প্রথমবারের মতো লাখ টাকা ছাড়াল সোনার ভরি

প্রথমবারের মতো লাখ টাকা ছাড়াল সোনার ভরি

শুক্রবার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ৭৭৭ টাকায় বিক্রি হবে। ফাইল ছবি

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে দেশের বাজারে প্রথমবারের মত সোনার ভরি এক লাখ টাকা চাড়াল। শুক্রবার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার ভরি ১ লাখ ৭৭৭ টাকায় বিক্রি হবে; বেড়েছে ভরিতে দুই হাজার ৩৩৩ টাকা। 

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই সোনার ভরি এত উচ্চতায় উঠেনি। অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে বেড়েছে। 

দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) বৃহস্পতিবার রাতে সোনার দাম বাড়ানোর এই ঘোষণা দিয়েছে। 

বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদের সই করা  এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাজুস স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে।

শুক্রবার থেকে নতুন দর কার্যকর করা হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পরবর্তী সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত এই দরে দেশের বাজারে স্বর্ণ কেনাবেচা করতে সবাইকে অনুরোধ করা হলো।”

কয়েক মাস ধরে সোনার ভরি লাখ টাকা ছুঁই ছুঁই করছিল। বৃহস্পতিবার দুই হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়ানোয় ‘লাখ টাকার’ সেই মাইলফলক অতিক্রম করল।

এর আগে গত ১৮ মার্চ সোনার দাম প্রতি ভরিতে এক লাফে ৭ হাজার ৬৯৮ টাকা বাড়ানোর হয়। তাতে সোনার ভরি হয় ৯৮ হাজার ৭৯৪ টাকা। এরপর আবার কয়েক দফা দাম কমে-বাড়ে।

 

সর্বশেষ গত ৭ জুন সোনার দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়ানো হয়। তখন প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৮ হাজার ৪৪৪ টাকা হয়। 

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই দামেই সোনা বিক্রি হয়। 

বাজুসের ঘোষণা অনুযায়ী, শুক্রবার থেকে ভালো মানের সোনার দাম প্রতি ভরিতে (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়বে। এতে ভালো মানের অর্থাৎ হলমার্ক করা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে ১ লাখ ৭৭৭ টাকা। 

এ ছাড়া হলমার্ক করা প্রতি ভরি ২১ ক্যারেট সোনা ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৮২ হাজার ৪৬৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা বিক্রি হবে ৬৮ হাজার ৭০০ টাকায়। 

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হলমার্ক করা ২২ ক্যারেট  প্রতি ভরি সোনা ৯৮ হাজার ৪৪৪ টাকা, ২১ ক্যারেট ৯৩ হাজার ৯৫৪ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৮০ হাজার ৫৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির সোনা বিক্রি হয়েছে ৬৭ হাজার ১২৬ টাকায়।

শুক্রবার থেকে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা, ২১ ক্যারেটে ২ হাজার ২৭৪, ১৮ ক্যারেটে  ১ হাজার ৯২৫ এবং সনাতন পদ্ধতির সোনায় দাম বাড়ছে ১ হাজার ৫৭৫ টাকা। 

সোনার দাম ভরিতে লাখ টাকা ছাড়ালেও দেশের বাজারে রুপার দাম অপরিবর্তিত আছে। হলমার্ক করা প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা। 

বাংলাদেশ যে বছর স্বাধীন হয়, তার আগের বছর সোনার ভরি ছিল ১৫৪ টাকা। ২০০০ সালে সোনার ভরি বেড়ে ৬ হাজার ৯০০ টাকায় দাঁড়ায়। 

২০১০ সালে মূল্যবান এই ধাতুর দাম বেড়ে ৪২ হাজার ১৬৫ টাকা হয়। ২০২০ সালে সোনার ভরি সর্বোচ্চ ৬৯ হাজার ৮৬৭ টাকায় পৌঁছায়। 

করোনা মহামারির পর বিশ্বব্যাপী সোনার দামে অস্থিরতা দেখা দেয়। তখন নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য সোনাকেই বেছে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এতে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। 

করোনার পর সোনার দাম কিছুটা কমলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর আবার বাড়তে থাকে। 

গত বছরের শেষ দিকে সোনার দাম কিছুটা কমে। চলতি বছর আবার দামি এই ধাতুর দর বাড়তে থাকে 

টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের বাজার সোনার দাম বাড়ার একটি কারণ বলে জানান বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ। 

এআরএইচ ডটকমকে তিনি বলেন, “বিশ্ববাজারেও স্বর্ণের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। অন্যদিকে গত এক বছরে টাকার বিপরীতে ডলারের দর প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। সব মিলিয়ে স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। সে কারণে আমরাও দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি।” 

তবে আন্তর্জাতিক বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সোনার দাম বেশ খানিকটা কমেছে। রাত ১০টায় প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম, ২.৬৫ ভরি)  স্বর্ণ ১ হাজার ৯৬৭ ডলার ৯৬ সেন্টে বিক্রি হয়েছে। বুধবার এর দর ১ হাজার ৯৮৫ ডলার ১৩ সেন্টে উঠেছিল।

এডিপির ৮৪% বাস্তবায়ন, শেষ মাসে ব্যয় ৫৩ হাজার কোটি টাকা পূর্ববর্তী

এডিপির ৮৪% বাস্তবায়ন, শেষ মাসে ব্যয় ৫৩ হাজার কোটি টাকা

পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ তৈরি না হলে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ‘বোঝা’ হয়ে উঠতে পারে পরবর্তী

পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ তৈরি না হলে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ‘বোঝা’ হয়ে উঠতে পারে

কমেন্ট