সর্বজনীন পেনশন স্কিমে গ্রাহক ৩ লাখ ছাড়াল

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে গ্রাহক ৩ লাখ ছাড়াল

প্রায় দশ মাস আগে বহুল আলোচিত ও প্রতিক্ষিত এই কর্মসূচি চালুর প্রথম কয়েক দিন বেশ ভালো সাড়া পাওয়া গেলেও পরে তাতে ভাটা পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য এই স্কিমের প্রতি মানুষের আগ্রহ আবার বেড়েছে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের গ্রাহক সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে। এসব গ্রাহকের কাছ থেকে চাঁদা বা কিস্তি জমা পড়েছে ৮৬ কোটি টাকার কিছু বেশি। এই অর্থের মধ্য থেকে ৬২ কোটি টাকা সরকারি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে।

সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রায় দশ মাস আগে বহুল আলোচিত ও প্রতিক্ষিত এই কর্মসূচি চালুর প্রথম কয়েক দিন বেশ ভালো সাড়া পাওয়া গেলেও পরে তাতে ভাটা পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য এই স্কিমের প্রতি মানুষের আগ্রহ আবার বেড়েছে।

`সুখে ভরবে আগামী দিন, পেনশন এখন সর্বজনীন’ এ স্লোগানকে ধারণ করে প্রৌঢ় জীবনকে সুখে ভরাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দিন থেকেই তা সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। প্রথম দিন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে ৮ হাজার মানুষ অনলাইনে নিবন্ধন করলেও পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে চাঁদা দিয়েছিলেন ১ হাজার ৭০০ জন।

চার শ্রেণির জনগোষ্ঠীর জন্য চার ধরনের পেনশন স্কিম রয়েছে। এগুলোর নাম হচ্ছে প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাস। বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাস’এবং দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’।

দেশের ১০ কোটি মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালুর দশ মাস হতে চলেছে। চার স্কিমে প্রথম মাসে প্রায় ১৩ হাজার জন অন্তর্ভুক্ত হলেও দ্বিতীয় মাসে এ কর্মসূচিতে যোগ দেন মাত্র ১ হাজার ৬৬৯ জন। তৃতীয় মাসে তা আরও ভাটা পড়ে; ১ হাজার ১৩৪ জন অন্তর্ভুক্ত হন।

এর পর প্রতি মাসেই কমছে। সাত মাসে এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হন ২৭ হাজারের কিছু বেশি মানুষ। এই সংখ্যা বাড়াতে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আর তাতে পরের দেড় মাস অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ৭৩ হাজারের বেশি মানুষ পেনশন স্ক্রিমে যুক্ত হন।

সব মিলিয়ে সাড়ে আট মাসে চার ধরনের পেনশন কর্মসূচিতে গ্রাহক বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১ হাজার ২২৬ জন। কিস্তি বা চাঁদা হিসেবে গ্রাহকের কাছ থেকে ৫২ কোটি ৬৬ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা জমা পড়ে। এর মধ্যে ৪২ কোটি টাকা সরকারি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়।

সবশেষ গত দেড় মাসে অর্থাৎ ২৯ এপ্রিল থেকে ৯ জুন পর্যন্ত পেনশন স্কিমে গ্রাহক সংখ্যা দুই লাখের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ তিন হাজার ১৭৬। এর মধ্যে সমতা স্কিমে ২ লাখ ২৪ হাজার ১৬৪, প্রগতি স্কিমে ২১ হাজার ২৯৪, সুরক্ষা স্কিমে ৫৬ হাজার ৯১৯ এবং প্রবাস স্কিমে ৭৯৯ জন নিবন্ধিত হয়েছেন।

ইতোমধ্যে ৮৭টি এনজিও প্রগতি স্কিমে নিবন্ধিত হয়ে তাদের কর্মচারীদের অনুকূলে চাঁদা প্রদান শুরু করেছে বলে অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপিতে জানানো হয়েছে।

পঞ্চম স্কিম হিসেবে ‘প্রত্যয়’ নামে নতুন স্কিম আগামী ১ জুলাই থেকে চালু হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে সকল স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

নতুন সরকারি চাকরিজীবীরাও বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

তবে এখন যারা সরকারি চাকরিতে আছেন, তারা বিদ্যমান নিয়মেই পেনশন পাবেন। ২০২৫ সালের ১ জুলাইয়ের পর সরকারি চাকরিতে যারা নতুন নিয়োগ পাবেন, তারা সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আওতাভুক্ত হবেন।

গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন, তাতে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, “পেনশন সুবিধা পান, এমন সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের আমরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসব। স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ইতিমধ্যে এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হয়েছে।

“শিগগিরই অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্যও আমরা এ ব্যবস্থা ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে চালু করব।”

নিত্যপণ্য এখন বিলাসি পণ্য: সিপিডি পরবর্তী

নিত্যপণ্য এখন বিলাসি পণ্য: সিপিডি

কমেন্ট