আমার এলাকার মানুষ কষ্টে নেই, নারীরা দিনে তিনবার লিপস্টিক লাগাচ্ছেন: টিপু মুনশি

আমার এলাকার মানুষ কষ্টে নেই, নারীরা দিনে তিনবার লিপস্টিক লাগাচ্ছেন: টিপু মুনশি

বুধবার সচিবালয়ে জাতীয় ট্যারিফ পলিসির তদারক ও পর্যালোচনা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি এ কথা বলেন।

দেশে নিত্যপণ্যের দাম অনেকটা বাড়লেও নিজের এলাকার (রংপুর) মানুষ কষ্টে নেই বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তার এলাকার ‘নারীরা দিনে তিনবার লিপস্টিক লাগাচ্ছেন, চারবার স্যান্ডেল বদলাচ্ছেন’ বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বুধবার সচিবালয়ে জাতীয় ট্যারিফ পলিসির তদারক ও পর্যালোচনা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমি খুব ভালো করেই জানি, আমার এলাকার মানুষের সমস্যা নেই।”

কেন তার এলাকার মানুষেরা কষ্টে নেই বা ভালো আছেন, তার কারণ হিসেবে টিপু মুনশি বলেন, “আমাদের তো কৃষিভিত্তিক এলাকা, কৃষকেরা আলুর দাম পাচ্ছেন। তবে একেক এলাকা একেক রকম। শহরে যারা দিনমজুর, নিম্নশ্রেণির মানুষ, তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। সে জন্য ঢাকা শহরে যারা নির্বাচন করবেন, তাদের সমস্যা অনেক।”

সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আগামী সংসদ নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে কি না, এ বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “সাংবাদিকেরা ইতিবাচক হলে এই প্রভাব কাটানো সম্ভব। বৈশ্বিক পরিস্থিতিসহ সার্বিক কারণে এটা হয়েছে। কাজেই নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে কি না, তা নির্ভর করবে সাংবাদিকেরা কতটুকু ইতিবাচক হবেন, তার ওপর।”

পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত করা হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকদের একাংশ তা মেনে নেয়নি। কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে শুক্রবার আবার সমাবেশের ডাক দিয়েছেন।

এ নিয়ে জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, “শতভাগ শান্তি নিশ্চিত করা যায় না। কেউ খুশি হবেন, কেউ অখুশি হবেন। যারা খুশি নন, তারা যদি ২০ হাজার টাকা বেতন পেতেন, তাহলে হয়তো খুশি হতেন। আমাদের একটি জায়গায় আসতে হবে, যেখানে দুই পক্ষই রক্ষা হয়। সবাইকে ১০০ ভাগ সন্তুষ্ট করা যায় না।”

সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ার পর সরকার আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, “আলু আমদানি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগে। আমরা যে দুই মাস আগে আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছি, তখন তাদের অনুমতি নিয়েছি। তারাও এটা চিন্তা করে।

“একইভাবে ডিমের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হয়। যদি পেছনের সমর্থন না পাই, তাহলে আমরা অনেক সময় করতে পারি না। সংকট যখন প্রকট হয়ে যায়, তখন তারা মেনে নেয়, কিন্তু তখন আবার অনেক দেরি হয়ে যায়।”

মানুষের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর কোনো সুখবর আছে কি না—জানতে চাইলে টিপু মুনশি পেঁয়াজ, আলু, ডিমের কথা উল্লেখ করেন।

বলেন, “একটা হলো দেশীয় উৎপাদন, আরেকটা হলো আমদানি। বিভিন্ন জিনিসের বিভিন্ন রকম অবস্থা। যেমন পেঁয়াজের দাম কবে কমবে, তা সবাই জানেন—যখন নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠবে, কৃষক যখন ফসল ঘরে তুলবেন। হয়তো আগামী মাসে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠবে, তখন হয়তো পেঁয়াজের দাম কমবে। আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় ২০ শতাংশ ঘাটতি আছে পেঁয়াজে। আমদানির বড় অংশ ভারত থেকে আসে। সেখানেও দাম বেড়ে গেছে। পেঁয়াজের জন্য ভবিষ্যতে আমাদের নিজেদের উৎপাদনের ওপর নির্ভর করতে হবে।”

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “ডিসেম্বরের শেষ দিকে বাজারে যখন আলু উঠতে শুরু করবে, তখন সেটির দামও কমবে। এখন এটা গেল নিজেদের উৎপাদনের বিষয়। আবার যখন আমরা তেল ও চিনির কথা বলি, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ওপর নির্ভর করতে হয়।”

আর বিভিন্ন আইনি জটিলতায় ডিম আমদানিতে কিছুটা সময় লেগেছে। প্রথম একটা চালান ঢুকে গেছে। ডিম এখন ১১ কিংবা সাড়ে ১১ টাকায় পাওয়া যায়। আশা করি আরও ডিম এলে আরও কম দামে পাওয়া যাবে।”

সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি প্রত্যাখ্যান শ্রমিকদের, শুক্রবার প্রতিবাদ সমাবেশ পরবর্তী

সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি প্রত্যাখ্যান শ্রমিকদের, শুক্রবার প্রতিবাদ সমাবেশ

কমেন্ট