অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে মুস্তফা কামাল-সীতারামন আলোচনা
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি: অর্থ মন্ত্রণালয়
দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
ভারতের গুজরাটের গান্ধীনগরে জি-২০ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের সম্মেলনের সাইড লাইনে তারা বৈঠক করেছেন বলে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে দুই দেশের অর্থমন্ত্রী বিশদ আলোচনা করেন।
অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, “বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত সুদৃঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে ভারতের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও ভারত তিনটি নাম মুক্তিযুদ্ধের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত।”
“ভারত শুধুমাত্র বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশিই নয়, আমাদের বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত বন্ধু। ভারতের সঙ্গে রয়েছে আমাদের ইতিহাসের, ভাষার, সংস্কৃতির, মনমানসিকতার গভীর সমন্বয়। রয়েছে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার সমৃদ্ধ ইতিহাস।”
জি-২০ জোটের সদস্য না হলেও বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল থেকে ‘অতিথি দেশ’ হিসেবে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এজন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে কানেকটিভিটি যত বাড়বে ততই দুই দেশের লোকজনের মধ্যে সম্পর্ক জোরালো হবে।
দুই দেশের অর্থনীতির এলাকায় সহযোগিতা বাড়াবার জায়গাগুলো চিহ্নিত করে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
জি-২০ এর এই সম্মেলনে যোগ দিতে গত শনিবার ভারতে যান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে মোট ছয় সদস্যের দল এতে অংশ নিচ্ছে। অন্যরা হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ইকোনমিক মিনিস্টার মোহাম্মদ রাশেদুল আমীন, অর্থমন্ত্রীর একান্ত সচিব ফেরদৌস আলম, অর্থ বিভাগের উপসচিব মুশফিকুর রহমান এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম।
বাংলাদেশ জি-২০-এর সদস্য নয়। তবে শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত সদস্যদেশগুলোর বাইরেও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ৯টি দেশকে অতিথিদেশ (গেস্ট কান্ট্রি) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। দক্ষিণ এশিয়া থেকে অতিথিদেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। অন্য আট অতিথিদেশ হচ্ছে নেদারল্যান্ডস, মিসর, মরিশাস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও স্পেন।
জি-২০ গ্রুপের সদস্যের মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
স্পেন হচ্ছে এ জোটের স্থায়ী আমন্ত্রিত অতিথি। ১৯৯৯ সালে গঠিত জি-২০-এর বর্তমান চেয়ার ভারত। আগামী ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলন এই জোটের ১৮তম সম্মেলন। এবারের স্লোগান ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সেই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জোটটির প্রথম সম্মেলন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি শহরে। বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮৫ শতাংশ, বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশ এবং জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলো।
কমেন্ট