সুখবর, ডলারের দাম কমল
বিক্রি-কেনা উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের দর ৫০ পয়সা করে কমছে। একইসঙ্গে আন্তঃব্যাংক, রেমিটেন্স সংগ্রহ ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রেও ডলারের দর ৫০ পয়সা করে কমছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সুখবর। প্রায় দুই বছর ধরে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুঁটে চলা ডলারের দাম কমছে।
বিক্রি-কেনা উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের দর ৫০ পয়সা করে কমছে। একইসঙ্গে আন্তঃব্যাংক, রেমিটেন্স সংগ্রহ ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রেও ডলারের দর ৫০ পয়সা করে কমছে।
বুধবার সন্ধ্যায় বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বাফেদার চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হবে জানিয়ে এআরএইচ ডট নিউজকে তিনি বলেন, “রেমিটেন্স বাড়ছে। বাণিজ্য ঘাটতি বেশ কমেছে। বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট বিওপি) ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। তাই আমরা ৫০ পয়সা করে কমিয়েছি।”
“এই ধারা অব্যাহত থাকলে পর্যায়ক্রমে আরও কমানো হবে। আশা করছি ডলারের বাজার আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”
আফজাল করিম বলেন, বুধবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা-ডলারের বিনিময় হার ছিল ১১১ টাকা। বৃহস্পতিবার থেকে তা হবে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে ডলারের দর ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার থেকে এই দুই ক্ষেত্রেই ডলারের দর হবে ১১০ টাকা।
তবে রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে আড়াই শতাংশ সরকারি প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারবে।
মূলত ডলার সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক আগের দেনা পরিশোধ করতে পারছে না। এর আগে গত ২১ অক্টোবর এবিবি ও বাফেদার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় প্রতি ডলার কিনতে নির্ধারিত ১১০ টাকার সঙ্গে সরকারের বিদ্যমান আড়াই শতাংশ প্রণোদনার সঙ্গে ব্যাংকগুলো বাড়তি আরও আড়াই শতাংশ বেশি দিতে পারবে।
দুই বছরের করোনা মহামারীর পর বাড়তি চাহিদা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং হুন্ডি বেড়ে যাওয়ায় ডলারের ব্যাপক সংকটের সৃষ্টি হয়। ডলারের দর হুহু করে বেড়ে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ১১৪ টাকায় উঠে যায়।
এর পর বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দর ঠিক করে আসছে বাফেদা ও এবিবি। শুরুতে রেমিটেন্সে ১০৮ টাকা এবং রপ্তানিতে ৯৯ টাকা করা হয়। পর্যায়ক্রমে উভয় ক্ষেত্রে ডলার কেনার দর বাড়িয়ে বাড়িয়ে গত ১ নভেম্বর অভিন্ন (একই) করা হয়।
এদিকে খোলাবাজার বা কার্বমার্কেটেও ডলারের দর কমেছে। বুধবার খোলাবাজারে ব্যবসায়ীরা ১২২ টাকা ৮০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছেন। আর কিনেছেন ১২২ টাকা ৫০ পয়সায়। কিছুদিন আগে এই বাজারে ডলারের দর ১২৮ টাকায় উঠেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদশের মুদ্রা টাকার মান গত বছরের এপ্রিল পর্যন্ত স্থিতিশীল ছিল। জুলাইয়ের পর এর দাম বাড়তে থাকে। এর আগে ২০২০ সালে ডলারের বিপরীতে টাকা বরং শক্তিশালী হয়েছিল।
২০২১ সালের জুলাইয়ে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা-ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পযসা। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে তা ১১১ টাকায় উঠেছিল। আলোচ্য সময়ে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৩০ দশমিক ৩১ শতাংশ।
কমেন্ট