সর্বজনীন পেনশন: কত কিস্তিতে কত পাওয়া যাবে

সর্বজনীন পেনশন: কত কিস্তিতে কত পাওয়া যাবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সর্বজনীন পেনশনের চারটি কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। কর্মসূচিগুলো হচ্ছে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা।

অপেক্ষার পালা শেষ। চালু হয়েছে বহুল প্রতিক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি বা স্কিম। আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি এত দিনে বাস্তব রূপ পেল। 

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন।   

এই আয়োজনে তিনটি জেলা-গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও রংপুর এবং সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে অংশগ্রহণকারী এবং সুবিধাভোগীরা সংযুক্ত ছিলেন।  

চার শ্রেণির নাগরিককে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তাকাঠামোর আওতায় আনতে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো আলোচিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি।  

পেনশন কর্মসূচি বা স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে ৬০ বছর বয়সের পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন একজন চাঁদাদাতা। তবে চাঁদাদাতা মারা গেলে তার নমিনি বা উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন চাঁদাদাতার ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত।  

অর্থাৎ কোনো চাঁদাদাতা যদি ৬০ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে তার ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত অর্থাৎ ১৫ বছর তার নমিনি পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।  

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের গত রোববার জারি করা সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা অনুযায়ী এ নিয়মই অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিধিমালা প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা। বিধিমালায় আজীবন পেনশনের ব্যাপারে অবশ্য স্পষ্ট কিছু বলা নেই।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সর্বজনীন পেনশনের চারটি কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। কর্মসূচিগুলো হচ্ছে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা।  

অর্থ বিভাগের সূত্র অনুযায়ী, উদ্বোধনের দিন থেকেই ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী যে কেউ পেনশন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও বিশেষ বিবেচনায় পেনশনভুক্ত হতে পারবেন।  

তবে বিশেষ বিবেচনার কারা, কীভাবে এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন, সে ব্যাপারে সরকারের প্রস্তুতি নিতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।  

পেনশনের প্রবাস কর্মসূচিটি শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। তারা বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা দেবেন, তবে মেয়াদ পূর্তিতে তাঁরা দেশীয় মুদ্রায় পেনশন পাবেন।

  

প্রগতি কর্মসূচিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের জন্য। এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের ৫০ শতাংশ চাঁদা চাকরিজীবীরা নিজে ও মালিকপক্ষ ৫০ শতাংশ হারে বহন করবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্মসূচি বা স্কিমে অংশ নিতে না চাইলে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নিজ উদ্যোগে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

সুরক্ষা কর্মসূচিটি হচ্ছে রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিসহ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য। আর সমতা কর্মসূচিটি হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য, যাঁদের বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার কম।  

বাস্তবায়নকারী সংস্থা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ  

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী সংস্থা হচ্ছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। আপাতত অর্থ বিভাগের আওতাধীন সংস্থা হবে এটি। এ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে গত মাসে নিয়োগ পেয়েছেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কবিরুল ইজদানী খান। আরেক অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা নিয়োগ পেয়েছেন সদস্য হিসেবে।  

চাঁদাদাতার আজীবন এবং চাঁদাদাতার মৃত্যুর পর নমিনি বা উত্তরাধিকারীরা তার (চাঁদাদাতা) ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত পেনশন পাওয়ার বিষয়ে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা উদাহরণ হিসেবে বলেন, “ধরুন, চার কর্মসূচির কোনো একটায় কেউ ১৮ বছর বয়স থেকে মাসিক চাঁদা দিলেন টানা ৪২ বছর অর্থাৎ ৬০ বছর পর্যন্ত। ৬০ বছরের পর তিনি যত দিন বেঁচে থাকবেন, তত দিনই নির্ধারিত হারে মাসিক পেনশন পাবেন। আবার চাঁদাদাতা যদি ৭০ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে নমিনি বা উত্তরাধিকারী মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ আরও ৫ বছর পেনশন পাবেন।”  

বেসরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রগতি স্কিম  

বেসরকারি কর্মচারীরা মাসিক দুই হাজার, তিন হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে ‘প্রগতি’ স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন।

কোনো বেসরকারি কোম্পানির এ স্কিমে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে চাঁদার ৫০ শতাংশ কর্মীরা এবং বাকি ৫০ শতাংশ কোম্পানি পরিশোধ করতে পারবে। এমনকি কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ না কররেও এর কর্মীরা নিজ উদ্যোগে এ স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।

 

১৮ বছর বয়সে স্কিমে যোগ দিয়ে ৪২ বছর ধরে মাসিক দুই হাজার টাকা চাঁদা দিলে ৬০ বছর বয়স থেকে মাসে ৬৮ হাজার ৯৩১ টাকা পেনশন পাবেন। একইভাবে, তিন হাজার টাকা মাসিক চাঁদায় এক লাখ তিন হাজার ৩৯৬ টাকা মাসিক পেনশন এবং পাঁচ হাজার টাকা মাসিক চাঁদায় এক লাখ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা মাসিক পেনশন পাওয়া যাবে।  

প্রবাসীদের জন্য প্রবাস স্কিম

এই স্কিমে মাসিক চাঁদা ধরা হয়েছে ৫,০০০ টাকা, ৭,৫০০ টাকা এবং ১০ হাজার টাকা। বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানরত যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক বৈদেশিক মুদ্রায় যেকোনো পরিমাণ চাঁদা প্রদান করে এ স্কিমে যোগ দিতে পারবেন।   

বিদেশ থেকে এ স্কিমে যোগদানের পর দেশে ফিরলে তারা দেশীয় মুদ্রায় চাঁদা পরিশোধ করতে পারবেন অথবা স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন। পেনশন স্কিমের মেয়াদ শেষে সরকার স্থানীয় মুদ্রায় পেনশন প্রদান করবে।

যদি কেউ ১৮ বছর বয়সে প্রবাস স্কিমে যোগ দেন এবং ৪২ বছর ধরে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দেন, তাহলে তিনি ৬০ বছর বয়স থেকে প্রতি মাসে এক লাখ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা পেনশন পাবেন। ৪২ বছর ধরে প্রতি মাসে ৭,৫০০ টাকা চাঁদা দিলে প্রবাসীরা মাসিক দুই লাখ ৫৮ হাজার ৪৯১ টাকা এবং ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিলে মাসিক তিন লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৫ টাকা আজীবন পেনশন পাবেন।  

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের জন্য সুরক্ষা স্কিম

অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য 'সুরক্ষা' নামে স্কিম থাকছে। কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিসহ সব ধরনের অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত ব্যক্তিরা এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। এ স্কিমে মাসিক চাঁদার পরিমাণ এক হাজার টাকা, দুই হাজার টাকা, তিন হাজার টাকা এবং পাঁচ হাজার টাকা।

সুরক্ষা স্কিমে ৪২ বছর ধরে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে চাঁদা দিয়ে ৬০ বছর বয়স থেকে মাসে ৩৪ হাজার৪৬৫ টাকা করে পেনশন পাওয়া যাবে।

 

আর ১৮ বছর বয়সে অন্তর্ভুক্ত হয়ে ৪২ বছর ধরে মাসে দুই হাজার টাকা চাঁদা দিলে ৬০ বছর বয়স থেকে প্রতিমাসে ৬৮ হাজার ৯৩১ টাকা পেনশন পাওয়া যাবে। একইভাবে প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা চাঁদা দিলে মাসিক এক লাখ তিন হাজার ৩৯৬ টাকা এবং প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিলে আজীবন মাসিক এক লাখ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা করে পেনশন পাবেন।   

অতিদরিদ্রদের জন্য সমতা স্কিম   

এই স্কিমে চাঁদার পরিমাণ মাসে এক হাজার টাকা। এরমধ্যে চাঁদাদাতা প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে দেবেন। বাকি ৫০০ টাকা সরকার পরিশোধ করবে।   

সময়ে সময়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত খানা আয় ও ব্যয় জরিপ অনুযায়ী, অতিদারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার ভিত্তিতে—যাদের নিজস্ব আয় দ্বারা জীবনধারণের ন্যূনতম উপকরণ জোগাড় করা সম্ভব নয়—তারা এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

 

এ স্কিমের আওতায় ১৮ বছর বয়সে অন্তর্ভুক্ত হয়ে মাসে ৫০০ টাকা চাঁদা দিলে ৬০ বছর বয়স থেকে মাসিক ৩৪ হাজার ৪৬৫ টাকা পেনশন পাওয়া যাবে। আর ৫০ বা তদূর্ধ্ব বয়সীরা অন্তত ১০ বছর ধরে মাসে ৫০০ টাকা চাঁদা দিয়ে, ৬০ বছর বয়স থেকে মাসিক এক হাজার ৫৩০ টাকা করে পেনশন পাবেন।  

চাঁদার ৫০ শতাংশ ঋণ নেওয়া যাবে 

চাঁদাদাতার আবেদনের প্রেক্ষিতে তার জমা করা অর্থের ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে নিতে পারবেন। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াত পাওয়া যাবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ পাওয়া অর্থও করমুক্ত থাকবে।   

চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগেই মারা গেলে, তার জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।   

যেভাবে নিবন্ধন করা যাবে 

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, যারা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হতে চান, তাদেরকে অবশ্যই নিবন্ধন করতে হবে। ঘরে বসে সবাই যাতে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন, সেজন্য একটি অ্যাপ থাকবে। এছাড়া, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে গিয়েও নিবন্ধন করা যাবে। প্রবাসীরা বিদেশ থেকে অ্যাপ ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।   

রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে প্রত্যেকে একটি ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর পাবেন। সরকার আশা করছে, ১০ কোটি নাগরিক সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। সেজন্য ১৮ সংখ্যার ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেওয়া হতে পারে।   

সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলবে। অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে তার নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে মাসিক চাঁদা দিতে হবে।

প্রবাসীরা বিদেশ থেকে চাঁদা দিতে পারবেন। আর দেশে বসবাসকারীরা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিংবা বিকাশ, নগদসহ যেকোন মোবাইলে আর্থিক পরিষেবার (এমএফএস) মাধ্যমে ওই অ্যাকাউন্টে চাঁদা দিতে পারবেন।  

নমিনি না উত্তরাধিকারী 

বিধিমালায় বলা হয়েছে, মারা গেলে অর্থ কে পাবেন, সে জন্য চাঁদাদাতা এক বা একাধিক নমিনি মনোনয়ন করতে পারবেন। যেকোনো সময় একজন বা সব নমিনিই পরিবর্তন করে নতুন নমিনি মনোনয়নের সুযোগ থাকবে।  

চাঁদাদাতা বা পেনশনধারী মারা গেলে এবং তাঁর মৃত্যুর পর নমিনি মনোনয়ন কার্যকর থাকলে পেনশনের অর্থ নমিনি পাবেন। তবে নমিনি নাবালক হলে পেনশনধারীর মৃত্যুর পর নমিনি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত নমিনির পক্ষে অর্থ তুলতে পারবেন চাঁদাদাতার মনোনয়ন বা নিয়োগ দেওয়া যেকোনো ব্যক্তি। তিনিই হবেন নাবালক নমিনির আইনসম্মত অভিভাবক। নমিনি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত ওই ব্যক্তি নাবালক নমিনির প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য হবেন।  

কোনো স্কিমের বিপরীতে একাধিক নমিনি থাকলে এবং যেকোনো একজন নমিনি মারা গেলে এবং মৃত নমিনির বিপরীতে নতুন কোনো নমিনি মনোনয়ন না করা হলে জীবিত নমিনি বা নমিনিরা ওই স্কিমে উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য হবেন এবং স্কিমের অর্থ পাবেন।  

কোনো স্কিমের চাঁদাদাতা মাসিক পেনশন পাওয়ার উপযুক্ত হওয়ার আগেই মারা গেলে তার নমিনি বা নমিনিরা অথবা নমিনির অবর্তমানে উত্তরাধিকারী বা উত্তরাধিকারীরা মুনাফাসহ জমা করা অর্থ ফেরত পাবেন।  

নমিনির অবর্তমানে উত্তরাধিকারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকারের সনদ বিবেচনায় নেবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অর্থসচিব বরাবর আপিল করার সুযোগ পাবেন। আপিল কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটাই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।  

মানসিক ভারসাম্যহীন হলে কী হবে 

বিধিমালায় বলা হয়েছে, পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে কোনো চাঁদাদাতা যদি চাঁদা দেওয়ার জন্য অসমর্থ হয়ে পড়েন, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তির নমিনি বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারীর ওপর কর্মসূচির স্বত্ব ন্যস্ত করতে পারবে।

 

তারা কর্মসূচিটি চালিয়ে নিতে পারবেন এবং মেয়াদ শেষে পেনশন ভোগ করতে পারবেন। চাঁদাদাতা নিখোঁজ হয়ে গেলে নমিনি বা উত্তরাধিকারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করে পেনশন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন এবং কর্মসূচি চালিয়ে নিতে পারবেন। নিখোঁজ হওয়ার সাত বছর পার হওয়ার মধ্যে চাঁদাদাতা ফিরে না এলে তাঁর কর্মসূচিটি স্থগিত করা হবে।  

বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসমর্থ হয়ে গেলে এবং অসামর্থ্যের কারণে কর্মহীন ও উপার্জনে অক্ষম হয়ে পড়লে চাঁদাদাতাকে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হবে।  

তখন তাকে অসচ্ছল চাঁদাদাতা হিসেবে ঘোষণা দেবে পেনশন কর্তৃপক্ষ। চাঁদাদাতার অসচ্ছলতা নির্ণয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠিত হবে এবং অসচ্ছল হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর এক বছর পর্যন্ত চাঁদা না দিলেও পেনশন হিসাব স্থগিত হবে না।

সর্বজনীন পেনশন: যেভাবে আবেদন করবেন পূর্ববর্তী

সর্বজনীন পেনশন: যেভাবে আবেদন করবেন

চালু হলো সর্বজনীন পেনশন, উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী

চালু হলো সর্বজনীন পেনশন, উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

কমেন্ট