বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের অনুপ্রেরণা: বিশ্বব্যাংক এমডি
প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের রেকর্ড অত্যন্ত সফল বলেও মন্তব্য করেন বিশ্বব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনা বেয়ার্দ।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সফররত বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনা বেয়ার্দ।
প্রথম ঢাকা সফরে এসে তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের সাথে আমাদের (বিশ্বব্যাংক) দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের জন্য আমি খুবই গর্বিত। এই অংশীদারিত্ব লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে সাহায্য করেছে।”
“বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প আজ অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর্থিক ও রাজস্ব নীতিতে দ্রুত এবং সাহসী সংস্কার বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে, আর্থিক খাতের ঝুঁকি কমাতে এবং বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম করবে।”
প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের রেকর্ড অত্যন্ত সফল বলেও মন্তব্য করেন বিশ্বব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
একদিনের সফরে শনিবার রাতে ঢাকায় আসেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশন) আনা বেয়ার্দ। রবিবার রাতেই তিনি ঢাকা ছেড়েছেন; সারা দিন তিনি ব্যস্ত সময় কাটান।
এই সফরে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বেসরকারি খাতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া বিশ্বব্যাংক এমডি আনা বেয়ার্দ নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার।
রবিবার রাতে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ সফর করেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য জোরালো সমর্থন পুনর্নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনা বেয়ার্দ রবিবার বাংলাদেশে তার প্রথম সফর শেষ করেছেন। ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে সহায়তা অব্যাহত রাখতে বিশ্বব্যাংকের দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে আর্থিক খাতের সংস্কার জরুরিভাবে প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
আনা বেয়ার্দ বলেছেন, “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর্থিক ও রাজস্ব নীতিতে দ্রুত এবং সাহসী সংস্কার বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে, আর্থিক খাতের ঝুঁকি কমাতে এবং বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম করবে।"
বিশ্বব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনা বেয়ার্দ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেন এবং দেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, “আজ প্রায় সমস্ত শিশু-ছেলে এবং মেয়েরা-স্কুলে যায় এবং প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই বিদ্যুৎ রয়েছে।”
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং তাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এবং সেইসাথে স্বাগতিক সম্প্রদায়ের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দেন বিশ্বব্যাংক এমডি।
বিশ্বব্যাংক এবং সরকার চট্টগ্রাম বিভাগের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনসংখ্যা এবং স্বাগতিক সম্প্রদায় উভয়ের প্রয়োজন মেটাতে দুটি নতুন প্রকল্পের জন্য ৬৫ কোটি ডলারের বেশি অর্থায়ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছে। “এই অর্থায়নের প্রায় অর্ধেক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যবহার করা হবে এবং পুরোটাই অনুদান,” বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
আনা বেয়ার্দ বলেন, “বাংলাদেশের সাথে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের জন্য আমি খুবই গর্বিত; যেটি লক্ষ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে সাহায্য করেছে। আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, একটি শক্তিশালী বেসরকারি খাতের বিকাশ, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা এবং ভবিষ্যতের সংকট মোকাবেলায় স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করতে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখ “
“একইসঙ্গে কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য সহায়তা করব।”
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী। স্বাধীনতার পর বিশ্বব্যাংক এ দেশের প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে ছিল। এরপর বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল এই সংস্থাটি বাংলাদেশকে ৪১ বিলিয়ন (৪ হাজার ১০০ কোটি) ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়, যার অধিকাংশই অনুদান।
বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) সহায়তায় বৃহৎ কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
কমেন্ট