‘মুড়ি থেকে আচার-সবকিছু বড়রা তৈরি করলে ছোটরা কী করবে’

‘মুড়ি থেকে আচার-সবকিছু বড়রা তৈরি করলে ছোটরা কী করবে’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় 'নবম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৩' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দেশের বড় ব্যবসায়ীদের মুড়ি, চানাচুর বা আচারের মতো পণ্য তৈরি করার দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

তিনি বলেছেন, “মুড়ি থেকে আচার—সবকিছু যদি বড় ব্যবসায়ীরা তৈরি করে, তাহলে ছোটরা কী করবে?”

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় 'নবম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৩' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, “কালোবাজারি ও গুদামজাতকারীরা দেশকে অস্থিতিশীল করেছে। আলু-পটল, ডিম এ দেশেই হয়। এগুলো আমদানি করতে হয় না যে দাম বাড়ার কারণ থাকবে। তারপরও দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না অসৎ ব্যবসায়ীদের জন্য।”

“তারা দেশের সুনাম নষ্ট করছে। সরকার এদের কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।”

মন্ত্রী বলেন, “কালোবাজারি-অবৈধ পণ্যের গুদামজাতকারী ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম অস্থিতিশীল করে তুলেছে। যে কারণে বাজারে পণ্যের দাম ‘পাগলা ঘোড়ার’ মতো ছুটছে। এসব ব্যবসায়ী এখন দেশের সুনামও নষ্ট করছে। তারপরও কোনোভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।”

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, “জনগণের যদি অংশগ্রহণ না থাকে, সমাজের সবার যদি সহযোগিতা না থাকে, তবে এ বাজার নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। বাজার পাগলা ঘোড়ার মতো চলছে। এটা থামাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”

“তাদের (কালোবাজারি) কোনো ক্ষমা নেই। তারা মানুষের মধ্যে নেই, ওদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব নেই, মানবতা কাজ করে না।”

প্রকৃত ব্যবসায়ীদের এসব কালোবাজারিদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “যারা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, দুঃসময়ের সুযোগ নিচ্ছে, তারা দেশপ্রেমী নয়। আপনাদের আমি বলবো, ওদের গ্রহণ করবেন না। ওদের প্রতি সচেতন থাকা দরকার। যেন আপনাদের প্রভাবিত না করে।”

মন্ত্রী বলেন, “প্রকৃত ব্যবসায়ীদের যে চরিত্র রয়েছে সেটা অসাধু ব্যবসায়ীদের থেকে আলাদা। অসাধু চোরাকারবারিদের জন্য অনেক সময় প্রকৃত ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হন। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের আমরা শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। তাদের কোনো রকম অসম্মান করার ইচ্ছা সরকারের নেই।”

ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, তৈরি পোশাকের পর রপ্তানির দিক থেকে যদি কোনো খাত ভালো অবস্থানে থাকে, তা হলো খাদ্যপণ্য।

তিন বলেন, “সরকারি অফিসে ব্যবসায়ীদের প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। তাই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে। তারা যদি বিষয়গুলোকে একটু ইতিবাচকভাবে দেখেন, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”

প্রদর্শনীর আয়োজক কমিটির চেয়ারপারসন ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারের পরিচয় করিয়ে দিতে এবং আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ও পণ্যের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে এই প্রদর্শনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) এবং রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড যৌথভাবে তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।

এই প্রদর্শনী ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এখানে ভারত, চীন, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, স্লোভেনিয়াসহ ২০টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্টোনিও আলেসান্দ্রো, বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিস উদ দৌলা, বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

বৈশ্বিক উদ্ভাবনী সূচকে তিন ধাপ পেছাল বাংলাদেশ পরবর্তী

বৈশ্বিক উদ্ভাবনী সূচকে তিন ধাপ পেছাল বাংলাদেশ

কমেন্ট