এডিপি বাস্তবায়ন: এবারও হতাশাজনক চিত্র নিয়ে শুরু অর্থবছর

এডিপি বাস্তবায়ন: এবারও হতাশাজনক চিত্র নিয়ে শুরু অর্থবছর

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ১ দশমিক ২৭ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে। টাকার অঙ্কে এই ব্যয়ের পরিমাণ তিন হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা।

বরাবরের মত এবারও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের হতাশাজনক চিত্র নিয়ে শুরু হলো ২০২৩-২৪ অর্থবছর। 

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ১ দশমিক ২৭ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে। টাকার অঙ্কে এই ব্যয়ের পরিমাণ তিন হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। 

মঙ্গলবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপি বাস্তবায়নের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থার জন্য বরাদ্দসহ সরকার মোট ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকার এডিপি বাস্তবায়নের লক্ষ্য হাতে নিয়েছে সরকার। 

এর মধ্যে প্রথম মাস জুলাইয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খরচ করেছে তিন হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। এই খরচের মধ্যে সরকারি তহবিলের দুই হাজার ১৪৫ কোটি, বৈদেশিক সহায়তার এক হাজার ১৩৩ কোটি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে ২১১ কোটি টাকা। 

এডিপি বাস্তবায়নের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই মাসে এডিপি বাস্তবায়নে সব থেকে এগিয়ে আছে সুরক্ষা সেবা বিভাগ; মোট বরাদ্দের ১৪ দশমিক ২০ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে এই বিভাগ। দ্বিতীয় অবস্থানে সংসদ বিষয়ক বিভাগ ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং তৃতীয় অবস্থানে জাতীয় সংসদ সচিবালয় ৫ শতাংশ। 

এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এডিপি বাস্তবায়ন করেছে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ৪ দশমিক ১২ শতাংশ, স্থানীয় সরকার বিভাগ ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ, বিদুৎ বিভাগ ১ দশমিক ১৩  শততাংশ, রেলপথ বিভাগ ২ দশমিক শূন্য আট শতাংশ এবং কৃষি মন্ত্রণালয় মোট  বরাদ্দের ১ দশমিক ১৭ শতাংশ খরচ করেছে।

 

মোট বরাদ্দের ১ শতাংশেরও কম এডিপি বাস্তবায়ন করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, জনপ্রশাসন, খাদ্য মন্ত্রণালয়, অর্থবিভাগ এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। 

আর নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন, আইন ও বিচার বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। 

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ; টাকার অঙ্কে খরচের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা। 

গত কয়েক বছরের প্রথম মাসের এডিপির বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ। এ সময় ব্যয় হয় দুই হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা। 

২০২০-২১ অর্থবছরে বাস্তবায়ন হয় ১ দশমিক ৫২ শতাংশ, ওই সময় ব্যয় হয়েছিল তিন হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ; ব্যয় হয়েছিল তিন হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। 

অতীত ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, প্রতিবারই অর্থবছরের প্রথম দিকে এডিপি বাস্তবায়নের হার অনেক কম থাকে; শেষের দিকে খরচ বেড়ে যায়। 

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৬০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার সংশোধিত এডিপির ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯ কোটি  ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়। ওই ব্যয় ছিল সংশোধিত এডিপির মোট বরাদ্দের ৮৪ দশমিক ১৬ শতাংশ।  

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত অর্থবছরের ১১ মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়ে মোট ১ লাখ ৪৬ হাজার ২২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। যা ছিল সংশোধিত এডিপির মোট বরাদ্দের ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।  

অর্থবছরের শেষের এক মাসেই (জুন) ৫৩ হাজার ৭৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা খরচ হয়।  অর্থাৎ মোট সংশোধিত এডিপির প্রায় ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশই ব্যয় হয় শেষের মাস জুনে।

‘যিনি ট্যাক্স দিচ্ছে, তার ওপর যেন প্রেশার না আসে’ পরবর্তী

‘যিনি ট্যাক্স দিচ্ছে, তার ওপর যেন প্রেশার না আসে’

কমেন্ট