এডিপির আকার কমল ১৮ হাজার কোটি টাকা

এডিপির আকার কমল ১৮ হাজার কোটি টাকা

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এই সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বাস্তবায়নের ধীরগতির কারণে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) কাটছাঁট করা হয়েছে। মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। কমিয়ে তা ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এই সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এডিপির আকার ১৮ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে। মূল এডিপি ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। কমিয়ে তা ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

বিদেশি সহায়তা থেকে এডিপি কমেছে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি সহায়তার পরিমাণ ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, আর দেশজ উৎসের অর্থ কমছে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে দেশজ উৎসের অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

গতবার অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপিতে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছিল।

গত ১০ বছরের সংশোধিত এডিপি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের এডিপির আকার ছিল ৮৬ হাজার কোটি টাকার; পরবর্তী সময়ে তা কমিয়ে ৭৭ হাজার ৮৩১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

এরপরের ১০ বছরে প্রতিবছরই ৪ হাজার কোটি টাকা থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত এডিপির আকার কমানো হয়েছে। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ২০২০-২১ অর্থবছর ছাড়া প্রতিবছর ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি কাটছাঁট করা হয়েছে উন্নয়ন কর্মসূচিতে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার ও পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার বক্তব্য রাখেন।

মাসে এডিপির ২৭% খরচ, ১৪ বছরে সর্বনিম্ন

জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার একটার পর একটা উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করলেও চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে মন্থরগতি দেখা দিয়েছে। আর সে কারণেই মূল্য এডিপি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপি বাস্তবায়নের সবশেষ যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে অর্থাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে এডিপি বরাদ্দ থেকে ৭৪ হাজার ৪৬৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। যা মোট এডিপির ২৭ দশমিক ১১ শতাংশ।

গত ২০২২–২৩ অর্থবছরের এই সাত মাসে খরচ হয়েছিল ৭২ হাজার ৯০ কোটি ২১ লাখ টাকা।

প্রতি বছরই সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি তথা এডিপিতে বরাদ্দ বাড়ে। সেই অনুযায়ী খরচও বাড়ে।

সেই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বরাদ্দসহ সব মিলিয়ে এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি ২ লাখ টাকা। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। 

আইএমইডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, শতকরা হিসাবে এবার এডিপি বাস্তবায়নের হার গত ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। ২০১০-১১ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে মোট এডিপির মাত্র ৩৩ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল।

আগের ১৪ অর্থবছরের কোনোবারই অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এডিপি ২৭ দশমিক ১১ শতাংশের কম বাস্তবায়ন হয়নি।

২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ২৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ৩০ দশমিক ২১ শতাংশ।

২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই হার ছিল ৩২ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ৭৪ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা খরচের মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ব্যয় হয়েছে ৪২ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। বিদেশি ঋণের (প্রকল্প সাহায্য) ২৮ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিলের ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের এডিপিতে প্রকল্প সংখ্যা হলো ১ হাজার ৩৯২টি।

সবশেষ জানুয়ারি মাসে মোট এডিপির ১২ হাজার ৭২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। শতাংশ হিসাবে যা ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

গত বছরের জানুয়ারিতে ব্যয় হয়েছিল ১১ হাজার ৮৪১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। শতাংশ হিসাবে ছিল ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

এই সাত মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার কম হওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মূলত জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, নির্বাচনের কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি হয়েছে।

ফল ও সবজি সংরক্ষণের অভাবে বছরে ক্ষতি ২৬ হাজার কোটি টাকা পরবর্তী

ফল ও সবজি সংরক্ষণের অভাবে বছরে ক্ষতি ২৬ হাজার কোটি টাকা

কমেন্ট