শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে রংপুরের সেন্ট্রাল রোডের বাসভবনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

সরকারের বেঁধে দেওয়া পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম শক্তভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ভোক্তা অধিকারের পর্যাপ্ত জনবলের অভাব থাকলেও, তারা শক্ত অবস্থানে আছেন বলে জানান মন্ত্রী। 

শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে রংপুরের সেন্ট্রাল রোডের বাসভবনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।  

এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “পেঁয়াজ, আলু, ডিমের বেঁধে দেওয়া দাম শক্তভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকারের যথেষ্ট পরিমাণ লোকের অভাব আছে। এরপরেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা শক্ত অবস্থানে রয়েছি।” 

বাজার লাগাম টানতে ভোজ্যতেল ও চিনির পাশাপাশি প্রথমবারের মত আরও তিনটি পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার পেঁয়াজ, ডিম ও আলু—এই তিন পণ্যের দাম ঠিক করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।  

সচিবালয়ে  বৃহস্পতিবার নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা শীর্ষক বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি তিন পণ্যের বেঁধে দেওয়া দাম ঘোষণা করেন।  

তিনি বলেন, বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী এখন থেকে প্রতিটি ফার্মের ডিম ১২ টাকা, আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা, হিমাগার পর্যায়ে ২৬-২৭ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজের দাম হবে ৬৪-৬৫ টাকা।  

কিন্তু শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও শেওড়াপাড়া—এই তিন কাঁচাবাজারের কোনোটিতেই সরকার নির্ধারিত দামে পণ্য তিনটি বিক্রি হতে দেখা যায়নি।

শুক্রবার রংপুরের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা সবাই মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আমাদের বিশাল বাজার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গোলের কিছুটা ঘাটতি থাকতে পারে। সেটি কাভার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুবিধা নিচ্ছেন।” 

“মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে সব সময় ব্যবসায়ীদের যে চাপে রাখা যায়, তা কিন্তু নয়। আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণে এক কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার দিচ্ছি।” 

তিনি বলেন, “যখন যে পণ্যের মজুত কমে যায়, তখন সেই পণ্যের দাম নির্ধারণ করে সরকার। সেটা দেশি বা বিদেশি পণ্য হতে পারে। তিন পণ্যের বেঁধে দেয়া দাম কার্যকর হবে। এখন থেকে খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম হবে সর্বোচ্চ ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৬ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা।” 

“কোনো কারণ ছাড়াই বাজারে অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যও রয়েছে। এখন ন্যায্য দাম কার্যকর হবে।” 

এদিকে দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানি প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা তো সারা বছর ইলিশ রপ্তানি করি না। দুর্গাপূজার সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাঙালিদের জন্য শুভেচ্ছা হিসেবে সামান্য কিছু পাঠানো হয়।” 

তিনি বলেন, “সারা বছর আমাদের যে পরিমাণ ইলিশ হয়, তার থেকে মাত্র দুই শতাংশ ভারতে দেয়ার চেষ্টা করি। মাছ রপ্তানির কোনো চিন্তা নেই। এটাকে রপ্তানি বলা যাবে না। শুভেচ্ছা টোকেন হিসেবে দেয়া হয়।” 

“বছরে ছয় লাখ টন ইলিশ ধরা হয়। সেখান থেকে ৪-৫ হাজার টনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। যা আমাদের দুদিনের উৎপাদনও নয়,” বলেন টিপু মুনশি।