‘স্মার্ট বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সম্মেলন’ শনিবার, বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য ব্যবসায়ী সম্মেলন নিয়ে বিস্তারিত জানাতে শুক্রবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। ছবি: এফবিসিসিআইয়ের সৌজন্যে
স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে বেসরকারি খাতের অবদান ও বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে করণীয় বিষয়ে ব্যবসায়ী সম্মেলন আয়োজন করছে দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সম্মেলনে বেসরকারি খাতের গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সমস্যার কথাগুলোও প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হবে।”
জসিম উদ্দিন বলেন, “কিছুদিন আগে সারা বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বিজনেস সামিট হয়। সেখানে প্লেনারি সেশনগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। ওই আলোচনার উপর ভিত্তি করে আমরা একটি বই ছাপিয়েছি, যেটি অনুষ্ঠানের সব ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
“বাংলাদেশের চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত ব্যবসায়ীরা এই সম্মেলনে আমন্ত্রিত থাকবেন। পাশাপাশি বড় বড় কোম্পানির সিইও ও প্রখ্যাত ব্যবসায়ীরাও আমন্ত্রিত থাকবেন।”
গত দুটি জাতীয় নির্বাচনের আগে ব্যবসায়ী সম্মেলন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে আকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।
এবারে সম্মেলন থেকে এমন কোনো ঘোষণা আসবে কিনা, জানতে চাইলে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, “সম্মেলনে অনেকেই বক্তব্য রাখবেন। সেখানে কেউ নিজস্ব বক্তৃতায় এ ধরনের সমর্থন জানালে জানাতে পারে। তবে আমাদের সম্মেলন কী নিয়ে, সেটা আমরা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করেছি।”
জসিম উদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় শুরু থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বেসরকারি খাত। বর্তমানে দেশের ৮২ শতাংশ ব্যবসা–বাণিজ্য সংগঠিত হয় বেসরকারি খাত থেকে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বর্তমানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের অর্থনীতি কঠিন সময় অতিক্রম করছে। এ পরিস্থিতিতে সরকার ও বেসরকারি খাত একসঙ্গে কাজ করছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসরকারি খাত কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে, সেসব বিষয় নিয়ে সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানান জসিম উদ্দিন।
দেশের অর্থনৈতিক সামর্থ্য প্রদর্শন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে গত মার্চে তিন দিনের ‘বাংলাদেশ ব্যবসা সম্মেলন’ আয়োজন করেছিল এফবিসিসিআই। সেখানে দেশ–বিদেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী অংশ নেন।
এ প্রসঙ্গে জসিম উদ্দিন বলেন, “গত মার্চে অনুষ্ঠিত ব্যবসা সম্মেলনের প্রাপ্তি নিয়ে আমরা একটি বই বের করছি। শনিবারের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বইটি হস্তান্তর করা হবে। বইটিতে ব্যবসা সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞদের মতামত রয়েছে।”
পাশাপাশি সম্মেলনে আলোচনা হওয়া সুপারিশ ও নীতি পরামর্শগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের শুরুতে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে কর্মসূচি-পাল্টা কর্মসূচি দিতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এবং বিদেশিদের মধ্যেও এ নিয়ে উদ্বেগ আছে।
শনিবারের সম্মেলনে রাজনীতি নিয়ে উদ্বেগের কথা ব্যবসায়ীরা বলবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, “আমরা ব্যবসা করি, আমরা চাই, দেশে যেন স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন ভালো থাকে। এগুলো না থাকলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
জসিম উদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশের আজকের অর্থনীতি ১০ বছর আগের চেয়ে ভিন্ন। আগের মতো আমরা অনেক কিছুই সহ্য করতে পারব না। আগে হরতাল ছিল। এখন কি হরতাল সহ্য করা যাবে? যাবে না।”
“আমরা ব্যবসায়ীরা সব সময়ই চাই দেশ শান্তিপূর্ণভাবে চলুক। তাহলেই আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য ভালো। আমরা ব্যবসায়ীরা চাই, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতি যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।”
“রাজনীতিবিদেরাও নিশ্চয়ই বোঝেন, অর্থনীতি না থাকলে দেশে আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকবে না। এখানে ব্যবসায়ীরা অতীতের মতোই বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন,” এফবিসিসিআই প্রধান।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, বর্তমান জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কমেন্ট