শিক্ষার উন্নয়নে ৩০ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক

শিক্ষার উন্নয়নে ৩০ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থাটির সদর দপ্তরে বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড সভায় এই ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে ৩০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক।

বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১১০ টাকা) হিসাবে টকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থাটির সদর দপ্তরে বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড সভায় এই ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংকের সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

 ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (এলএআইএসই) প্রকল্পের আওতায় ২০২৪ সালে এ অর্থ ব্যয় করবে বাংলাদেশ। ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশ কয়েক বছর ধরে শিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে এবং নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লিঙ্গ সমতা অর্জনকারী প্রথম কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ছিল।

“কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন দীর্ঘায়িত স্কুল বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার ওপর গভীরভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দরিদ্র পরিবারের মেয়েশিশুদের বিরাট অংশ স্কুল ছেড়েই দিয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের শিক্ষা খাতের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সববময় পাশে থাকবে। যাতে শিক্ষার্থীরা সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ জীবনযাপন এবং সমাজে সংগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিয়ে স্নাতক হতে পারে।”

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এলএআইএসই প্রকল্প বাংলাদেশ সরকারের সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রোগ্রামকে সমর্থন করবে। শিক্ষাকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে, প্রোগ্রামটি ৬, ৪তম গ্রেডের জন্য গণিত, ইংরেজি এবং বাংলার মতো মূল বিষয়গুলোতে ফোকাস করবে। কারণ এগুলো ভবিষ্যতের শিক্ষার ভিত্তি।”

“এটির লক্ষ্য চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গণিতে দক্ষতা বর্তমান ২৮ শতাংশ থেকে ৬৫ শতাংশ এবং বাংলায় ৬৬ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশে উন্নীত করা।”

“ঝরে পড়ার হার কমাত প্রকল্পটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি পেতে সহায়তা করবে। এছাড়া আরও ৭ হাজার ২০০টি স্কুলে পড়ার দক্ষতা উন্নত করার জন্য কর্মসূচি থাকবে এবং ১৫ হাজার শিক্ষককে তাদের শেখানোর দক্ষতা উন্নত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”

“প্রোগ্রামটি মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিংকেও সহায়তা করবে এবং কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লক্ষ্যযুক্ত বিদ্যালয়ে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করবে।”

বিশ্ব ব্যাংক জানায়, কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন শিক্ষার ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধার করতে প্রোগ্রামটি নতুন অনুমোদিত পাঠ্যক্রমের ডিজিটাইজেশন এবং পর্যায়ক্রমে রোলআউটের পাশাপাশি শেখার পুনরুদ্ধারের জন্য অতিরিক্ত প্রতিকারমূলক ক্লাসগুলোকে সহায়তা করবে।

“এটি সরকারের মিশ্রিত শিক্ষার মাস্টারপ্ল্যানকেও সমর্থন করবে।”

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এডুকেশন স্পেশালিস্ট এবং প্রকল্পের দলনেতা টি এম আসাদুজ্জামান বলেন, জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে শিশুদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রাখার জন্য প্রকল্পটি উপবৃত্তি প্রদানের বাইরেও অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

“যারা বাদ পড়েছেন তাদের পুনরায় তালিকাভুক্ত করতেও সহায়তা করবে। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়, বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্কুলগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হলেও মিশ্রিত শিক্ষা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করবে।”

“এই প্রোগ্রামটি জলবায়ু-স্মার্ট মানসিকতা এবং আচরণকে উৎসাহিত করার জন্য পাঠ্যক্রমের মূলধারার জলবায়ু শিক্ষাকেও যুক্ত করবে।”

স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার  ঋণ-সহায়তা দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটির সঙ্গে এখনও বাংলাদেশের ৫৬টি প্রকল্প চালু রয়েছে, যার অর্থের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

সংকটেও রাজস্ব আদায়ে ভালো প্রবৃদ্ধি পরবর্তী

সংকটেও রাজস্ব আদায়ে ভালো প্রবৃদ্ধি

কমেন্ট