এফবিসিসিআই নির্বাচন: খেলাপি হওয়ায় ৩২ জনের মনোনয়ন বাতিল
করখেলাপি হওয়ার কারণে দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদের মনোনীত পরিচালক হতে পারছেন না দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদার।
তিনি অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হিসেবে মনোনীত পরিচালক হওয়ার জন্য বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তা পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন।
শুধু নজরুল ইসলাম মজুমদার নন, ঋণ ও করখেলাপি হওয়া এবং অন্যান্য কারণে মোট ৩৪ জন ব্যবসায়ীর মনোনয়ন বাতিল কিংবা স্থগিত করেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনী বোর্ড। বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচনী বোর্ড।
এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান এ মতিন চৌধুরী এবং সদস্য কে এম এন মনজুরুল হক ও শামসুল আলম স্বাক্ষরিত যে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে, তাতে মোট ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই কর ও ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন নির্বাচনী বোর্ডের তালিকায়। এই ৩৪ জনের মধ্যে ৩২ জনের মনোনয়নই বাতিল করা হয়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনী বোর্ড মঙ্গলবার ২০২৩-২৫ সালে ফেডারেশনের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের জন্য ১০৫ বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে।
অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে যারা নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন শফিকুল ইসলাম ভরসা। নির্বাচন বোর্ড বলেছে, তিনি একই সঙ্গে ঋণ ও করখেলাপি। ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে খোরশেদ আলম, সাহাব উদ্দিন, খন্দকার রুহুল আমিনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
এ ছাড়া করখেলাপি হওয়ার কারণে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে সৈয়দ সাদাত আলমাস কবিরের। একই কারণে বাতিল হয়েছে মো. মনসুর, নিজাউদ্দিন রাজেশ, হাজি মো. আবুল হাশেম, সিরাজুল ইসলাম, রাকিবুল আলম, সালমা হোসেন, জাকির হোসেন ও তাহের আহমেদ সিদ্দিকীর মনোনয়ন।
এ ছাড়া স্বাক্ষর না মেলার কারণে ফজলে শাহিন এহসানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। মৌসুমি ইসলাম ও আনোয়ার হোসেনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে ভোটার নম্বরে কাটাকাটি থাকার কারণে।
এরা সবাই অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন।
এ ছাড়া অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হিসেবে মনোনীত হওয়ার জন্য যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ মোট ছয়জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এদের মধ্যে আবুল হোসেনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে, কারণ নির্বাচনী বোর্ডের কাছে তিনি একই সঙ্গে ঋণ ও করখেলাপি।
ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে বাতিল হয়েছে কে এম আখতারুজ্জামানের মনোনয়ন। এ ছাড়া শুধু করখেলাপি হওয়ার কারণে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে আবুল বাশার, খন্দকার এনায়েতউল্লাহ ও হাবিব উল্লাহ ডনের মনোনয়ন।
অন্যদিকে চেম্বার গ্রুপ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে মোট ছয় জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এদের মধ্যে ঋণখেলাপি হওয়ার অভিযোগে বাতিল হয়েছে আলি হোসেন, মোহাম্মাদ রিয়াদ আলি ও ফয়েজুর রহমান ভূঁইয়ার মনোনয়ন। তাদের মধ্যে রিয়াদ আলি একই সঙ্গে করখেলাপিও বলে জানিয়েছে নির্বাচনী বোর্ড।
করখেলাপি হওয়ার কারণ দেখিয়ে চেম্বার গ্রুপ থেকে বাতিল করা হয়েছে হাসিনা নেওয়াজ, শাহ জালাল ও মোহাব্বত উল্লাহর মনোনয়ন।
এ ছাড়া চেম্বার গ্রুপ থেকে যারা পরিচালক মনোনীত হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন, তাদেরর মধ্যে চার জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এদের মধ্যে ঋণখেলাপি হওয়ার অভিযোগে নিজাম উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া করখেলাপি হওয়ার জন্য যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তারা হলেন আবুল কাশেম খান, সামিউল হক সাফা ও সুজিব রঞ্জন দাস।
এ ছাড়া অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে আবদুল হক ও এনায়েত উল্লাহ সিদ্দিকীর মনোনয়ন আপাতত স্থগিত আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রত্যয়ন পাওয়ার পর তাদেরর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
তবে প্রার্থিতা ফিরে পেতে সবাই নির্বাচনী বোর্ডের কাছে আবেদন করতে পারবেন। বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে গণ্য হবে।
৩১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এফবিসিসিআইয়ের ২৩ পরিচালক পদে ভোট হবে।
কমেন্ট