বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি বেড়েছে, কমেছে ছাড়
চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে ১১৪ কোটি ৪৩ লাখ ৬০ হাজার (১.১৪ বিলিয়ন) ডলার ঋণ-সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই প্রতিশ্রুতির অঙ্ক ছিল ৩০ কোটি ৪৯ লাখ ২০ হাজার ডলার।
দুই বছরের করোনা মহামারির ধকল কাটতে না কাটতেই দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপের মধ্যে পড়েছে।
বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে আলোচিত, গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ কমেছেই। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
এই চাপ সামাল দিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এখন বিদেশি ঋণ-সহায়তা। কিন্তু কম সুদের এই ঋণ কমছে। তবে, আশার কথা হচ্ছে-আগামীতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতিও বাড়িয়েছে দাতারা।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) বৃহস্পতিবার বিদেশি ঋণের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকুলে ৭৩ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করেছে।
এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম।
২০২২-২৩ অর্থবছরের এই দুই মাসে ৮৬ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ডলার ছাড় করেছিল দাতারা।
তবে প্রতিশ্রুতি অনেক বেড়েছে, ২৭৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে ১১৪ কোটি ৪৩ লাখ ৬০ হাজার (১.১৪ বিলিয়ন) ডলার ঋণ-সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা।
গত অর্থবছরের একই সময়ে এই প্রতিশ্রুতির অঙ্ক ছিল ৩০ কোটি ৪৯ লাখ ২০ হাজার ডলার।
রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের পর রিজার্ভের অন্যতম উৎস হচ্ছে বিদেশি ঋণ-সহায়তা। বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি বাড়া মানে আগামী দিনগুলোতে রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে।
বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলার। আর গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৬ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।
সবশেষ গত জুলাই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে বর্তমানের ২১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের কিছু বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।
ইআরডির তথ্যে দেখা যায়, জুলাই-আগস্ট সময়ে দাতাদের কাছ থেকে যে ৭৩ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার ডলারের ঋণ-সহায়তা পাওয়া গেছে, তার মধ্যে প্রকল্প সাহায্য এসেছে ৭২ কোটি ৭২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর অনুদান পাওয়া গেছে ২ কোটি ১৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
গত বছরের একই সময় প্রকল্প সাহায্য পাওয়া গিয়েছিল ৮৩ কোটি ২৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অনুদান এসেছিল ৩ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার ডলার।
কমেন্ট