পাঁচ লাখ গাছ লাগাবে বিজিএমইএ
সোমবার ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। ছবি: এআরএইচ ডটকম
রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ এবং আশপাশের এলাকায় চলতি বছর পাঁচ লাখ গাছ লাগাবে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।
সোমবার ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
ফারুক হাসান বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করতে পরিবেশ সুরক্ষায় বিজিএমইএ বিভিন্ন সময়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। আগামী বছরও দেশব্যাপী আরও পাঁচ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি বলেন, “সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি উদ্যোগী হতে হবে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। গাছ লাগানোর এখনই (জুলাই-আগস্ট) উপযুক্ত সময়।”
অন্য সংগঠনগুলোকে এ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান তিনি।
ফারুক হাসান বলেন, “ছোট-বড় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রেললাইন ও সড়কের পাশে, সরকারি ও বেসরকারি অফিস, রাস্তার দুই পাশে পতিত জমিতে কিংবা উপকূলীয় এলাকায় ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছ লাগানোর ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে।”
“আমরা প্রত্যেকে হয়ে উঠি বৃক্ষপ্রেমিক। কর্মস্থলে-বাসস্থানে, আঙিনা, ছাদ, সড়কসহ অফিস-আদালতের যেখানে পরিত্যক্ত জায়গা আছে, সেখানেই আমরা গাছ লাগাই। বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলি।”
বিজিএমই সভাপতি বলেন, “আমরা সবাই উন্নয়নের কথা বলছি। যেকোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিবেশকে গুরুত্ব দিতে হবে সবার আগে। কেননা, প্রাকৃতিক পরিবেশকে উপেক্ষা করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের অবদান বিশাল।”
“বাংলাদেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ বনভূমি রয়েছে, যদিও সরকারি হিসেবে বনভূমির পরিমাণ প্রায় ১৭ শতাংশ বলা হয়ে থাকে। তাই পরিবেশ রক্ষায় বনভূমির পরিমাণ বাড়াতে হবে। বৃক্ষরোপণের বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে সবার মধ্যে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিশেষ বিশেষ দিনগুলোকে উপলক্ষ্য করে, যেমন– নিজের জন্মদিনে, সন্তানের জন্মদিনে, সন্তানের প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিনে, বিবাহবার্ষিকীতে, বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামে, পরিবারের প্রত্যেক সদস্যদের নামে গাছ লাগাতে পারি।”
“রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগীয় এলাকায় অনেকের ইচ্ছা থাকলেও জায়গার অভাবে গাছ লাগাতে পারেন না। এক্ষেত্রে ‘ছাদবাগান’ কর্মসূচির মাধ্যমে গাছ লাগানো যেতে পারে। তাছাড়া ঢাকা শহরের ছাদবাগান করলে হোল্ডিং ট্যাক্সও ছাড় পাওয়ার (১০ শতাংশ) ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে এবং দুই কোটি মানুষের প্রাণভরে নিশ্বাস নেওয়ার জন্য নগরীর বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় গাছ লাগাতে হবে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “গাছ আমাদের নানা উপকারে আসে। গাছ যেমন মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে, তেমনি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কার্বন শোষণের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।”
তিনি শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে বৃক্ষরোপনের জন্য সকলকে আহ্বান জানান। গাছ লাগানোর পাশাপাশি তিনি গাছকে পরিচর্যা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন।
বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর মতো একটি সময়পুযোগী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি বিজিএমইএকে ধন্যবাদ জানান।
কমেন্ট