্পানির দর কমেছে। পাশাপাশি ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরেক বাজার সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৩৪টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ১৭৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির দর।
কমেন্ট