ভারতের জন্য চার ‘ট্রানজিট রুট’ অনুমোদন

ভারতের জন্য চার ‘ট্রানজিট রুট’ অনুমোদন

চারটি পথ হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, মোংলা বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, চট্টগ্রাম-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর এবং মোংলা বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর। ফাইল ছবি

ভারতের ত্রিপুরা ও অন্যান্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে চারটি পথ অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সরকার। ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই চারটি পথ হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, মোংলা বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, চট্টগ্রাম-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর এবং মোংলা বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর। 

ত্রিপুরার শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। সেটা হলো ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন। বাংলাদেশ সরকার পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য উল্লিখিত চারটি পথ অনুমোদনের কথা জানিয়েছে। 

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনে অংশ নেয় বাংলাদেশ, ভারত ও জাপান। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এর আগে তারা এক সমীক্ষা করে। 

সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্য সহজীকরণে ভারত-বাংলাদেশকে এক লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়া সহজ করতে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলাচলের উপযোগী পথ নির্মাণ করতে হবে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে বিনিয়োগ করা ছাড়াও জাপান বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের মধ্য দিয়ে ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে যুক্ত হবে। 

ত্রিপুরায় ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে কেন্দ্র করে ভারত, বাংলাদেশ ও জাপান ত্রিপক্ষীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। সেই বৈঠকের পর ভারতকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এবার ভারতকে পণ্য পরিবহনে চারটি পথ ব্যবহারের অনুমতি দিল বাংলাদেশ। 

এ বছরের এপ্রিল মাসে ত্রিপুরায় ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনে অংশ নেয় বাংলাদেশ, ভারত ও জাপান। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি এক সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাণিজ্য সহজীকরণে ভারত-বাংলাদেশকে এক লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়া সহজ করতে দ্রুতগতিতে যান চলাচলের উপযোগী পথ নির্মাণ করতে হবে। 

এদিকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্যের ট্রানজিট সুবিধা দিতে ১৬টি পথ অনুমোদন দিয়ে গত ২৪ এপ্রিল স্থায়ী আদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। 

পথগুলো হলো– চট্টগ্রাম বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, মোংলা বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, চট্টগ্রাম বন্দর-তামাবিল-ডাউকি, মোংলা বন্দর-তামাবিল-ডাউকি, চট্টগ্রাম বন্দর-শেওলা-সুতারকান্দি, মোংলা বন্দর-শেওলা-সুতারকান্দি, চট্টগ্রাম বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর, মোংলা বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর, আগরতলা-আখাউড়া-চট্টগ্রাম বন্দর, আগরতলা-আখাউড়া-মোংলা বন্দর, ডাউকি-তামাবিল-চট্টগ্রাম বন্দর, ডাউকি-তামাবিল-মোংলা বন্দর, শেওলা-সুতারকান্দি-চট্টগ্রাম বন্দর, শেওলা-সুতারকান্দি-মোংলা বন্দর, শ্রীমন্তপুর-বিবিরবাজার-চট্টগ্রাম বন্দর এবং শ্রীমন্তপুর-বিবিরবাজার-মোংলা বন্দর। 

ওই আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘এগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া’র আওতায় দু’দেশের মধ্যে সই হওয়া স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যের কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।   

আদেশে বলা হয়, বন্দরে পণ্য পৌঁছার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ কাস্টমসকে জানাতে হবে। বিল অব এন্ট্রি, কমার্শিয়াল ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্টসহ সম্পূর্ণ ডকুমেন্টেশন কাস্টমসের কাছে জমা দিতে হবে। কাস্টমস ডিউটি পরিশোধ করতে হবে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে। ফি এবং চার্জের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে।   

আদেশে বলা হয়, প্রতি চালান ডকুমেন্ট প্রসেসিংয়ের জন্য ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি টন পণ্যের জন্য ২০ টাকা, টনপ্রতি সিকিউরিটি চার্জ ১০০ টাকা, প্রতি কনটেইনার এসকর্ট চার্জ ৮৫ টাকা, টনপ্রতি অন্যান্য প্রশাসনিক চার্জ ১০০ টাকা এবং প্রতি কনটেইনার স্ক্যানিং চার্জ বাবদ ২৫৪ টাকা পরিশোধ করতে হবে। 

এর বাইরে সড়ক ব্যবহারের জন্য আলাদা ফি ধার্য হবে। সড়ক ব্যবহারে প্রতি কিলোমিটারের জন্য টনপ্রতি ১ টাকা ৮৫ পয়সা ফি দিতে হবে। এ ছাড়া ইলেকট্রিক লক এবং সিলের জন্যও নিয়ম অনুযায়ী চার্জ দিতে হবে।

‘পরিকল্পিত শিল্পনগরে শিল্প গড়লে জ্বালানির দায়িত্ব নেবে সরকার’ পরবর্তী

‘পরিকল্পিত শিল্পনগরে শিল্প গড়লে জ্বালানির দায়িত্ব নেবে সরকার’

কমেন্ট