এফবিসিসিআই: ভোট পুনর্গণনার আবেদন প্রত্যাহার তিন প্রার্থীর
ফলে নির্বাচনের ফল ঘোষণা নিয়ে নতুন করে যে জটিলতার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা কেটে গেছে।
দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পর্ষদের ২৩টি পরিচালক পদের নির্বাচনের ভোট পুনর্গণনার জন্য করা আপিল আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিন পরিচালক প্রার্থী।
ফলে নির্বাচনের ফল ঘোষণা নিয়ে নতুন করে যে জটিলতার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা কেটে গেছে।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত সোমবার এফবিসিসিআই পর্ষদের ওই নির্বাচনে চমক দেখায় সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। যে ২৩টি পদে নির্বাচন হয়েছে, এই প্যানেল তার মধ্যে ১৫টিতে জয়ী হয়। অন্যদিকে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ জয়ী হয় ৮টি পদে।
তবে গত বৃহস্পতিবার ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ এনে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন আপিল বোর্ডে ভোট পুনরায় গণনার জন্য আপিল করেন তিনজন পরাজিত প্রার্থী। তারা হলেন বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মোস্তফা আল মাহমুদ, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রস্তুতকারক সমিতির প্রতিনিধি মাহবুব হাফিজ এবং বাংলাদেশ মিষ্টি উৎপাদক সমিতির প্রতিনিধি মারুফ আহমেদ।
এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন বোর্ডের ফলাফল অনুযায়ী, ভোট পুনর্গনণার আপিল করা মোস্তফা আল মাহমুদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৮০৫। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ৪৯ প্রার্থীর মধ্যে তার অবস্থান ২৪তম। মোস্তফা আল মাহমুদের চেয়ে মাত্র ৮ ভোট পেয়ে ২৩তম পরিচালক পদে বিজয়ী হয়েছেন ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের প্রার্থী হারুনুর রশীদ (হাফেজ হারুন)। তিনি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধি হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন।
অন্যদিকে ভোট পুনর্গণনার আপিল করা মাহবুব হাফিজের প্রাপ্ত ভোট ৭৯৯ এবং মারুফ আহমেদ ভোট পেয়েছেন ৭৭৫। তালিকায় তাদের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ২৫ ও ২৬তম।
আপিল আবেদনে মোস্তফা আল মাহমুদ সোমবারের ভোটে ১৬তম বিজয়ী শমী কায়সার, ২৩তম বিজয়ী হারুনুর রশীদ (হাফেজ হারুন) এবং ২৪তম অবস্থানে থাকা (আপিল আবেদনকারী) প্রার্থীর ভোট পুনর্গণনার দাবি করেন।
অন্যদিকে ভোট পুনর্গণনার জন্য আপিল করা অপর দুই প্রার্থী মাহবুব হাফিজ ও মারুফ আহমেদ অভিযোগ করেন, গভীর রাতে ভোট গণনার সময় সুকৌশলে কয়েকটি টেবিলে তাদের নামে ভোটের জায়গায় অন্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। ন্যায়বিচারের স্বার্থে ভোট পুনর্গণনা জরুরি।
শনিবার পরাজিত তিন প্রার্থী ভোট পুনর্গণনার আপিল আবেদন প্রত্যাহার করেন। রোববার বিষয়টি এআরএইচ ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, “নির্বাচনে আমাদের প্যানেল খুবই ভালো করেছে। ভোট পুনর্গণনার পথে গেলে কাদা–ছোড়াছুড়ি হবে। অনেকের সঙ্গে শত্রুতা তৈরি হবে। তাতে এফবিসিসিআইয়ের ক্ষতিটা বেশি হবে। এসব কারণেই আমাদের তিন প্রার্থী ভোট পুনর্গণনার আবেদন প্রত্যাহার করেছেন।”
আপিল বোর্ডের সচিব জামিল মিল্টন জানান, তিন প্রার্থীর ভোট পুনর্গণনার প্রত্যাহারের আবেদন তারা পেয়েছেন। ফলে বিষয়টি এখানেই শেষ হচ্ছে। এখন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশে আর বাধা থাকল না।
তিন প্রার্থীর ভোট পুনর্গণনার আবেদনের আগের দিনই এফবিসিসিআইয়ের মূল নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়। ভোটের লড়াইয়ে চমক দেখালেও শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনে ‘সমঝোতায়’ বশ মানে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। এ কারণে ফেডারেশনের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ থেকেই।
গত বুধবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাহবুবুল আলম এফবিসিসিআইয়ের নতুন সভাপতি, আমিন হেলালী জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এবং খায়রুল হুদা, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, যশোদা জীবন দেবনাথ, শমী কায়সার, রাশেদুল হোসেন চৌধুরী ও মুনির হোসেন—এই ছয়জন সহসভাপতি নির্বাচিত হন।
কমেন্ট