সবজির দামে ফের আগুন, কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা ছুঁইছুঁই

সবজির দামে ফের আগুন, কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা ছুঁইছুঁই

ফাইল ছবি

সবজির দাম ফের চড়ছে। মাছ-মাংসের দাম তো আগে থেকেই চড়া। ৮০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। ঈদকে সামনে রেখে বেড়েছে টমেটো-শশার দাম। কাঁচামরিচের কেজি প্রায় ৩০০ টাকায় উঠেছে।

আর এতে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের। কিছু মানুষ বাজারে এসে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করলেও বেশিরভাগ ক্রেতা কষ্ট ভেতরে চেপে মুখ বন্ধ করে বাজার করছেন আর পকেট থেকে বাড়তি টাকা চলে যাচ্ছে।

গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে শাক-সবজির দাম খানিকা কমে এসেছিল। কিছু সবজি ৫০ টাকা কেজিতেও পাওয়া যেতো। কিন্তু গত সপ্তাহে ফের বাড়তে শুরু করে সব ধরনের সবজির দাম। চলতি সপ্তাহে তা আরও বেড়েছে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার, হাতিরপুল ও শেওড়াপাড়া বাজার ঘুরে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার ঘুঁরে দেখা যায়, কাঁচা পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বরবটি ৮০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০, ঝিঙা ৮০ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ধন্দুল ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচামরিচ প্রতি কেজি মানভেদে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ থেকে ৮০ টাকা, গুঁড়ি কচু প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, দেশি আলু (লাল) প্রতি কেজি ৬০ টাকা, সাদাটা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা এবং শশা ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাংস। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা, ব্রয়লার প্রতি কেজি ২০০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা এবং লাল লেয়ার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।

বাজারে কয়েক মাস ধরে সব ধরনের মাছের দাম বেশি। শেওড়াপাড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা দুর্জয় এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “মাছের খাবারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। এছাড়া শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মাছের চাহিদা থাকায়ও দাম কিছুটা বেশি।”

শুক্রবার শেওড়াপাড়া বাজারে পাঙাশ মাছ সাইজ ভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, চাষ করা পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ছোট গুড়া মাছ (কাচকি) ৪০০ টাকা, কই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বড় চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, ট্যাংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, সিলভার কার্ভ (ছোট) প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রায় সব মাছই এখন চাষ করা; নদী বা হাওড়ের মাছ খুব কম পাওয়া যায়। ‍কিছু মাছ পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি।

মাছ বিক্রেতা দুর্জয় বলেন, “আমরা নদী ও হাওড়ের মাছও বিক্রি করি। প্রতি কেজি পাবদা বিক্রি করি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। রুই মাছ বিক্রি করি ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি দরে।”

দেড়-দুই মাস ধরে বাজারে সবচেয়ে আলোচিত পণ্য পেঁয়াজ। এই পণ্যটি গত দুই সপ্তাহ ধরে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি শুরু হওয়ার পর পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বগতি থামলেও দাম কমছে না। আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে এই পেঁয়াজের মান ভালেঅ না হওয়ায় ক্রেতারা খুব একটা কিনছেন না।

একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন আসাদুজ্জামান মুকুল। ছুটির দিনে মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারে সপ্তাহের বাজার করতে এসেছেন।

জিনিসপত্রের দাম কেমন-প্রশ্ন করতেই তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে মুকুল উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, “নিজে বাজার করেন না! কিনতে গিয়ে দেখেন না কেমন দাম। সব জিনিসের দামই বেশি। এভাবে আর কতোদিন…।” আর কোনো কথা না বলে হাটা দিলেন তিনি।

শেওড়াপাড়া বাজারে সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছেন সাখাওয়াত হোসেন। সঙ্গে কাজের ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। বাজারের থলে নিয়ে পিছু পিছু হাটছেন।

বাজারে জিনিসপত্রের দাম কেমন জিঙ্গেস করলে সাখাওয়াত মৃদু হেসে বলেন, “কী আর বলবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও তো বলছেন জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় আমাদের কষ্ট হচ্ছে। সত্যিই কষ্ট হচ্ছে। বাজার করতে আসলেই বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”

“আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের চলা সবচেয়ে কঠিন এখন। আমরা টিসিবির লাইনেও দাঁড়াতে পারি না! আবার বাজারে গেলেই বাড়তি খরচ। কোনো পণ্যের দাম কমার তো কোনো লক্ষণ দেখি না।

তবে চিনিকলমালিকরা বৃহস্পতিবার থেকে চিনির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও সরকার সায় না দেওয়ায় শুক্রবার আগের দামেই বাজারে চিনি বিক্রি হয়েছে।

শেওড়াপাড়া বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

 

রাইস ব্র্যান অয়েলও বিক্রি করবে টিসিবি

পরবর্তী

রাইস ব্র্যান অয়েলও বিক্রি করবে টিসিবি

কমেন্ট