ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নামবে: অর্থ সচিব

ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নামবে: অর্থ সচিব

নভেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসভিত্তিক বা মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।

চলতি ডিসেম্বর মাসেই মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন অর্থ সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার।

তিনি বলেছেন, “"আমাদের অর্থনীতির সামনে এখন একমাত্র চ্যালেঞ্জ মূলস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। অর্থনীতির স্পর্শকাতর এই সূচকের লাগাম টেনে ধরতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তার সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিম্মমূখী হয়েছে।”

তিনি বলেন, “সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির মাধ্যমে চড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশ খানিকটা কমেছে। শীতের শাকসবজি উঠতে শুরু করেছে; দামও কমছে। আমন ধান উঠতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতি আরও কমে আসবে।”

“চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই সূচক ৯ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।”

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসভিত্তিক বা মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।

আগের মাস অক্টোবরে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ; খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ; খাদ্যবহির্ভূত ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।

সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আগস্টে হয়েছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

অর্থ সচিব খায়রুজ্জামান বলেন, “চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই সূচক ৬ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।”

কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দ্রুত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আগেই কিছু সংকোচনমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে কঠোরতা অনুসরণ করা হচ্ছে। যখন বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক শক্তি সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে।"

চলতি অর্থবছরে ঘাটতি বাজেটের প্রাক্কলন ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে ২ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা উল্লেখ করে মজুমদার বলেন, “বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকারকে বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিতে হবে।”

“দেশীয় ব্যবসা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার দেশীয় উৎসের ওপর নির্ভর না করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে।”

"তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরিত হচ্ছি। এখন আমাদের আন্তর্জাতিক ঋণ এবং অনুদান নেওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকবে। তাই রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআরকে আরও মনোযোগী হতে হবে।”

দেশে কর সংস্কৃতি তৈরির জন্য অটোমেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে অর্থ সচিব বলেন, “সরকার অটোমেশনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এনবিআরকে আরও আর্থিক সহায়তা দেবে।”

অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানাসহ এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমেছে পরবর্তী

নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমেছে

কমেন্ট