মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির কম, পাতে পড়ছে টান

মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির কম, পাতে পড়ছে টান

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মজুরি বৃদ্ধির বাড়তি টাকা দিয়ে দিনমজুর-শ্রমিকদের সংসারই চলছে না: সঞ্চয় করা বা জীবনযাত্রার বাড়তি চাহিদা মেটানো তো দূরে থাক। প্রতীকী ছবি

সাখাওয়াত হোসেন। রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় একটি সেলুনে নরসুন্দরের কাজ করেন পাঁচ বছর ধরে। প্রতিদিনের মজুরি এবং বকশিশ মিলিয়ে মাসে ২০ হাজার টাকার মতো উপার্জন করেন। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে মোটামুটি চলে যেত। সামান্য কিছু হলেও সঞ্চয় করতেন। বাজারের আগুনে এখন আর সংসার চলে না। প্রতি মাসেই ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হয়।

৩৫ বছর বয়সী সাখাওয়াত তার কষ্টের কথা এআরএইচ ডট নিউজকে বললেন এভাবে, ‘খুব কষ্ট হচ্ছে স্যার এখন। আর চলছে না। হিসাব মিলাতে পারি না। এক কেজি আলু কিনতেই ৬০ টাকা লাগে। বাজারে সব কিছুর দামই অনেক বেশি। খুব কষ্ট হচ্ছে সংসার চালাতে।”

সাখাওয়াত মতো দেশের সব দিনমজুর-শ্রমিক, এমনকি নিম্মমধ্যবিত্ত-মধ্যবিত্তরাও এখন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। সঞ্চয় করা বা জীবনযাত্রার বাড়তি চাহিদা মেটানো তো দূরে থাক, জীবন চালানোই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবও তাই বলছে। দেশে মূল্যস্ফীতি ও মজুরি সূচকের তথ্য হিসাব করে বিবিএস। সংস্থাটি মাঠপর্যায় থেকে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দাম সংগ্রহ করে। সেই দামের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হিসাব কষে তা প্রকাশ করা হয়।

একইভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত দিনমজুর-শ্রমিকদের মজুরি বা বেতন-ভাতা নিয়ে মজুরির হার প্রকাশ করে থাকে।

গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। ১৫ মাস ধরে ৯ শতাংশের উপরে অবস্থান করছে। এখন তা ১০ শতাংশ ছুঁইছুঁই করছে। দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সূচক এখন মূল্যস্ফীতি।

কিন্তু মজুরি সেই হারে বাড়ছে না; মজুরি বৃদ্ধির হার এখন ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর গত কয়েক বছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২১ সেপ্টেম্বরে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর ওই মাসে মজুরি সূচক ছিল ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। অর্থাৎ ওই সময় জাতীয় পর্যায়ে মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি ছিল।

এর পর থেকে উল্টোপথে চলছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই দুই সূচক। অর্থাৎ এই আড়াই বছর ধরে মজুরি সূচকের চেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি।

সবশেষ গত মে মাসের মূল্যস্ফীতি ও মজুরি সূচকের তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস। তাতে দেখা যায়, মে মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ; খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১০ শতাংশের বেশি, ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর মে মাসে মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

আগের মাস এপ্রিলে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ; খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। ওই মাসে মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ; মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

এভাবেই আড়াই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি মজুরি বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি হয়ে চিরায়ত প্রবণতায় ছেদ পড়েছে।

সাধারণত মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি থাকে। মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার বেশি হলে কারও কাছে হাত পাততে হয় না। নিজেদের ক্রয়ক্ষমতা দিয়েই বাজার থেকে বেশি দামে পণ্য কেনা যায়।

আর যদি মূল্যস্ফীতি মজুরি বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে হয় মানুষ ধার-কর্য করে সংসার চালায়: নাহয় প্রয়োজনীয় কেনাকাটা কমিয়ে দেয়। অর্থাৎ বাধ্য হয়ে মানুষকে কম খেতে হয়।

মে মাসে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো—২০২৩ সালের মে মাসে দেশের মানুষ যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পেয়েছিল, বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ওই একই দ্রব্য কিনতে বা সেবা পেতে এই বছরের মে মাসে ১০৯ টাকা ৮৯ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। বাড়াতি ৯ টাকা ৮৯ পয়সা হলো মূল্যস্ফীতি। গত মে মাসের মূল্যস্ফীতির হার ছিল এটাই।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, বেশ কিছুদিন ধরে মজুরি সূচকও অল্প করে করে বাড়ছে। মজুরি বেশি বৃদ্ধি পেলে মূল্যস্ফীতির আঁচ টের পায় না মানুষ। সমান হলে দুশ্চিন্তা বাড়ে। আর কম হলে সংসার চলে না। দুর্ভোগে পড়তে হয়; ধার-দেনা করে চলতে হয়।

মে মাসে মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এর মানে ২০২৩ সালের মে মাসে দেশের দিনমজুর-শ্রমিকরা ১০০ টাকা মজুরি পেলে, ২০২৪ সালের মে মাসে পেয়েছেন ১০৭ টাকা ৮৮ পয়সা। ৭ টাকা ৮৮ পয়সা হলো মজুরি বৃদ্ধি।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর এই তথ্যই বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মজুরি বৃদ্ধির বাড়তি টাকা দিয়ে দিনমজুর-শ্রমিকদের সংসারই চলছে না: সঞ্চয় করা বা জীবনযাত্রার বাড়তি চাহিদা মেটানো তো দূরে থাক।

এদিকে সরকারি সংস্থা বিবিএসের মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তোলেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মন্তব্য—বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম, তাতে পরিসংখ্যান ব্যুরোর মূল্যস্ফীতির তথ্যে তার বাস্তব প্রতিফলন হয় না।

সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক জরিপে সেই প্রশ্নের প্রমান মিলেছে।

তবে গত ৯ মে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ে চালঞ্চ্যকর তথ্য দিয়েছে বিআইডিএস। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বর্তমানে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ। বিআইডিএসের একটি জরিপের তথ্য প্রকাশ অনুষ্ঠানে মহাপরিচালক বিনায়ক সেন এ কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বাড়তি এ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ অসুবিধায় রয়েছে।

বিনায়ক সেন বলেন, “সম্প্রতি বিআইডিএসের পক্ষ থেকে দেশের সব জেলা থেকে তথ্য নিয়েছি। এরপর একটি পদ্ধতিতে মূল্যস্ফীতি হিসাব করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৫ শতাংশ।”

মজুরি বৃদ্ধির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি প্রসঙ্গে অর্থনীতির গবেষক সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, বিবিএসের হিসাবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে মজুরি সূচকও বাড়ছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হারে বাড়ছে। এটাই উদ্বেগের বিষয়। মূল্যস্ফীতি প্রকৃত মজুরির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে।

“কারণ, কোভিডের কারণে অনেকে কাজ হারিয়েছেন, কাজ ফেরত পেলেও আয় আগের মতো নয়। অনেকের বেতন কমে গিয়েছিল; সেটা আর বাড়েনি। বিবিএস মজুরির হিসাব যেভাবে করে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তবে বিবিএসের এই হিসাবের মধ্যেও মূল্যস্ফীতি ও মজুরি পরিস্থিতির একটি মোটামুটি চিত্র উঠে এসেছে। এই তথ্যই বলছে, মানুষ যা আয় করছে তা দিয়ে তার সংসার চলছে না।”

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, প্রায় এক বছর ধরে মজুরি সূচক অল্প অল্প করে বাড়ছে। গত বছরের অক্টোবরে এই হার ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। নভেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ডিসেম্বরে তা বেড়ে হয় ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা আরও খানিকটা বেড়ে ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশে ওঠে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে এই হার বেড়ে হয় যথাক্রমে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ ও ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ।

এপ্রিলে মজুরি সূচক আরও খানিকটা বেড়ে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশে ওঠে। সর্বশেষ মে মাসে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশে উঠেছে।

রংপুরে মজুরি বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি

এদিকে মজুরি সূচক নিয়ে বিস্ময়কর তথ্য দিয়েছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। ব্যুরোর তথ্য বলছে, মে মাসে একসময়ের মঙ্গাকবলিত উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের শ্রমিক-দিনমজুরদের মজুরি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ৮ দশমিক ২২ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম বেড়েছে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স আসে যে বিভাগে সেই সিলেট বিভাগে; ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

বেশ কিছুদিন ধরেই এই প্রবণাতা দেখা যাচ্ছে বিবিএসের তথ্যে।

অর্থাৎ ২০২৩ সালের মে মাসে রংপুর বিভাগের শ্রমিক ও দিনমজুররা গড়ে ১০০ টাকা মজুরি পেলে ২০২৪ সালের মে মাসে পেয়েছেন ১০৮ টাকা ২২ পয়সা। আর সিলেটের শ্রমিক ও দিনমজুররা ২০২৩ সালের মে মাসে ১০০ টাকা মজুরি পেলে এই বছরের মে মাসে পেয়েছেন ১০৬ টাকা ৫৩ পয়সা।

এ প্রসঙ্গে সেলিম রায়হান বলেন, “ঢাকার চেয়ে রংপুরের শ্রমিক-দিনমজুরদের মজুরি বেশি বাড়ছে, এটা কীভাবে সম্ভব? বিবিএসের গবেষণা পদ্ধতিতেই গোলমাল আছে। প্রথম কথা হচ্ছে, দুই বছরের করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাওয়া অর্থনীতিতে কোনো শ্রমিক-দিনমজুরেরই মজুরি বাড়ার কথা নয়; তারপর আবার রংপুর বিভাগের দিনমজুর-শ্রমিকদের মজুরি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এটা কিভাবে সম্ভব নয়?”

“কিসের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান ব্যুরো এই তথ্য পেয়েছে আমার কাছে বোধগম্য নয়। এ তথ্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, কেউ বিশ্বাস করবে না। এটা অবিশ্বাস্য তথ্য,” বলেন সেলিম রায়হান।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের কর্মসংস্থানের বড় অংশই হচ্ছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। মোট শ্রমশক্তির ৮৫ দশমিক ১ শতাংশই এ খাতে নিয়োজিত। আর ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে।

অন্যদিকে কৃষি ক্ষেত্রে নিয়োজিত মোট শ্রমশক্তির ৯৫ দশমিক ৪ শতাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। শিল্প খাতের ৮৯ দশমিক ৯ শতাংশ, সেবা খাতের ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত।

বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মে মাসে ঢাকা বিভাগে মজুরি বেড়েছে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। চট্টগ্রামে বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। রাজশাহীতে বেড়েছে ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।

এ ছাড়া বরিশালে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং খুলনা বিভাগে মজুরি সূচকের হার ছিল ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

১৫ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি

গত বছরের মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ শতাংশে ওঠে। এরপর তা আর কোনো মাসেই ৯ শতাংশের নিচে নামেনি। অর্থাৎ ১৫ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে অবস্থান করছে।

গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে ওঠেছিল। খাদ্য মূল্যস্ফীতি এক লাফে বেড়ে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে উঠেছিল।

পরের মাস সেপ্টেম্বরে অবশ্য সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশে নেমে আসে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি নেমে আসে ১২ দশমিক ৩৫ শতাংশে।

অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে ওঠে; খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

গড় মূল্যস্ফীতি ৯.৭৩ শতাংশ

১২ মাসের গড় হিসাবে (২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের মে) দেশে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

গত অর্থবছরের একই সময়ে (২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৩ সালের মে) গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

৯ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ গড় মূল্যস্ফীতি নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছর (২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন) শেষ হয়েছিল।

তার আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। কিন্তু অর্থবছর শেষে দেখা যায়, বাজেটের লক্ষ্যের চেয়ে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি মূল্যস্ফীতি নিয়ে অর্থবছর শেষ হয়।

২০১০-১১ অর্থবছরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর পর তা দুই অঙ্কের (ডাবল ডিজিট) নিচে নেমে আসে। ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত এই সূচক ৯ শতাংশের ওপরে ওঠেনি।

এবার লক্ষ্য ৬ শতাংশে আটকে রাখা

গত ৬ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন, তাতে গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ধরেছেন।

বাজেট ঘোষণার পর থেকেই দেশের সব অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থাগুলো বলে আসছে বাজারের যে অবস্থা তাতে সরকারের এই আশা কখনই পূরণ হবে না। ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছিলেন।

ওই বাজেট ঘোষণার পরও অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থাগুলো বলে আসছিল মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

অর্থবছর শেষে অর্থনীতিবিদদের সেই আশঙ্কা ঠিক হতে দেখা যাচ্ছে।

এবারের বাজেটেও আইএমএফের শর্ত পূরণের চাপ পরবর্তী

এবারের বাজেটেও আইএমএফের শর্ত পূরণের চাপ

কমেন্ট