ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় আলাদা মন্ত্রণালয় চায় ক্যাব

ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় আলাদা মন্ত্রণালয় চায় ক্যাব

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম। ছবি: এআরএইচ ডটকম

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষায় বেশি তৎপর অভিযোগ করে ভোক্তাদের আধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশ-ক্যাব ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়েছে। 

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।

ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে পরিচালিত হয় এবং সেখানে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বার্থ সংঘাতযুক্ত, তারা অসাধু ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসা হবে প্রতিযোগিতাপূর্ণ; কিন্তু সেখানে ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে মন্ত্রণালয় ব্যর্থ।

“আমরা ভোক্তাদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় চাই, যে মন্ত্রণালয় অন্য কোনো মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রভাবিত হবে না।” 

ব্যাংকের সুদহারে জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে সরকার মূল্যস্ফীতি উসকে দিতে সহায়তা করেছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। 

শামসুল আলম বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। সেখানে সুদহার কত নির্ধারিত হবে সেটা নাকি মন্ত্রণালয় ঠিক করে দেয়। মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে পরামর্শ দেয়। অন্যদিকে সুদহারের নয়-ছয় অবস্থায় সাধারণ ভোক্তাদের অবস্থাও নয়-ছয় হয়ে গেছে। 

“দশ ভাগ মানুষের সুবিধার জন্য ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষের দুর্দশা শুরু হয়েছে। সাড়ে তিন কোটি অতিদরিদ্র, হতদরিদ্র মানুষের জীবন দুর্বিষহ অবস্থা। যেখানে প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিচ্ছেন, সেখানে মন্ত্রীরা বলছেন সব ঠিক আছে। যেসব মন্ত্রীরা নয়-ছয়ের সুবিধাভোগী, তাদের জন্য পরিস্থিতি ঠিক আছে।” 

ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, গণমাধ্যমে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এবং তাদের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতাকে মূল্যবৃদ্ধির জন্য দোষারোপ করছে। এ অভিযোগের কিছুটা ভিত্তি থাকলেও, পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা নয়। 

“জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার তদারকি এবং অভিযান পরিচালনা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, উৎপাদক, পরিশোধনকারী, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা, দেন-দরবারের মাধ্যমে কিছু পণ্যের মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে সফলতা লাভ করেছে। তবে সার্বিক মূল্যস্ফীতির লাগাম টানায় তা কোনো অবদান রাখছে বলে মনে হয় না।” 

তিনি বলেন, “অর্থনীতিবিদদের অনেকে মনে করেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক, বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মাত্রাতিরিক্ত ঋণ গ্রহণের ফলে মুদ্রা সরবরাহ বেড়েছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে উসকে দিয়েছে। 

“চাহিদা সরবরাহের ফারাক, আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য অথবা মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি, কোনো ব্যাখ্যাই সাধারণ মানুষের নিকট প্রাসঙ্গিক নয়। তারা মূল্যবৃদ্ধিতে কষ্টে আছে। তাদের জীবনমানের অবক্ষয় হচ্ছে। তারা মনে করে, সরকারের ব্যর্থতার কারণে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে।” 

বাংলাদেশে সরকারি হিসাবে প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি মূল্যস্ফীতি হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে মূল্যস্ফীতি কমে আসছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। 

ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক ও ক্যাব ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম শামস এ খান সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। 

গ্রামের উন্নয়নে অতিরিক্ত ১৯ কোটি ডলার দেবে এডিবি পরবর্তী

গ্রামের উন্নয়নে অতিরিক্ত ১৯ কোটি ডলার দেবে এডিবি

কমেন্ট