ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ২০ কোটি ডলার অনুমোদন ‍দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ২০ কোটি ডলার অনুমোদন ‍দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক

নগর স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা প্রকল্পের জন্য এই ঋণ অনুমোদন করা হয়। বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ ৩০ বছর।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ,নারীদের প্রসবপূর্ব পরিষেবা, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে বাংলাদেশকে জরুরিভিত্তিতে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

নগর স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা প্রকল্পের জন্য এই ঋণ অনুমোদন করা হয়। বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ ৩০ বছর।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংকের সদর দপ্তরে উন্নয়ন সংস্থাটির বোর্ড সভায় এই ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে ওয়াশিংটন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এমন এক সময় এই ঋণ অনুমোদিত হলো- যখন দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এই প্রকল্পের অর্থ দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি চিকিৎসা–সুবিধা বাড়ানো হবে। ডেঙ্গু ছড়ানো প্রতিরোধ করতে এডিস মশা নির্মূলে থাকবে নানা উদ্যোগ। 

এই অর্থ দিয়ে শুধু ডেঙ্গু প্রতিরোধ নয়, শহরের অন্যান্য নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার কাজেও খরচ করা হবে। যেমন শহরের বস্তি এলাকার নাগরিকদের পুষ্টিমান উন্নয়নেও কর্মসূচি নেওয়া হবে। এ ছাড়া জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও থাকবে নানা কার্যক্রম।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি এবং সাভার ও তারাবো পৌরসভা এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্প প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর একটি বলয় সৃষ্টি করবে। শহর এলাকার নাগরিকদের স্বাস্থ্য সমস্যা যেসব কারণে হয়, সেগুলো কমানোর চেষ্টা করাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ও নির্বাচিত বিদ্যমান জনস্বাস্থ্য সুবিধা সংস্কার করা হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক করা হবে। প্রকল্পটি নারীদের প্রসবপূর্ব পরিষেবা উন্নত করবে। আড়াই লাখেরও বেশি নারী গর্ভাবস্থায় কমপক্ষে চারটি চেকআপ গ্রহণের সুযোগ পাবেন।

এই প্রকল্প পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং প্রতিরোধমূলক পরিষেবার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। মশা নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অসুস্থতা প্রতিরোধ এবং মানব স্বাস্থ্যের ওপর জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ু দূষণের প্রভাব কমাতে কাজ করবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজনস্থল পরিষ্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, “স্বাস্থ্যসেবার উন্নতিতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। কিন্তু শহরাঞ্চলে সীমিত জনস্বাস্থ্য পরিষেবা রয়েছে। তাই দরিদ্র মানুষ এবং বস্তিবাসীরা প্রায়ই ব্যয়বহুল বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিতে বাধ্য হয়।”

“উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্রুত নগরায়নের ফলে ডেঙ্গু, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধিসহ নতুন নতুন নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।”

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম। গত অর্ধশতাব্দীতে বাংলাদেশকে সব মিলিয়ে চার হাজার কোটি (৪০ বিলিয়ন) ডলারের মতো ঋণ-সহায়তা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

এই অর্থ কাজে লেগেছে দারিদ্র্য বিমোচনে। রাস্তাঘাট, ভবনসহ বড় অবকাঠামো নির্মাণেও অর্থ দিয়েছে।

এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বব্যাংক দশকের পর দশক অর্থ দিয়ে আসছে।

যারা বলছেন অর্থনীতি ভালো নেই, তারা অর্থনীতিই বোঝেন না: অর্থমন্ত্রী পরবর্তী

যারা বলছেন অর্থনীতি ভালো নেই, তারা অর্থনীতিই বোঝেন না: অর্থমন্ত্রী

কমেন্ট