খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ ছাড়াল

খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ ছাড়াল

জুলাই মাসে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো—গত বছরের জুলাই মাসে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, এই বছরের জুলাইয়ে সেই পণ্য বা সেবা পেতে ১১১ টাকা ৬৬ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।

দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগজনক সূচক মূল্যস্ফীতির পারদ বেশ খানিকটা চড়েছে। সার্বিক মূল্যস্ফীতি এক লাফে ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছাড়িয়েছে ১৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সোমবার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি বা মাসভিত্তিক) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ।

আগের মাস জুনে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ।

জুলাই মাসে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো—গত বছরের জুলাই মাসে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, এই বছরের জুলাইয়ে সেই পণ্য বা সেবা পেতে ১১১ টাকা ৬৬ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।

৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ গড় মূল্যস্ফীতি (১২ মাসের গড় হিসাব) নিয়ে শেষ হয় ২০২৩-২৪ অর্থবছর। আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) এই হার ছিল ৯ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।

গত অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল।

৪ মাস ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে

বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চার মাস ধরে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে (ডাবল ডিজিট) অবস্থান করছে।

গত মার্চ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এপ্রিলে তা বেড়ে ১০ দশমিক ২২ শতাংশে ওঠে। মে মাসে তা আরও বেড়ে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশে দাঁড়ায়। জুন মাসে তা কিছুটা কমে ১০ দশমিক ৪২ শতাংশে নেমে আসে।

সবশেষ জুলাই মাসে তা এক লাফে ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে উঠেছে।

শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি

পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে দেখা যায়, মূল্যস্ফীতির কারণে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষকে ভুগতে হচ্ছে বেশি। জুলাই মাসে শহর এলাকায় যেখানে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক ২৭ শতাংশ, গ্রামে এই হার ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

জুনে শহর এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ, গ্রামে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।

গ্রামাঞ্চলে জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৪ দশমিক ০৬ শতাংশ, আর খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ। অন্যদিকে শহর এলাকায় খাদ্য খাতে ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত খাতে ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ সার্বিক যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে তা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে এর চেয়ে বেশি ১০ দশমিক ৯৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। তারপর আর কখনও এই হার ১০ শতাংশ ছাড়ায়নি।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর মূল্য ও মজুরি উইংয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বিবিএস মূলত সারাদেশের নির্ধারিত বাজারগুলো থেকে নির্ধারিত পণ্য ও সেবার মূল্য সংগ্রহ করে। কী কারণে বেড়েছে বা কমেছে সে ব্যখ্যা বিবিএস দেয় না।

 এআরএইচ ডট নিউজকে তিনি বলেন, “তবে গত মাসে ছাত্র বিক্ষোভের কারণে দেশের সকল ধরনের পরিবহণ ও পণ্যের জোগান চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। মূলত যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেশে বিশেষ করে খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে। এর ফলে মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে।”

‘অর্থনীতিকে দ্রুত গতিশীল করাই প্রধান লক্ষ্য’ পরবর্তী

‘অর্থনীতিকে দ্রুত গতিশীল করাই প্রধান লক্ষ্য’

কমেন্ট