ফ্রিল্যান্সারদের ১০% কর প্রযোজ্য নয়: এনবিআর
এনবিঅোরের ব্যাখায় বলা হয়, গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। সেখানে আয়কর আইন অনুযায়ী, সেবা চার্জ বা রেভিনিউ শেয়ারিং থেকে পাওয়া রেমিটেন্সের অর্থের ওপর উৎসে কর কর্তনের কথা বলা হয়েছে। ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের কথা বলা হয়নি।
ফ্রিল্যান্সারদের বিদেশি আয় বা রেমিটেন্সের বিপরীতে ১০ শতাংশ উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য নয় বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও কোনো নির্দেশনা দেয়নি বলেও জানানো হয়েছে।
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত কয়েক দিন ধরে এ সংক্রান্ত খবর নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হলে বিষয়টি নিয়ে শনিবার ব্যাখা দিয়েছে এনবিআর।
ব্যাখায় বলা হয়, গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। সেখানে আয়কর আইন অনুযায়ী, সেবা চার্জ বা রেভিনিউ শেয়ারিং থেকে পাওয়া রেমিটেন্সের অর্থের ওপর উৎসে কর কর্তনের কথা বলা হয়েছে। ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের কথা বলা হয়নি।
“এখানে সেবা খাত বলতে বিদেশি পণ্য পরিবহন করে বাংলাদেশের শিপিং লাইন থেকে অর্জিত আয় ও ইনডেন্টিং ব্যবসার আয়কে বোঝানো হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই ফ্রিল্যান্সারদের রেমিটেন্সের ওপর কর আরোপ করা হয়নি।”
দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হকও একই কথা বলেছেন।
এআরএইচ ডটকমকে তিনি বলেন, “ফ্রিল্যান্সারদের বিদেশি আয় বা রেমিটেন্সের বিপরীতে ১০ শতাংশ উৎসে কর কর্তনের যে খবর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত কয়েক দিন ধরে আসছে তা সঠিক নয়।”
তিনি বলেন, “গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে একটি সার্কুলার জারি করা হয়। সেখানে আয়কর আইন অনুযায়ী, সেবা চার্জ বা রেভিনিউ শেয়ারিং থেকে পাওয়া রেমিটেন্সের অর্থের ওপর উৎসে কর কর্তনের কথা বলা হয়েছে। ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের কথা বলা হয়নি।”
“ওই সার্কুলারে সেবা খাত বলতে বিদেশি পণ্য পরিবহন করে বাংলাদেশের শিপিং লাইন কর্তৃক অর্জিত আয় ও ইনডেন্টিং ব্যবসার আয়কে বুঝানো হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই ফ্রিল্যান্সারদের রেমিটেন্সের ওপর কর আরোপ করা হয়নি।”
“বিষয়টি নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে কথা বলেও বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত হয়েছে।”
এনবিআর সূত্র জানায়, নতুন আয়কর আইনেও ফ্রিল্যান্সারদের আয় করমুক্ত রাখা হয়েছে। ফলে ফ্রিল্যান্সারদের টাকা দেশে রেমিটেন্স আকারে এলেও কোনো কর দিতে হবে না।
তবে বিদেশ থেকে আসা কোনো সেবা, রেভিনিউ শেয়ারিং ইত্যাদি বিদেশ হতে আয় হিসেবে আসা রেমিটেন্স থেকে উৎসে কর কর্তন করা হবে।
গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে জারি করা এক সার্কুলারে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ১২৪ ধারা (আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৫২ছ) অনুযায়ী সেবা, রেভিনিউ শেয়ারিংইত্যাদি বাবদ প্রাপ্ত রেমিটেন্সের উপর উৎসে কর আদায় করতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে নিয়জিত অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
জাতীয় রাজস্ব আহরণের স্বার্থে নির্দেশনাটি যথাযথভাবে পরিপালন করতে বলা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সার্কুলারের সঙ্গে গত ১২ সেপ্টেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর কমিশনারের কার্যলয় থেকে থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো এ সংক্রান্ত চিঠিটি সংযুক্ত করে দেওয়া হয়।
তাতে বলা হয়, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ১২৪ ধারা (আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৫২ছ) অনুযায়ী সেবা, রেভিনিউ শেয়ারিং ইত্যাদি বাবদ বিদেশ হতে প্রেরিত অর্থ কোন ব্যক্তির হিসেবে পরিশোধ বা জমা প্রদানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি প্রাপকের হিসেবে অর্থ পরিশোধ বা জমা প্রদানকালে উক্ত পরেোধিত বা জমাকৃত অর্থের উপর ১০ শতাংশ হারে উৎস কর কর্তনের বিধান করা হয়েছে।
“বিদেশ হতে প্রেরিত অর্থ হতে কর কর্তনের এই বিধান এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উৎসে কর কর্তন অধিক্ষেত্র আদেশ অনুযায়ী সমগ্র বাংলাদেশের কর্তিত কর, কর অঞ্চল-১১, ঢাকা এর অধিক্ষেত্রাধীন।”
এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃক ১২৪ ধারার সকল উৎসে কর, কর অঞ্চল-১১, এর নির্ধারিত কোড অনুকুলে জমাদানের জন্য এনবিআরের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।
কমেন্ট