বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল এডিবি

বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল এডিবি

গত সেপ্টেম্বরে ম্যানিলাভিত্তিক এই উন্নয়ন সংস্থাটি বলেছিল, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মঙ্গলবার প্রকাশিত নতুন ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে এই পূর্বাভাস দশমিক ৩ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে ৬ দশমিক ২ শতংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির (জিডিপি প্রবৃদ্ধি) পূর্বাভাস কমিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি।

গত সেপ্টেম্বরে ম্যানিলাভিত্তিক এই উন্নয়ন সংস্থাটি বলেছিল, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মঙ্গলবার প্রকাশিত নতুন ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে এই পূর্বাভাস দশমিক ৩ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে ৬ দশমিক ২ শতংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা এবং রপ্তানি কমে যাওয়া, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ–সংকট এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির গতি কমিয়ে দেওয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছে এডিবি।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের ডিসেম্বর সংস্করণ প্রতিবেদনে এডিবি বলেছে, আগামী ৩০ জুন মাসে শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ঠিক কতটা কমানো হয়েছে, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

তবে এডিবি ঢাকা অফিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, বাংলাদেশের জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ২০ শতাংশ দেওয়া হয়েছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রতিবেদনে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল এডিবি।

এডিবি প্রতি বছর এপ্রিলে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) প্রকাশ করে থাকে। পরে বিশ্ব অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে তিনটি আপডেট রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। একটি করা হয় জুলাইয়ে। পরেরটা প্রকাশ করা হয় সেপ্টেম্বরে। আর সর্বশেষটা প্রকাশ করা হয় ডিসেম্বরে।

ডিসেম্বরের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে মঙ্গলবার। পরের তিনটি প্রতিবেদনকে সম্পূরক প্রতিবেদন বলা হয়ে থাকে।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছে সরকার।

যে কারণে পূর্বাভাস কমানো হয়েছে

যেসব কারণে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে না বলে এডিবি মনে করছে, তার একটি হলো বাংলাদেশের পণ্যের গন্তব্য দেশগুলোতে অর্থনীতির গতি কমে যাওয়া। সংস্থাটির মতে, প্রধানত যেসব দেশে বাংলাদেশ রপ্তানিপণ্য পাঠায়, সেসব দেশে অর্থনীতি ধীর হয়ে পড়েছে। সে কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি ও উৎপাদন খাতে মাঝারি ধরনের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।

বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে অন্য যে দেশটিতে প্রবৃদ্ধি কমবে বলে এডিবি মনে করে, সেই দেশ হলো মালদ্বীপ।

চলতি অর্থবছরের বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করে এডিবি। অবশ্য কত বাড়বে, তা বলেনি সংস্থাটি। এডিবির হিসাব অনুযায়ী, এ বছর মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, এমন তালিকায় চারটি দেশ আছে। অন্য দেশগুলো হলো কাজাখস্তান, মিয়ানমার ও কোরিয়া।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও নেপালে এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমানিউল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির হার প্রায় দুই অঙ্কের ঘরের কাছাকাছি ছিল। আসন্ন মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি সহনীয় হতে পারে, যদি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকে।

এ ছাড়া বাজারভিত্তিক মুদ্রানীতি প্রচলনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারের পণ্যের দাম কম থাকলেও মূল্যস্ফীতি কমতে পারে। এ ছাড়া ভালো ফলনও মূল্যস্ফীতি কমাতে পারে।

এডিবি বলেছে, ২০২৩ সালে এশিয়ার গড় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। ২০২৪ সালে তা কিছুটা কমে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে।

অন্যদিকে এশিয়ার গড় মূল্যস্ফীতিও ২০২৩ সালে কিছুটা কমে সাড়ে ৩ শতাংশ হতে পারে। তবে ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে।

বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে ২০২৪ সালে ভারতে ৬ শতাংশ এবং চীনে ৪ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি।

১২ বছরে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ: বিশ্বব্যাংক পরবর্তী

১২ বছরে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে সাড়ে তিন গুণ: বিশ্বব্যাংক

কমেন্ট