সামিটের ৩ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ল ৫ বছর

সামিটের ৩ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ল ৫ বছর

মেয়াদ বাড়ানো আশুলিয়া ৩৩ দশমিক ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র। ফাইল ছবি

ঢাকা, কুমিল্লা ও নরসিংদীতে সামিট পাওয়ারের ১৬ বছরের পুরনো তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হয়েছে। 

বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। 

মেয়াদ বাড়ানো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হচ্ছে আশুলিয়া ৩৩ দশমিক ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাধবদী ২৪ দশমিক ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চান্দিনা ১৩ দশমিক ৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৫ টাকা ৬৫ পয়সা হিসাবে ধরলে পাঁচ বছরে সামিটকে সর্বোচ্চ এক হাজার ১১৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। 

সামিটের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬ থেকে ২০০৭ সালের দিকে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছিল।

সভাশেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আমিন উল আহসান বলেন, “বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রস্তাবে আশুলিয়া ৩৩ দশমিক ৭৫ মেগাওয়াট, মাধবদী ২৪ দশমিক ৩০ মেগাওয়াট ও চান্দিনা ১৩ দশমিক ৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধি ও ট্যারিফ নির্ধারণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। 

“কোনো ক্যাপাসিটি চার্জ ছাড়া আর্থাৎ নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পেমেন্ট ভিত্তিতে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময়ে সামিট পাওয়ারকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য দেওয়া হবে ৫ টাকা ৬৫ পয়সা। ফলে সম্ভাব্য মোট খরচ হবে ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা।” 

বৈঠকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ১০ টাকা ৬৯ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এখানেও ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে বলে জানান আমিন উল আহসান। 

এই লক্ষ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এএসকে নিউ এনার্জি, এজে পাওয়ার ও এটিএন সল্যুশন কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে ২০ বছর মেয়াদী চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এই চুক্তিতে ২০ বছরে সর্বোচ্চ সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৩২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। 

বৈঠকে সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিজ গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ারের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট ১১ দশমিক ১৭ ডলার দরে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট খরচ হবে ৪৭৮ কোটি ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৬ টাকা। 

চলতি বছরে এটি হবে খোলা বাজার থেকে এলএনজির ১৮তম চালান। 

একই বৈঠকে জার্মানির সিমেন্সকে ২৯৬ কোটি ৯৭ লাখ ৫৪ হাজার ৭০৩ টাকায় ‘ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের’ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ দেওয়ার প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

কানাডা থেকে এক লাখ টন এমওপি 

অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে কানাডার কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের কাছ থেকে নবম ও দশম লটে ৫০ হাজার করে এক লাখ টন মিউরেট অব পটাশ বা এমওপি সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগের কেনাকাটায় প্রতিটনের মূল্য ৩৪২ ডলার হলেও এবার প্রতিটনের দাম পড়েছে ৩১৮ দশমিক ২৫ ডলার।

 

সার কেনার দুটি পৃথক প্রস্তাবে মোট খরচ হচ্ছে ৩৪৭ কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৫০ টাকা। 

বৈঠকে সিঙ্গাপুরের এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে প্রতিকেজি ৩২ টাকা ৫৭ পয়সা দরে ৫০ হাজার টন গম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে। 

এতে মোট খরচ হচ্ছে ১৬২ কোটি ৮৬ লাখ ৪৮ হাজার ২৫০ টাকা। ডলারের বিনিময় হার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা হিসাবে প্রতিটন গমের দাম দাঁড়িয়েছে ২৯৭ দশমিক ৪৭ ডলার। 

টিসিবির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে তুরস্কের আর্বেল বাকলিয়াত হুবুবাত সেনটিক এ.এস কুমহুরিয়াতের কাছ থেকে ৭১ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় ৮ হাজার টন মসুর ডাল কিনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

আগের কেনাকাটায় প্রতিকেজির দাম ৮৩ টাকা ৫১ পয়সা পড়লেও এবার খরচ হচ্ছে ৯৪ টাকা ৯৮ পয়সা। 

আরেকটি ক্রয় প্রস্তাবে টিসিবির জন্য বসুন্ধরা মাল্টিফুডের কাছ থেকে পৃথক দুই উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১৬০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।  

প্রথম প্রস্তাবে প্রতি লিটার তেলের দাম ১৫৯ টাকা ৪৫ পয়সা এবং দ্বিতীয় প্রস্তাবে ১৫৮ টাকা ৮০ পয়সা পড়েছে। এই দুই কেনাকাটায় মোট খরচ হচ্ছে ২৫৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

৫০০ কোটি টাকার তেল-ডাল-গম কেনা হবে 

এছাড়া ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিক্রির জন্য ১ কোটি ৬০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ৮ হাজার টন মসুর ডাল ও ৫০ হাজার টন গম কেনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। 

এসব কেনাকাটায় খরচ হবে ৪৮৯ কোটি ৪০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।

 

আমিন উল আহসান জানান, বৈঠকে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র পদ্ধতিতে তুরস্কের আরবেল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্তিক এএস কুমহুরিয়াতের কাছ থেকে ৭১ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এই ডাল কিনবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা টিসিবি। 

অপর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে টিসিবি কর্তৃক ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র পদ্ধতিতে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টসের কাছ থেকে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১২৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। 

এ ছাড়া সয়াবিন তেল ক্রয়ের আরও একটি প্রস্তাব টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। এতে টিসিবি কর্তৃক স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টসের কাছ থেকে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এতে মোট ১২৭ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে। 

বৈঠকে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-১–এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুরের অ্যাগ্রোক্রোপ ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে এই গম কিনতে লাগবে ১৬২ কোটি ৮৬ লাখ ৪৮ হাজার ২৫০ টাকা। 

চট্টগ্রাম চেম্বার: বিনা ভোটে এমপি লতিফের ছেলে সভাপতি, বিদায়ী সভাপতির মেয়ে সহসভাপতি পরবর্তী

চট্টগ্রাম চেম্বার: বিনা ভোটে এমপি লতিফের ছেলে সভাপতি, বিদায়ী সভাপতির মেয়ে সহসভাপতি

কমেন্ট