‘ডিম নিয়ে কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা’
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক ছায়া সংসদে বিজয়ী দলের বিতার্কিকদের ট্রফি প্রদান করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ছবি: এআরএইচ ডটকম
বর্তমানে প্রচলিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনটি সংশোধন ও সময়োপযোগি করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
মন্ত্রী বলেছেন, “ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করা গেলে ভালো হয়। সিন্ডিকেট, অবৈধ মজুদদার, কালোবাজারীদের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিদপ্তর তাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।”
বাজারে ডিমের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও পেয়াঁজের মতো পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারসজির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।”
শুক্রবার রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক ছায়া সংসদ অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটি জাতীয় ভোক্ত-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি যৌথভাবে আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “সিন্ডিকেট সবসময় সুযোগ খোঁজে বাজারে কারসাজি করে মূল্যবৃদ্ধির জন্য, আমরাও সদা সক্রিয় এই সব অবৈধ কারবারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে।”
“ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও পেয়াঁজের মতো পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারসজির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। ভোজ্যতেল, চিনি ও গমের মতো অনেক পণ্য ৯০ ভাগই আমদানি নির্ভর। যা মাত্র কয়েকটি কোম্পানী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এ পণ্যগুলো নিয়ে যাতে বাজারে কোন কারসাজি না ঘটে তার জন্য আমরা সর্বদা সজাগ থাকি।
“তবে কোন কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়াও সমাধান নয়। তাতে সাপ্লাই ও ডিমান্ডে ব্যহত হয়ে ভোক্তাদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে। তবে ব্যবসায়ীদের সততা, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের জাগরণই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে বিশেষ সহায়ক,” বলেন টিপু মুনশি।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ব্রয়লার মুরগিসহ বেশ কয়েকটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ৫/৬টি কর্পোরেট কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।”
“ফলে ক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির কারসাজির সাথে যে সকল বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কর্পোরেট কোম্পানিগুলো জড়িত সেগুলোকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি বলেন, “ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামের অস্থিরতা তৈরির সাথে যারা জড়িত তাদের কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে। প্রান্তিক খামারিরা কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। দেশে যে বিপুল সংখ্যক প্রান্তিক উদ্যোক্তা ডেইরি ফার্ম, পোল্ট্রি খামার ও এগ্রো ফার্ম করেছে তাদের বেশির ভাগই পুঁজি হারাচ্ছে। এসব প্রান্তিক খামারীদের বাঁচিয়ে রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।”
‘শুধু আইন দিয়ে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়’ শীর্ষক উদ্বোধনী প্রতিযোগিতায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্বিবিদ্যালয়কে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা, সাংবাদিক রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
কমেন্ট