টিকা তৈরির কারখানা স্থাপনের ৩৪ কোটি ডলার দেবে এডিবি
বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। ছবি: সংগৃহীত
কোভিড, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগের টিকা উৎপাদনের কারখানা স্থাপনের জন্য বাংলাদেশকে ৩৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার ডলার ঋণ দেবে ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক—এডিবি।
বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা।
এই ঋণের অর্ধেক কম সুদের নমনীয় ঋণ; আর বাকি অর্ধেক ঋণে বাজারদরের কাছাকাছি হারে সুদ আরোপিত হবে
বুধবার পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বৈঠকের পর এডিবির ঢাকা অফিসের প্রধান এডিমন গিন্টিং সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে পরিকল্পনামন্ত্রীর অফিসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এডিমন গিন্টিং বলেন, “মূলত টিকা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনার বৈশ্বিক জোট গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভ (গ্যাভি) থেকে টিকা পাচ্ছে। তবে ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর এই সুযোগ থাকবে না।”
“তবে বাংলাদেশের টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। সে কারণেই এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে এডিবি। সেই সঙ্গে এডিবির সহায়তা পেলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে টিকা রপ্তানি করতে পারবে।”
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “এই ঋণের চুক্তি সইয়ের বিষয়ে কাজ চলছে। তবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই চুক্তি সই করা না গেলে নমনীয় সুদে যে অর্ধেক ঋণ পাওয়ার সুযোগ আছে, তা আর থাকবে না। বিষয়টি তামাদি হয়ে যাবে।”
“বিষয়টি মাথায় রেখে কাজটি দ্রুত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টির সঙ্গে শুধু পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় নয়, সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও জড়িত।”
সামনে জাতীয় নির্বাচন এবং এর আগে একনেকের বৈঠক না হলে কীভাবে এই প্রকল্প অনুমোদিত হবে—এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “আপনাদের মনে থাকার কথা, মহামারির শুরুতে নিয়মিত প্রক্রিয়া ছাড়াই আমি দুটি প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছিলাম। অতি গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে ওগুলো সেভাবে অনুমোদন করা হয়েছিল।”
“এটাও যেহেতু টিকার বিষয়, সেহেতু বিশেষভাবে অনুমোদন করানো যেতে পারে।”
বিভিন্ন টিকার তত্ত্বীয় দিকনির্দেশনা দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অর্থ দেবে এডিবি আর তৈরি করবে বাংলাদেশ—এই ত্রিমুখী সহযোগিতার ভিত্তিতে স্থানীয়ভাবে টিকা তৈরি হবে বলে জানান মন্ত্রী এম এ মান্নান।
এডিমন গিন্টিং জানান, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিবি বাংলাদেশের জন্য প্রায় ৩৫০ কোটি (৩.৫০ বিলিয়ন) ডলার ঋণ ছাড় করেছে। এর মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলার স্বল্প সুদে এবং দেড় বিলিয়ন ডলার বাজার দরের কিছু কম সুদের ঋণ।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর এবং পরবর্তী বছরগুলোতেও এডিবি বাংলাদেশকে বছরে ৩ বিলিয়ন ডলার করে ঋণ-সহায়তা দেবে বলে জানান তিনি।
কমেন্ট